ঢাকা ০৪:৫৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ডাক এসেছে পাকিস্তানকে ‘না’ বলার

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৩০:১৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০১৫
  • ৩৯৪ বার

যথেষ্ট হয়েছে, আর নয়। এবার বিদায় জানানোর পালা। মহান মুক্তিযুদ্ধের কথা অস্বীকার করে পাকিস্তান যে ধৃষ্টতা দেখিয়েছে, তাতে এই দেশের সঙ্গে সকল প্রকার সম্পর্ক ছিন্ন করার সময় এসেছে। ‘পাকিস্তানকে না বলো’ এবারের বিজয়ে যেন অঘোষিত প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল এটি।

এবারের বিজয়ের স্লোগানে, বক্তব্যে, ব্যানার, ফেস্টুনেও পাকিস্তানের প্রতি নিন্দা আর ধিক্কার জানানোর বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে ওঠে। পাকিস্তান বিরোধী দ্রোহে সবাই যেন মুক্তিযুদ্ধে ফিরতে চাইছে, সম্পর্ক ছিন্ন করার মধ্য দিয়ে প্রতিবাদকে প্রতিরোধের রূপ দিতে চাইছে।

সম্প্রতি বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী এবং জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ-এর ফাঁসির দণ্ড কার্যকরের সমালোচনা করে পাকিস্তান পার্লামেন্টে বক্তব্য দেয়া হয়।পাকিস্তানের পক্ষ থেকে মুক্তিযুদ্ধের প্রসঙ্গ নিয়ে নানা প্রশ্নও তোলা হয়।

মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে পাকিস্তানের এমন বক্তব্যের সমালোচনায় বাংলাদেশের সর্বস্তর থেকে প্রতিবাদ জানানো হয়। বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে এ ব্যাপারে কৈফিয়ত চাওয়া হয়। বাংলাদেশের পক্ষ নিয়ে পাকিস্তানেরও কেউ কেউ মুক্তিযুদ্ধের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেন।

বাংলাদেশ এবং মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে পাকিস্তানের এমন আচরণ পুরানো। বিশেষ করে মানবতাবিরোধীদের বিচার বানচাল করতে নানা কৌশল অবলম্বন করছে দেশটি। মানবতাবিরাধীদের পক্ষে লবিস্ট নিয়োগ করে বিচার প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করছে, এমন অভিযোগ অনেক আগে থেকেই উঠেছে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। তবে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী এবং মুজাহিদের বিষয়ে পাকিস্তানের অবস্থান যেন কোনোভাবেই মানতে পারছে না মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি, যার প্রতিক্রিয়া এবারে বিজয় দিবসে লক্ষণীয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু তালহা বলেন, পাকিস্তান সীমানা ছাড়িয়ে গেছে। তাদের এই ধৃষ্টতা আর মেনে নেয়ার মতো না। যথেষ্ট হয়েছে। অনেক দেশই তো অনেকেরে সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে। যে দেশটি আমাদের অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলে, সেই দেশের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রেখে বিশেষ কোনো লাভ আছে বলে মনে করি না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকী বলেন, ‘আমরা সব দিক বিবেচনা করেই পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছি।একাডেমিকভাবে আমরা পাকিস্তানের সঙ্গে আর কোনো সম্পর্ক রাখতে চাই না। তারা মানবতাবিরোধীদের পক্ষে অবস্থান নিয়ে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ এবং শহীদদের সঙ্গে গাদ্দারি করেছে। আমরা চাই বাংলাদেশ সরকারও পাকিস্তানের সঙ্গে সকল প্রকার সম্পর্ক ছিন্ন করুক।’

বিষয়টি নিয়ে কথা হয় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানের পক্ষ থেকে এখনও মুক্তিযুদ্ধে হত্যা, গণহত্যার কথা অস্বীকার করা হয়। সভ্যতার এমন সময়ে এর চেয়ে বড় মিথ্যাচার আর হতে পারে না। সারা পৃথিবী জানে, ’৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তান বাহিনী কী হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে।’

মন্ত্রী আরো বলেন, ‘পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের মূল্যায়ন করছে সরকার। আজ যে জনদাবি উঠেছে, তা সরকার বিশেষভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে। যারা বাংলাদেশের অস্তিত্বের ব্যাপারে প্রশ্ন তোলে, তাদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখার বিশেষ কোনো কারণ আছে বলে মনি করি না।’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

ডাক এসেছে পাকিস্তানকে ‘না’ বলার

আপডেট টাইম : ১১:৩০:১৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০১৫

যথেষ্ট হয়েছে, আর নয়। এবার বিদায় জানানোর পালা। মহান মুক্তিযুদ্ধের কথা অস্বীকার করে পাকিস্তান যে ধৃষ্টতা দেখিয়েছে, তাতে এই দেশের সঙ্গে সকল প্রকার সম্পর্ক ছিন্ন করার সময় এসেছে। ‘পাকিস্তানকে না বলো’ এবারের বিজয়ে যেন অঘোষিত প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল এটি।

এবারের বিজয়ের স্লোগানে, বক্তব্যে, ব্যানার, ফেস্টুনেও পাকিস্তানের প্রতি নিন্দা আর ধিক্কার জানানোর বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে ওঠে। পাকিস্তান বিরোধী দ্রোহে সবাই যেন মুক্তিযুদ্ধে ফিরতে চাইছে, সম্পর্ক ছিন্ন করার মধ্য দিয়ে প্রতিবাদকে প্রতিরোধের রূপ দিতে চাইছে।

সম্প্রতি বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী এবং জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ-এর ফাঁসির দণ্ড কার্যকরের সমালোচনা করে পাকিস্তান পার্লামেন্টে বক্তব্য দেয়া হয়।পাকিস্তানের পক্ষ থেকে মুক্তিযুদ্ধের প্রসঙ্গ নিয়ে নানা প্রশ্নও তোলা হয়।

মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে পাকিস্তানের এমন বক্তব্যের সমালোচনায় বাংলাদেশের সর্বস্তর থেকে প্রতিবাদ জানানো হয়। বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে এ ব্যাপারে কৈফিয়ত চাওয়া হয়। বাংলাদেশের পক্ষ নিয়ে পাকিস্তানেরও কেউ কেউ মুক্তিযুদ্ধের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেন।

বাংলাদেশ এবং মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে পাকিস্তানের এমন আচরণ পুরানো। বিশেষ করে মানবতাবিরোধীদের বিচার বানচাল করতে নানা কৌশল অবলম্বন করছে দেশটি। মানবতাবিরাধীদের পক্ষে লবিস্ট নিয়োগ করে বিচার প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করছে, এমন অভিযোগ অনেক আগে থেকেই উঠেছে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। তবে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী এবং মুজাহিদের বিষয়ে পাকিস্তানের অবস্থান যেন কোনোভাবেই মানতে পারছে না মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি, যার প্রতিক্রিয়া এবারে বিজয় দিবসে লক্ষণীয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু তালহা বলেন, পাকিস্তান সীমানা ছাড়িয়ে গেছে। তাদের এই ধৃষ্টতা আর মেনে নেয়ার মতো না। যথেষ্ট হয়েছে। অনেক দেশই তো অনেকেরে সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে। যে দেশটি আমাদের অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলে, সেই দেশের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রেখে বিশেষ কোনো লাভ আছে বলে মনে করি না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকী বলেন, ‘আমরা সব দিক বিবেচনা করেই পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছি।একাডেমিকভাবে আমরা পাকিস্তানের সঙ্গে আর কোনো সম্পর্ক রাখতে চাই না। তারা মানবতাবিরোধীদের পক্ষে অবস্থান নিয়ে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ এবং শহীদদের সঙ্গে গাদ্দারি করেছে। আমরা চাই বাংলাদেশ সরকারও পাকিস্তানের সঙ্গে সকল প্রকার সম্পর্ক ছিন্ন করুক।’

বিষয়টি নিয়ে কথা হয় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানের পক্ষ থেকে এখনও মুক্তিযুদ্ধে হত্যা, গণহত্যার কথা অস্বীকার করা হয়। সভ্যতার এমন সময়ে এর চেয়ে বড় মিথ্যাচার আর হতে পারে না। সারা পৃথিবী জানে, ’৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তান বাহিনী কী হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে।’

মন্ত্রী আরো বলেন, ‘পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের মূল্যায়ন করছে সরকার। আজ যে জনদাবি উঠেছে, তা সরকার বিশেষভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে। যারা বাংলাদেশের অস্তিত্বের ব্যাপারে প্রশ্ন তোলে, তাদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখার বিশেষ কোনো কারণ আছে বলে মনি করি না।’