দ্রোহ, প্রেম, সাম্য, মানবতা ও শোষিত বঞ্চিত মানুষের মুক্তির বার্তা নিয়ে এসেছিলেন কবি কাজী নজরুল ইসলাম। মূলত তিনি বিদ্রোহী কিন্তু তার প্রেমিক রূপটিও প্রবাদপ্রতিম। তাই মানুষটি অনায়াসেই বলতে পারেন ‘আমার আপনার চেয়ে আপন যেজন খুঁজি তারে আমি আপনায়।’ পৃথিবীতে এমন ক’জন আছেন যিনি প্রেমের টানে রক্তের সম্পর্ক অস্বীকার করে পথে বেরিয়ে পড়তে পারেন।
তিনি আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম। আগামীকাল ১১ জ্যৈষ্ঠ তার ১১৬তম জন্মবার্ষিকী। বাংলা ১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ বর্ধমান জেলার আসানসোলের জামুরিয়া থানার চুরুলিয়া গ্রামে তিনি জন্মেছিলেন। তাঁর ডাক নাম ‘দুখু মিয়া’। পিতার নাম কাজী ফকির আহমেদ ও মাতা জাহেদা খাতুন।
কবির জন্মবার্ষিকীর দিনটি জাতি গভীর শ্রদ্ধা ও বিনম্র ভালবাসায় উদযাপন করবে। এ বছর জন্মবার্ষিকীর মূল অনুষ্ঠান হবে কুমিল্লায়। কুমিল্লার টাউনহল চত্বরে বিকাল ৪টায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এবার কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মবার্ষিকী উদ্যাপনের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘কুমিল্লায় নজরুল’।
নজরুলের প্রেম বিয়ে-বিচ্ছেদ, গ্রেফতার, সমাবেশ এবং কাব্য ও সংস্কৃতিচর্চাসহ বহুঘটনার নিরব সাক্ষী এ শহর। এই কুমিল্লা জেলার দৌলতপুরে সৈয়দা খাতুন নামে এক কিশোরীকে তিনি ভালোবেসেছিলেন। নাম রেখেছিলেন ‘নার্গিস’। ১৯২১ সালে নির্ধারিত বিয়ের দিনটিতেই তাঁদের বিয়ে ভেঙ্গে যায়। নার্গিসকে নিয়ে তিনি লিখেন ‘যারে হাত দিয়ে মালা দিতে পার নাই/কেন মনে রাখো তারে’। এই শহরেই এখনো কবির অনেক স্মৃতি বহমান। নজরুলের স্ত্রী প্রমীলার বাড়ীও এখানে। সেই হিসাবে কুমিল্লায় কবির জন্মবার্ষিকীর মুল অনুষ্ঠান করা এবং প্রতিপাদ্য ‘কুমিল্লায় নজরুল’ বিশেষ তাৎপর্যময়।
জাতীয় কবির জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ জাতির উদ্দেশে পৃথক বাণী দিয়েছেন।
কুমিল্লায় ঐতিহ্যবাহী টাউনহল মাঠে জাতীয় কবির জন্মবার্ষিকীর তিনদিন ব্যাপী সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। বিকাল ৪ টায় টাউন হল মাঠে আয়োজিত অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিশেষ অতিথি থাকবেন পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল, রেলপথ মন্ত্রী মোঃ মুজিবুল হক, সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার, নজরুল ইন্সটিউটের ট্রাষ্টি বোর্ড সভাপতি প্রফেসর এমিরিটাস রফিকুল ইসলাম।
সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করবেন জেলা প্রশাসক মোঃ হাসানুজ্জামান কল্লোল। স্বাগত বক্তব্য রাখবেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব বেগম আকতারী মমতাজ।
অন্যদিকে ঐদিন সকাল ৬টা ৩০মিনিটে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষে সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়স্থ কবির সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। কবির জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন উপলক্ষে নজরুল ইন্সটিটিউট আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে।
এছাড়াও ঢাকাসহ জাতীয় কবির স্মৃতি বিজড়িত ময়মনসিংহের ত্রিশাল এবং চট্টগ্রামে স্থানীয় প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় যথাযোগ্য মর্যাদায় তাঁর ১১৬তম জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন করা হবে।
বাংলা কবিতায় নজরুলের আর্বিভাব একেবারেই ধুমকেতুর মত। হঠাৎ করে একদিন তিনি বাংলা সাহিত্যে আবির্ভূত হয়ে সমস্ত আকাশকে কিভাবে রাঙিয়ে গেলেন অথবা উজ্জ্বল করে দিলেন তা নিয়ে এখনো গবেষণা হতে পারে। কোন সঞ্জিবনী মন্ত্রে তিনি উচ্চকন্ঠে বলতে পারেন ‘বল বীর, বল উন্নত মম শির’ অথবা মহা-বিদ্রোহী রণ-ক্লান্ত/ আমি সেই দিন হব শান্ত/ যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে-বাতাসে ধ্বনিবে না,/ অত্যাচারীর খড়গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না-’।
কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। অত্যাচারীর খড়গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণা বন্ধ হয়নি কিংবা উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোলও কখনো থামেনি। আর সেই কারণেও নজরুল আমাদের কাছে এখনো প্রাসঙ্গিক। আসলে বিদ্রোহী কবি যেমন ছিলেন নির্ভিক, তেমনি এই প্রেমিক কবি ছিলেন রোমান্টিক। রোমান্টিকতার আতিশয্য ও অভিমানে ভরা তার অনেক গান গত শতকের অনেকটা সময় ধরে বাঙ্গালীর হৃদয়রাজ্যে বিচরণ করছে।
বিশিষ্টজনদের মতে রবীন্দ্রনাথ-পরবর্তী নজরুলের গান অনেকটাই ভিন্ন ধরনের নির্মাণ। অধিকাংশ গান সুরপ্রধান। বৈচিত্রপূর্ণ সুরের লহরী কাব্যকথাকে তরঙ্গায়িত করে এগিয়ে নিয়ে যায়। সুরের বিন্যাসের উপরে কথা ঢলে পড়ে। তার গানে বহু গায়ক সুর-স্বাধীনতা ভোগ করেন। অনেক ক্ষেত্রে গায়ক সুরের ঢেউয়ে বেশী মেতে যান। তখন গান হয়ে যায় রাগপ্রধান।
নজরুল বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম বলেন, নজরুল ইতিহাস ও সময় সচেতন মানুষ ছিলেন যার প্রভাব তাঁর লেখায় স্পষ্টভাবে পাওয়া যায়।তিনি বলেন, তুরস্কে কামাল পাশার নেতৃত্বে প্রজাতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা, রাশিয়ায় সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব আর ভারতবর্ষে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের তরঙ্গকে নজরুল তাঁর সাহিত্যে বিপুলভাবে ধারণ করেছেন।
বাংলা সাহিত্যে বিদ্রোহী কবি হিসেবে পরিচিত হলেও তিনি ছিলেন একাধারে কবি, সংগীতজ্ঞ, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক, সাংবাদিক, চলচ্চিত্রকার, গায়ক ও অভিনেতা। তিনি বৈচিত্র্যময় অসংখ্য রাগ-রাগিনী সৃষ্টি করে বাংলা সঙ্গীত জগতকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছেন। তার কবিতা, গান ও সাহিত্য কর্ম বাংলা সাহিত্যে নবজাগরণ সৃষ্টি করেছিল। তিনি ছিলেন অসাম্প্রদায়িক চেতনার পথিকৃৎ লেখক। তাঁর লেখনি জাতীয় জীবনে অসাম্প্রদায়িক চেতনা বিকাশে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে। তাঁর কবিতা ও গান মানুষকে যুগে যুগে শোষণ ও বঞ্চনা থেকে মুক্তির পথ দেখিয়ে চলছে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে তাঁর গান ও কবিতা ছিল প্রেরণার উৎস।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর পরই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামকে সপরিবারে সদ্যস্বাধীন বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বাংলাদেশে তাঁর বসবাসের ব্যবস্থা করেন। ধানমন্ডিতে কবির বসবাসের জন্য একটি বাড়ি প্রদান করেন তিনি।
তিনি আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম। আগামীকাল ১১ জ্যৈষ্ঠ তার ১১৬তম জন্মবার্ষিকী। বাংলা ১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ বর্ধমান জেলার আসানসোলের জামুরিয়া থানার চুরুলিয়া গ্রামে তিনি জন্মেছিলেন। তাঁর ডাক নাম ‘দুখু মিয়া’। পিতার নাম কাজী ফকির আহমেদ ও মাতা জাহেদা খাতুন।
কবির জন্মবার্ষিকীর দিনটি জাতি গভীর শ্রদ্ধা ও বিনম্র ভালবাসায় উদযাপন করবে। এ বছর জন্মবার্ষিকীর মূল অনুষ্ঠান হবে কুমিল্লায়। কুমিল্লার টাউনহল চত্বরে বিকাল ৪টায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এবার কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মবার্ষিকী উদ্যাপনের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘কুমিল্লায় নজরুল’।
নজরুলের প্রেম বিয়ে-বিচ্ছেদ, গ্রেফতার, সমাবেশ এবং কাব্য ও সংস্কৃতিচর্চাসহ বহুঘটনার নিরব সাক্ষী এ শহর। এই কুমিল্লা জেলার দৌলতপুরে সৈয়দা খাতুন নামে এক কিশোরীকে তিনি ভালোবেসেছিলেন। নাম রেখেছিলেন ‘নার্গিস’। ১৯২১ সালে নির্ধারিত বিয়ের দিনটিতেই তাঁদের বিয়ে ভেঙ্গে যায়। নার্গিসকে নিয়ে তিনি লিখেন ‘যারে হাত দিয়ে মালা দিতে পার নাই/কেন মনে রাখো তারে’। এই শহরেই এখনো কবির অনেক স্মৃতি বহমান। নজরুলের স্ত্রী প্রমীলার বাড়ীও এখানে। সেই হিসাবে কুমিল্লায় কবির জন্মবার্ষিকীর মুল অনুষ্ঠান করা এবং প্রতিপাদ্য ‘কুমিল্লায় নজরুল’ বিশেষ তাৎপর্যময়।
জাতীয় কবির জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ জাতির উদ্দেশে পৃথক বাণী দিয়েছেন।
কুমিল্লায় ঐতিহ্যবাহী টাউনহল মাঠে জাতীয় কবির জন্মবার্ষিকীর তিনদিন ব্যাপী সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। বিকাল ৪ টায় টাউন হল মাঠে আয়োজিত অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিশেষ অতিথি থাকবেন পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল, রেলপথ মন্ত্রী মোঃ মুজিবুল হক, সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার, নজরুল ইন্সটিউটের ট্রাষ্টি বোর্ড সভাপতি প্রফেসর এমিরিটাস রফিকুল ইসলাম।
সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করবেন জেলা প্রশাসক মোঃ হাসানুজ্জামান কল্লোল। স্বাগত বক্তব্য রাখবেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব বেগম আকতারী মমতাজ।
অন্যদিকে ঐদিন সকাল ৬টা ৩০মিনিটে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষে সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়স্থ কবির সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। কবির জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন উপলক্ষে নজরুল ইন্সটিটিউট আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে।
এছাড়াও ঢাকাসহ জাতীয় কবির স্মৃতি বিজড়িত ময়মনসিংহের ত্রিশাল এবং চট্টগ্রামে স্থানীয় প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় যথাযোগ্য মর্যাদায় তাঁর ১১৬তম জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন করা হবে।
বাংলা কবিতায় নজরুলের আর্বিভাব একেবারেই ধুমকেতুর মত। হঠাৎ করে একদিন তিনি বাংলা সাহিত্যে আবির্ভূত হয়ে সমস্ত আকাশকে কিভাবে রাঙিয়ে গেলেন অথবা উজ্জ্বল করে দিলেন তা নিয়ে এখনো গবেষণা হতে পারে। কোন সঞ্জিবনী মন্ত্রে তিনি উচ্চকন্ঠে বলতে পারেন ‘বল বীর, বল উন্নত মম শির’ অথবা মহা-বিদ্রোহী রণ-ক্লান্ত/ আমি সেই দিন হব শান্ত/ যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে-বাতাসে ধ্বনিবে না,/ অত্যাচারীর খড়গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না-’।
কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। অত্যাচারীর খড়গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণা বন্ধ হয়নি কিংবা উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোলও কখনো থামেনি। আর সেই কারণেও নজরুল আমাদের কাছে এখনো প্রাসঙ্গিক। আসলে বিদ্রোহী কবি যেমন ছিলেন নির্ভিক, তেমনি এই প্রেমিক কবি ছিলেন রোমান্টিক। রোমান্টিকতার আতিশয্য ও অভিমানে ভরা তার অনেক গান গত শতকের অনেকটা সময় ধরে বাঙ্গালীর হৃদয়রাজ্যে বিচরণ করছে।
বিশিষ্টজনদের মতে রবীন্দ্রনাথ-পরবর্তী নজরুলের গান অনেকটাই ভিন্ন ধরনের নির্মাণ। অধিকাংশ গান সুরপ্রধান। বৈচিত্রপূর্ণ সুরের লহরী কাব্যকথাকে তরঙ্গায়িত করে এগিয়ে নিয়ে যায়। সুরের বিন্যাসের উপরে কথা ঢলে পড়ে। তার গানে বহু গায়ক সুর-স্বাধীনতা ভোগ করেন। অনেক ক্ষেত্রে গায়ক সুরের ঢেউয়ে বেশী মেতে যান। তখন গান হয়ে যায় রাগপ্রধান।
নজরুল বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম বলেন, নজরুল ইতিহাস ও সময় সচেতন মানুষ ছিলেন যার প্রভাব তাঁর লেখায় স্পষ্টভাবে পাওয়া যায়।তিনি বলেন, তুরস্কে কামাল পাশার নেতৃত্বে প্রজাতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা, রাশিয়ায় সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব আর ভারতবর্ষে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের তরঙ্গকে নজরুল তাঁর সাহিত্যে বিপুলভাবে ধারণ করেছেন।
বাংলা সাহিত্যে বিদ্রোহী কবি হিসেবে পরিচিত হলেও তিনি ছিলেন একাধারে কবি, সংগীতজ্ঞ, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক, সাংবাদিক, চলচ্চিত্রকার, গায়ক ও অভিনেতা। তিনি বৈচিত্র্যময় অসংখ্য রাগ-রাগিনী সৃষ্টি করে বাংলা সঙ্গীত জগতকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছেন। তার কবিতা, গান ও সাহিত্য কর্ম বাংলা সাহিত্যে নবজাগরণ সৃষ্টি করেছিল। তিনি ছিলেন অসাম্প্রদায়িক চেতনার পথিকৃৎ লেখক। তাঁর লেখনি জাতীয় জীবনে অসাম্প্রদায়িক চেতনা বিকাশে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে। তাঁর কবিতা ও গান মানুষকে যুগে যুগে শোষণ ও বঞ্চনা থেকে মুক্তির পথ দেখিয়ে চলছে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে তাঁর গান ও কবিতা ছিল প্রেরণার উৎস।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর পরই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামকে সপরিবারে সদ্যস্বাধীন বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বাংলাদেশে তাঁর বসবাসের ব্যবস্থা করেন। ধানমন্ডিতে কবির বসবাসের জন্য একটি বাড়ি প্রদান করেন তিনি।