হাওর বার্তা ডেস্কঃ গ্রীষ্মের তীব্রতা দূরে সরিয়ে প্রকৃতিতে এসেছে বর্ষা। রিমঝিম বৃষ্টি দেখে প্রাণে দোলা লাগে না, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। কিন্তু এই বর্ষায় বিভিন্নরকম সংক্রমণের ভয় থাকে। এবার তার সঙ্গে যোগ হয়েছে করোনাভাইরাসের ভয়। ঋতু পরিবর্তনের সময়টা বিভিন্নরকম ফ্লু ও অন্যান্য মৌসুমী অসুস্থতার ঝুঁকি নিয়ে আসে। সুতরাং এই সময়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো আরও বেশি জরুরি হয়ে ওঠে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে রান্নাঘরে থাকা নানা পরিচিত মশলার ব্যবহারের কথা প্রকাশ করেছে টাইমস অব ইন্ডিয়া। এই সাধারণ ঘরোয়া প্রতিকারগুলো আপনাকে জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াই করতে এবং শরীরের প্রতিরক্ষা বজায় রাখতে সহায়তা করবে।আদা: আদা গলার সংক্রমণ প্রশমিত করতে সহায়তা করে। এর প্রদাহ বিরোধী, অ্যান্টি-ভাইরাল, অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য কাশি, জ্বর, ঠান্ডা লাগা এবং কফের বিরুদ্ধে শরীরের প্রতিরক্ষা বজায় রাখে। আদার রসের সাথে এক চামচ মধু মিশিয়ে খেলে শ্বাসনালীর জ্বালা এবং কফ থেকে মুক্তি পেতে সহায়তা করতে পারে। এছাড়াও আদা ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে।রসুন: রসুনে রয়েছে অনেক উপকারিতা। ব্লাড প্রেসার ধরে রাখা থেকে শুরু করে অন্ত্র সুস্থ রাখা, সবকিছুতেই এটি সাহায্য করে। এর অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল এবং অ্যান্টি-ফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে উদ্দীপিত করে এবং রোগগুলোকে উপশম করে। আপনার প্রতিদিনের তরকারিতে রসুন ব্যবহার করুন। রসুনে থাকা অ্যালিসিন অ্যালার্জি এবং শ্বাস প্রশ্বাসের সংক্রমণের বিরুদ্ধেও লড়াই করতে সহায়তা করে।হলুদ: হলুদ ক্ষত নিরাময়ে সহায়তা করে, ত্বক পরিষ্কার করে, হজমে সহায়তা করে এবং হাড়কে শক্তিশালী করে। হলুদে আছে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। এটি একটি দুর্দান্ত অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট যা দেহে জারণ প্রক্রিয়াগুলো ধীর করে এবং আপনাকে তরুণ রাখতে সহায়তা করে।হিং: হিংয়ে রয়েছে এন্টি-ইনফ্ল্যামেটরি, অ্যান্টিবায়োটিক এবং অ্যান্টি-ভাইরাল বৈশিষ্ট্য যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। এটি পরিপাকতন্ত্রকে ভালো রাখে এবং ক্ষতিকারক ফ্রি র্যাডিকেলকে দূরে রাখে। স্বাদ এবং সুস্থতা বাড়ানোর জন্য এটি ডাল এবং অন্যান্য খাবারে যোগ করতে পারেন।মরিচ: গোলমরিচে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এটি হজম শক্তি বাড়াতে এবং অন্ত্রের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়তা করে। গোল মরিচ খেলে তা শ্বাসনালীর মধ্যে থাকা শ্লেষ্মা এবং কফ বের করে আনতে সহায়তা করে। ফলে সর্দি এবং সাইনোসাইটিস থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। আপনার খাদ্যতালিকায় এই কার্যকর উপাদানটি রাখতে পারেন। ডিম, সালাদ, স্যুপ এবং এমনকি চায়েও মশলা হিসেবে এটি ব্যবহার করতে পারেন।লবঙ্গ: লবঙ্গতে ইউজেনল থাকে যা রোগজনিত ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং সংক্রমণের সম্ভাবনা হ্রাস করে। এর অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা অক্সিডেটিভ ক্ষয়ক্ষতি এবং সেল-ক্ষতিকারক ফ্রি র্যাডিক্যাল মোকাবেলায় সহায়তা করে। লবঙ্গ তীব্র ব্যথার প্রতিকার হিসাবে যুগে যুগে ব্যবহৃত হয়ে আসছে এবং এটি শ্বাসকষ্টের জন্য দুর্দান্ত ঔষধও।দারুচিনি: দারুচিনিতে পর্যাপ্ত ম্যাঙ্গানিজ, আয়রন, ক্যালসিয়াম এবং ফাইবার রয়েছে। সিনামাইল অ্যাসিটেট এবং সিনামালডিহাইডসহ এর প্রয়োজনীয় উপাদানগুলো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। দারুচিনি একটি দুর্দান্ত কার্ডিও-প্রতিরক্ষামূলক ঔষধ। এটি রক্তচাপকে ধরে রাখতে সহায়তা করে।