ঢাকা ০১:১৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৮ জানুয়ারী ২০২৫, ২৪ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম

পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করলো ঢাবি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০১:০৩:৪৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৫
  • ২২৮ বার

মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় চালানো গণহত্যার কথা অস্বীকার করায় পাকিস্তানের সঙ্গে সব ধরণের সম্পর্ক ছিন্ন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।

তবে এমন সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উর্দু বিভাগের শিক্ষা কার্যক্রমে কোনো ধরণের প্রভাব ফেলবে না বলেও জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য বলেন, ‘একাত্তরে পাকিস্তান এ দেশের সাধারণ মানুষের প্রতি যে গণহত্যা চালিয়েছে তা অস্বীকার করে তারা দ্বিতীয়বার গণহত্যা চালাচ্ছে। তারা সে সময় যে গণহত্যা চালিয়েছে তার প্রত্যক্ষ প্রমাণ এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ও পৃথিবীর বিভিন্ন আর্কাইভসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে আছে। কিন্তু এ ধরণের মিথ্যাচার করায় সব সময় সত্যের অনুসন্ধান এবং সত্য প্রতিষ্ঠায় কাজ করা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এ ধরণের মিথ্যার সঙ্গে কোনো আপোষ করার কথা চিন্তাই করে না।’

তিনি বলেন, ‘আমরা ১ ডিসেম্বর বিজয় র্যালি থেকে ঘোষণা দিয়েছি যে, পাকিস্তানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয় বা সরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো ধরণের সম্পর্ক রাখা সম্ভব নয়। তাই আজ (সোমবার) সিন্ডিকেট সভায় বসে এগুলো বিস্তারিত আলোচনা করেছি। সেখানে সব ধরণের সম্পর্ক ছিন্নের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়`।

উপাচার্য বলেন, ‘পাকিস্তানের সরকার ১৯৭১ সালে যে গণহত্যা করেছে তার প্রমাণ পাকিস্তানের বিভিন্ন রিপোর্ট ও হামিদুর রহমানের রিপোর্টসহ পত্র-পত্রিকায় আছে। তাই সে সময়ের গণহত্যার আনুষ্ঠানিক নিঃশর্ত ক্ষমা না চাওয়া পর্যন্ত পাকিস্তানের সঙ্গে ও তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সকল সরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো সম্পর্ক থাকবে না। তাদের সঙ্গে রিচার্স, কালচারাল, স্পোর্টসসহ কোনো ধরণের সম্পর্ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রাখবে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কোনো ছাত্র কিংবা শিক্ষক প্রতিনিধিসহ সব ধরণের এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম আর থাকবে না। একই সঙ্গে ঢাবির সাথে পাকিস্তানের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের যে সম্পর্ক এবং সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিক অবস্থায় রয়েছে আজ থেকে সেগুলো স্থগিত হয়ে যাবে।’

এসময় ১৯৫ জন পাকিস্তানি সৈন্যের বিচারের দাবি জানিয়ে আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ‘১৯৫ জন পাকিস্তানি সৈন্যের বিচার সম্পন্ন করতে হবে। কেউ মারা গেলে তাদের মরণোত্তর বিচার করতে হবে। এটা মানবতার দাবি, এটা সারা বিশ্বের দাবি।’

তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাসী রাষ্ট্র পাকিস্তানের সঙ্গে দ্বি-পক্ষীয় এবং কুটনৈতিক সম্পর্ক বাংলাদেশ সরকারের ছিন্ন করতে হবে।’ যে রাষ্ট্র গণহত্যার সঙ্গে জড়িত তারা কিভাবে জাতিসংঘের সদস্য হয়। তাই গণহত্যার কারণে জাতিসংঘ এবং অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানোর কারণে সার্কসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠন থেকে তাদের সদস্য পদ বাতিলের জন্য বাংলাদেশ সরকারের যে ধরণের প্রক্রিয়া অবলম্বন করার দরকার সে প্রক্রিয়া অবলম্বন করতেও দাবি জানান উপাচার্য।

এদিকে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের অন্তর্ভুক্ত সব বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে ফেডারেশন থেকেও একই ধরণের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ঘোষণা দেন ফেডারেশন সভাপতি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে, এমন সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উর্দু বিভাগের শিক্ষা কার্যক্রমে কোনো ধরণের প্রভাব ফেলবে না বলেও জানান উপাচার্য। কারণ এটি একটি ভাষা ও সাহিত্য। যা বিশ্বের আরো অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে একসাথে সাকিব-তামিম

পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করলো ঢাবি

আপডেট টাইম : ০১:০৩:৪৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৫

মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় চালানো গণহত্যার কথা অস্বীকার করায় পাকিস্তানের সঙ্গে সব ধরণের সম্পর্ক ছিন্ন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।

তবে এমন সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উর্দু বিভাগের শিক্ষা কার্যক্রমে কোনো ধরণের প্রভাব ফেলবে না বলেও জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য বলেন, ‘একাত্তরে পাকিস্তান এ দেশের সাধারণ মানুষের প্রতি যে গণহত্যা চালিয়েছে তা অস্বীকার করে তারা দ্বিতীয়বার গণহত্যা চালাচ্ছে। তারা সে সময় যে গণহত্যা চালিয়েছে তার প্রত্যক্ষ প্রমাণ এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ও পৃথিবীর বিভিন্ন আর্কাইভসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে আছে। কিন্তু এ ধরণের মিথ্যাচার করায় সব সময় সত্যের অনুসন্ধান এবং সত্য প্রতিষ্ঠায় কাজ করা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এ ধরণের মিথ্যার সঙ্গে কোনো আপোষ করার কথা চিন্তাই করে না।’

তিনি বলেন, ‘আমরা ১ ডিসেম্বর বিজয় র্যালি থেকে ঘোষণা দিয়েছি যে, পাকিস্তানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয় বা সরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো ধরণের সম্পর্ক রাখা সম্ভব নয়। তাই আজ (সোমবার) সিন্ডিকেট সভায় বসে এগুলো বিস্তারিত আলোচনা করেছি। সেখানে সব ধরণের সম্পর্ক ছিন্নের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়`।

উপাচার্য বলেন, ‘পাকিস্তানের সরকার ১৯৭১ সালে যে গণহত্যা করেছে তার প্রমাণ পাকিস্তানের বিভিন্ন রিপোর্ট ও হামিদুর রহমানের রিপোর্টসহ পত্র-পত্রিকায় আছে। তাই সে সময়ের গণহত্যার আনুষ্ঠানিক নিঃশর্ত ক্ষমা না চাওয়া পর্যন্ত পাকিস্তানের সঙ্গে ও তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সকল সরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো সম্পর্ক থাকবে না। তাদের সঙ্গে রিচার্স, কালচারাল, স্পোর্টসসহ কোনো ধরণের সম্পর্ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রাখবে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কোনো ছাত্র কিংবা শিক্ষক প্রতিনিধিসহ সব ধরণের এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম আর থাকবে না। একই সঙ্গে ঢাবির সাথে পাকিস্তানের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের যে সম্পর্ক এবং সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিক অবস্থায় রয়েছে আজ থেকে সেগুলো স্থগিত হয়ে যাবে।’

এসময় ১৯৫ জন পাকিস্তানি সৈন্যের বিচারের দাবি জানিয়ে আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ‘১৯৫ জন পাকিস্তানি সৈন্যের বিচার সম্পন্ন করতে হবে। কেউ মারা গেলে তাদের মরণোত্তর বিচার করতে হবে। এটা মানবতার দাবি, এটা সারা বিশ্বের দাবি।’

তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাসী রাষ্ট্র পাকিস্তানের সঙ্গে দ্বি-পক্ষীয় এবং কুটনৈতিক সম্পর্ক বাংলাদেশ সরকারের ছিন্ন করতে হবে।’ যে রাষ্ট্র গণহত্যার সঙ্গে জড়িত তারা কিভাবে জাতিসংঘের সদস্য হয়। তাই গণহত্যার কারণে জাতিসংঘ এবং অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানোর কারণে সার্কসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠন থেকে তাদের সদস্য পদ বাতিলের জন্য বাংলাদেশ সরকারের যে ধরণের প্রক্রিয়া অবলম্বন করার দরকার সে প্রক্রিয়া অবলম্বন করতেও দাবি জানান উপাচার্য।

এদিকে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের অন্তর্ভুক্ত সব বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে ফেডারেশন থেকেও একই ধরণের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ঘোষণা দেন ফেডারেশন সভাপতি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে, এমন সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উর্দু বিভাগের শিক্ষা কার্যক্রমে কোনো ধরণের প্রভাব ফেলবে না বলেও জানান উপাচার্য। কারণ এটি একটি ভাষা ও সাহিত্য। যা বিশ্বের আরো অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে।