ঢাকা ১২:৩৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আমরা প্রমাণ করব, এত বড় বাজেটও বাংলাদেশে বাস্তবায়ন করা সম্ভব

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৩:৩২:৩৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ জুন ২০২০
  • ২১২ বার

 

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবায়নে দেশের সকল মানুষ এগিয়ে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেছেন, এই বাজেটটি বাস্তবায়নে এগিয়ে আসবে আমাদের দেশের সকল মানুষ; যারা আমাদের প্রাণশক্তি। তিনি বলেন, আমরা প্রমাণ করব, এত বড় বাজেটও বাংলাদেশে বাস্তবায়ন করা সম্ভব।

সোমবার (২৯ জুন) জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর দেয়া সমাপনী বক্তব্যে মন্ত্রী একথা বলেন।

 আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘কোভিড-১৯ মোকাবিলায় অতিরিক্ত ১০ হাজার কোটি টাকার একটি থোক বরাদ্দ রাখা হয়েছে। বাজেট প্রণয়নের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী আমাদেরকে শিকড়ের সন্ধানে গুরুত্ব দেয়ার নির্দেশনা দিয়েছিলেন। আমাদের শিকড় হলো আমাদের কৃষি। আমাদের গ্রামীণ অর্থনীতি। এজন্য কৃষিখাতকেও বাজেটে অধিক গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। যেখান থেকে এখনো আমাদের শতকরা ৪০ ভাগের মতো কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়। আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস, এই কৃষিখাতই হতে পারে আমাদের সামনে এগিয়ে যাওয়ার এক মৌলিক এলাকা।’

তিনি বলেন, ‘নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে আমরা এ অঞ্চলের অনেকের খাদ্য জোগান দিতে পারব, ইনশাল্লাহ। আমাদের কঠোর পরিশ্রমের আত্মপ্রত্যয়ী কৃষক ভাইদের কারণে অতিসম্প্রতি আমরা ইন্দোনেশিয়াকে পেছনে ফেলে চাল উৎপাদনে আমাদের অবস্থান করে নিয়েছি। গত ৫০ বছরে আমাদের খাদ্য উৎপাদন বেড়েছে প্রায় সাড়ে চারগুণ। যা বিশ্বে একটি রেকর্ড।’

‘কোভিডের কারণে যারা কাজ হারিয়েছে-প্রান্তিক জনগোষ্ঠীসহ কৃষক-শ্রমিক, কামার-কুমার, জেলে-তাঁতী, জেলে, স্বাস্থ্যকর্মী, ভ্যানচালক, রিকশাচালকসহ সকল পেশার মানুষ। পান দোকান, মুদি দোকান থেকে শুরু করে ক্ষুদ্র কুটির এবং ছোটবড় সকল ব্যবসায়ী, সকল শ্রেণির, নৃ-গোষ্ঠীর মানুষ যারা কষ্টে আছেন তাদের সকলের জন্যই এবারের বাজেট। এদেশের কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে এ বাজেট থেকে বাদ দিতে পারিনি। কাউকে বাদ দিতে পারলে বাজেটের আকার অবশ্যই ছোট রাখা যেত, ছোট রাখা যেত আমাদের বাজেট ঘাটতিও।’

মন্ত্রী বলেন, ‘সত্য যে বড় কঠিন। তাই সব জেনেশুনে আমরা কঠিনকে ভালোবেসেছি। কেউ কেউ আশঙ্কা করছেন, এবারের বাজেটটি বাস্তবায়নযোগ্য নয়। কারণ এটি আকারে অনেক বড়। কিন্তু আমরা এই বাজেটটি বাস্তবায়নের ব্যাপারে আশাবাদী।’

তিনি বলেন, ‘বাজেট উপস্থাপনের সাতদিন পরেই এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি নিয়ে আরেকটি গবেষণা করে। সেখানে তারা দেখিয়েছেন, এ বছর বাংলাদেশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। আমাদের প্রক্ষেপণ হলো ৮ দশমিক ২ শতাংশ। আমাদের কাছাকাছি তাদের প্রক্ষেপণ। সুতরাং, আমরা বিশ্বাস করি, ইনশাআল্লাহ, আমরা সক্ষম হবো আমাদের এই বাজেটটি বাস্তবায়ন করতে।’

‘আমাদের এই দেশটি একটি বৈচিত্র্যময় দেশ। এখনো আমরা আমাদের অর্থনৈতিক এলাকার যে চালিকাশক্তিগুলো আমরা এখনো সম্পূর্ণভাবে কোনোটাই এক্সপান্ড করতে পারি নাই। আমরা কৃষির কথা বলেছি, শিল্পের কথা বলেছি, আমাদের ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড (জনমিতিক লভ্যাংশ) বলেছি। কিন্তু কোনোটাই আমরা পূর্ণমাত্রায় অর্জন করতে পারি নাই’-বলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

মন্ত্রী বলেন, ‘বারবার একটিমাত্র কথা উঠে আসে যে, আমাদের রেভিনিউ টু জিডিপির অনুপাত একদম কম, অনেক কম ১০ ভাগেরও নিচে। আমাদের মতো দেশ কারোরই ১৮ পার্সেন্টের নিচে না। আমরা হিসাব করে দেখেছি, এই ১০ ভাগ থেকে যদি ১৪ ভাগে উঠতে পারি, মাত্র চারভাগ, তাহলে আমাদের বছরে আমরা অর্জন করতে পারি আরও এক লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা। আরও বেশি করতে পারলে তো আরও বেশি সম্ভাবনা আছে। এজন্য কী কাজ দরকার? একটিমাত্র কাজ-সেটি হচ্ছে আমাদের অটোমেশন।’

‘আমরা গতবছর (অটোমেশন) শুরু করেছিলাম, শুরু করেছিলাম কিন্তু শেষ করতে পারি নাই। এই করোনার জন্য শেষ হয় নাই। আমরা বিশ্বাস করি, যতদ্রুত সম্ভব এই বছর এটা আমরা বাস্তবায়ন করব ইনশাল্লাহ। এটা করে আমরা প্রমাণ করব, এত বড় বাজেটও বাংলাদেশে বাস্তবায়ন করা সম্ভব।’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

আমরা প্রমাণ করব, এত বড় বাজেটও বাংলাদেশে বাস্তবায়ন করা সম্ভব

আপডেট টাইম : ০৩:৩২:৩৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ জুন ২০২০

 

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবায়নে দেশের সকল মানুষ এগিয়ে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেছেন, এই বাজেটটি বাস্তবায়নে এগিয়ে আসবে আমাদের দেশের সকল মানুষ; যারা আমাদের প্রাণশক্তি। তিনি বলেন, আমরা প্রমাণ করব, এত বড় বাজেটও বাংলাদেশে বাস্তবায়ন করা সম্ভব।

সোমবার (২৯ জুন) জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর দেয়া সমাপনী বক্তব্যে মন্ত্রী একথা বলেন।

 আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘কোভিড-১৯ মোকাবিলায় অতিরিক্ত ১০ হাজার কোটি টাকার একটি থোক বরাদ্দ রাখা হয়েছে। বাজেট প্রণয়নের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী আমাদেরকে শিকড়ের সন্ধানে গুরুত্ব দেয়ার নির্দেশনা দিয়েছিলেন। আমাদের শিকড় হলো আমাদের কৃষি। আমাদের গ্রামীণ অর্থনীতি। এজন্য কৃষিখাতকেও বাজেটে অধিক গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। যেখান থেকে এখনো আমাদের শতকরা ৪০ ভাগের মতো কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়। আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস, এই কৃষিখাতই হতে পারে আমাদের সামনে এগিয়ে যাওয়ার এক মৌলিক এলাকা।’

তিনি বলেন, ‘নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে আমরা এ অঞ্চলের অনেকের খাদ্য জোগান দিতে পারব, ইনশাল্লাহ। আমাদের কঠোর পরিশ্রমের আত্মপ্রত্যয়ী কৃষক ভাইদের কারণে অতিসম্প্রতি আমরা ইন্দোনেশিয়াকে পেছনে ফেলে চাল উৎপাদনে আমাদের অবস্থান করে নিয়েছি। গত ৫০ বছরে আমাদের খাদ্য উৎপাদন বেড়েছে প্রায় সাড়ে চারগুণ। যা বিশ্বে একটি রেকর্ড।’

‘কোভিডের কারণে যারা কাজ হারিয়েছে-প্রান্তিক জনগোষ্ঠীসহ কৃষক-শ্রমিক, কামার-কুমার, জেলে-তাঁতী, জেলে, স্বাস্থ্যকর্মী, ভ্যানচালক, রিকশাচালকসহ সকল পেশার মানুষ। পান দোকান, মুদি দোকান থেকে শুরু করে ক্ষুদ্র কুটির এবং ছোটবড় সকল ব্যবসায়ী, সকল শ্রেণির, নৃ-গোষ্ঠীর মানুষ যারা কষ্টে আছেন তাদের সকলের জন্যই এবারের বাজেট। এদেশের কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে এ বাজেট থেকে বাদ দিতে পারিনি। কাউকে বাদ দিতে পারলে বাজেটের আকার অবশ্যই ছোট রাখা যেত, ছোট রাখা যেত আমাদের বাজেট ঘাটতিও।’

মন্ত্রী বলেন, ‘সত্য যে বড় কঠিন। তাই সব জেনেশুনে আমরা কঠিনকে ভালোবেসেছি। কেউ কেউ আশঙ্কা করছেন, এবারের বাজেটটি বাস্তবায়নযোগ্য নয়। কারণ এটি আকারে অনেক বড়। কিন্তু আমরা এই বাজেটটি বাস্তবায়নের ব্যাপারে আশাবাদী।’

তিনি বলেন, ‘বাজেট উপস্থাপনের সাতদিন পরেই এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি নিয়ে আরেকটি গবেষণা করে। সেখানে তারা দেখিয়েছেন, এ বছর বাংলাদেশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। আমাদের প্রক্ষেপণ হলো ৮ দশমিক ২ শতাংশ। আমাদের কাছাকাছি তাদের প্রক্ষেপণ। সুতরাং, আমরা বিশ্বাস করি, ইনশাআল্লাহ, আমরা সক্ষম হবো আমাদের এই বাজেটটি বাস্তবায়ন করতে।’

‘আমাদের এই দেশটি একটি বৈচিত্র্যময় দেশ। এখনো আমরা আমাদের অর্থনৈতিক এলাকার যে চালিকাশক্তিগুলো আমরা এখনো সম্পূর্ণভাবে কোনোটাই এক্সপান্ড করতে পারি নাই। আমরা কৃষির কথা বলেছি, শিল্পের কথা বলেছি, আমাদের ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড (জনমিতিক লভ্যাংশ) বলেছি। কিন্তু কোনোটাই আমরা পূর্ণমাত্রায় অর্জন করতে পারি নাই’-বলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

মন্ত্রী বলেন, ‘বারবার একটিমাত্র কথা উঠে আসে যে, আমাদের রেভিনিউ টু জিডিপির অনুপাত একদম কম, অনেক কম ১০ ভাগেরও নিচে। আমাদের মতো দেশ কারোরই ১৮ পার্সেন্টের নিচে না। আমরা হিসাব করে দেখেছি, এই ১০ ভাগ থেকে যদি ১৪ ভাগে উঠতে পারি, মাত্র চারভাগ, তাহলে আমাদের বছরে আমরা অর্জন করতে পারি আরও এক লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা। আরও বেশি করতে পারলে তো আরও বেশি সম্ভাবনা আছে। এজন্য কী কাজ দরকার? একটিমাত্র কাজ-সেটি হচ্ছে আমাদের অটোমেশন।’

‘আমরা গতবছর (অটোমেশন) শুরু করেছিলাম, শুরু করেছিলাম কিন্তু শেষ করতে পারি নাই। এই করোনার জন্য শেষ হয় নাই। আমরা বিশ্বাস করি, যতদ্রুত সম্ভব এই বছর এটা আমরা বাস্তবায়ন করব ইনশাল্লাহ। এটা করে আমরা প্রমাণ করব, এত বড় বাজেটও বাংলাদেশে বাস্তবায়ন করা সম্ভব।’