ঢাকা ১২:১০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নিকলী হাওর পর্যটন এলাকায় ঢুকতে না পেরে ফিরে গেল ঢাকা থেকে আসা শত-শত বাইকার-পর্যটক

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:১৯:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুন ২০২০
  • ২৩২ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ এখনও বর্ষার পানি কানায় কানায় পূর্ণ হয়নি। তবু,  করোনা প্রাদুর্ভাবকে সামনে রেখে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়েও কিশোরগঞ্জের নিকলী বেড়ি বাঁধ পর্যটন এলাকায় ঠেকানো যাচ্ছিলনা না দেশের দূরদূরান্ত থেকে আগত  দর্শনার্থী-পর্যটকদের।

এমন পরিস্থিতিতে করোনা প্রতিরোধ কমিটির কঠোর সিদ্ধান্তে  প্রবেশ পথে পথে পুলিশ, স্বেচ্ছাসেবক আর ভ্রাম্যমাণ আদালতের তৎপরতা বাড়ানো হয়েছিল ভোর বেলা থেকে।

আর এ কারণে বরাবরের মতো আজ শুক্রবারও রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা শত-শত বাইকার ও পর্যটকদের ভিড় জমেছিল এ পর্যটন এলাকার চারপাশের প্রবেশ পথে।

কিন্তু; পুলিশ, স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক দল আর ভ্রাম্যমাণ আদালতের ব্যাপক তৎপরতার মুখে কেউ-ই প্রবেশ করতে পারেনি। প্রবেশ পথে এমন  নিচ্ছিদ্র বাঁধার মুখে তারা ব্যর্থ মনোরথে নিজ নিজ ঠিকানার উদ্দেশ্যে ফিরে গেল।

আর হাফ ছেড়ে বাঁচলো নিকলী উপজেলা করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ কমিটি।

জানা গেছে, বরাবরের মতো আজ শুক্রবার কাকডাকা ভোর থেকেই রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মোটরবাইক এবং বিভিন্ন ব্রাণ্ডের বিলাসবহুল প্রাইভেট কার, মাইক্রো  হাঁকিয়ে নিকলীর বেড়িবাঁধ পর্যটন এলাকার প্রবেশ পথে ভিড় করতে থাকে শতশত পর্যটক।

কিন্তু; আগে থেকেই অবস্থান নেয়া পুলিশ, স্বেচ্ছাসেবক দল এবং ভ্রাম্যমাণ আদালতের কঠোর হুশিয়ারি ও ভূমিকায় কেউ-ই প্রবেশ করতে পারেনি।

অনেক চেষ্টা ও আকুতি-মিনতি করে প্রবেশের সুযোগ না পেয়ে ফিরে যান নানা বয়সের  ভ্রমণ বিলাসী অসংখ্য নারী-পুরুষ দর্শনার্থী-পর্যটক দল।

নিকলী উপজেলা করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ কমিটি বলছে, ঢাকা রেড জোনের অন্তর্গত করোনার হটস্পট কিশোরগঞ্জ। এখানে বাইরের লোকজনের এমন সমাগম করোনার সোশ্যাল ট্রান্সমিশন ভয়ঙ্কর রূপ নিতে পারে।

আর এমন নিষিদ্ধ ঘোষণার পরও ব্যাপক হারে পর্যটক সমাগম বারায় এ কঠোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

আগন্তুকরা বলছেন, লকডাউন আর খাঁচাবন্দী পাখির মতো হোম কোয়ারেন্টিন থেকে বেরিয়ে  একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস নেয়া ছাড়া উপায় নেই। তাই তারা এ-ই সুদূর নির্জন হাওর পর্যটন এলাকাকে বেছে নিয়েছিলেন।

শুক্রবার বিকালে সরেজমিন পরিদর্শন কালে দেখা গেছে, নিকলী সদরের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষাকালী সবক’টি প্রধান সড়কে পুলিশ, স্বেচ্ছাসেবক দলের পাহারা এবং ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে দর্শনার্থী ও পর্যটকদের ঠেকাচ্ছে প্রশাসন।

এ সময়  জেলা এবং আশপাশের জেলার লোকজনও স্ত্রী- ও স্বজনদের নিয়েও উপস্থিত হয়েছিল এ আনন্দ কোলাহলে অংশ নিতে।

নিকলী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আসপিয়া সিরাতের নেতৃত্বে গঠিত ভ্রাম্যমাণ আদালত, পুলিশ  আর স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের ব্যাপক তৎপরতা শেষ পর্যন্ত রুখে দিল অপরিনামদর্শী ভ্রমণ বিলাসীদের এমন আনন্দ কোলাহলের আয়োজন।

নিকলী থানার  ওসি  মোঃ শামসুল আলম সিদ্দিকীর সঙ্গে কথা হলে তিনি সাতকাহনকে জানান, প্রবেশ পথে পথে  পুলিশ এবং স্বেচ্ছাসেবক দলের কঠোর অবস্থানের কারণে আজ কোনো পর্যটক দল-ই বেড়িবাঁধ পর্যটন এলাকায় ঢুকতে পারেনি।

এ সময় কথা হলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আসপিয়া সিরাত সাতকাহনকে বলেন, এখানে পর্যটন কেন্দ্রটি গড়ে ওঠায় নিকলী উপজেলার সামাজিক ও অর্থনৈতিক গুরুত্ব বেড়েছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

এখানে অনেক বেকার লোকজন বিভিন্ন কাজে জড়িয়ে নতুন জীবিকারও সন্ধান পেয়েছে। আমরা এ বিষয়টিও গুরুত্বের সঙ্গে দেখি।

কিন্তু; এই করোনা সংক্রমণের মহামারীর সময় এ ধরনের লোক সমাগমের কারণে সোশ্যাল ট্রান্সমিশন ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।

আর এজন্য করোনা প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর থেকেই এখানে দর্শনার্থী- পর্যটক সমাগম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। এ ছাড়া রাস্তায় রাস্তায় পুলিশ পাহারা বসিয়ে ব্যারিকেড সৃষ্টি এবং মোবাইল কোর্টের তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

জানা গেছে, বর্ষার পানির ঢেউয়ের প্রচণ্ড আঘাত থেকে সদর এলাকাকে  রক্ষায় ২০০০ সালের দিকে ঘোড়াউত্রা নদী তীরে অবস্থিত কিশোরগঞ্জ হাওর উপজেলা নিকলীতে পাঁচ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য বেড়িবাঁধ তৈরি করে সরকার।

তারপর থেকেই উপচে পড়া বর্ষার পানির ঢেউয়ের প্রচণ্ড আঘাত থেকে রক্ষা পায় এলাকাটি।

কালক্রমে ওই বেড়িবাঁধ এলাকাটির সামনে বর্ষায়  দিগন্তবিস্তৃত থৈ-থৈ পানি আর ঢেউয়ের খেলা, মুক্ত-নির্মল হাওয়া এবং অপরূপ নৈসর্গিকতা পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।

মিডিয়া ও সোশ্যাল মিডিয়ার কল্যাণে এখন সারা দেশের ভ্রমণ বিলাসী মানুষের পছন্দের পর্যটন এলাকা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে এই নিকলী হাওর পর্যটন এলাকা।

আর এ এলাকাটি ঘিরে নতুন করে জীবিকার সন্ধান পায় নৌকা,স্পিট বোট চালক,হোটেল ব্যবসায়ীসহ এক শ্রেণির খেটে খাওয়া মৌসুমি ব্যবসায়ীরা।

এসব গুরুত্বের কথা বিবেচনায় নিয়ে ইতিমধ্যেই পর্যটন মন্ত্রণালয় ভাটিকন্যা কিশোরগঞ্জের  এ এলাকাটিকে পর্যটন উপযোগী করে গড়ে তোলার পরিকল্পনাও গ্রহণ করেছে।

এ সময় ঢাকা থেকে ১৮ টি মোটরসাইকেল যোগে এখানে আসা বাইকার দলের জাফর ওয়াজেদ নামে একজনের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, লকডাউন আর হোম কোয়ারেন্টিনে থেকে আমরা এখন কী যে “বোর ফিল” করছি তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারবোনা।

তা-ই একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে, মুক্ত বিস্তীর্ণ জলাভূমিতে নৌকা-স্পীড বোটে ঘুরে বেড়াতে এবং জল ক্রীড়ায় মেতে ওঠতে এ পর্যটন এলাকাটিকে বেছে নিয়েছিলাম।

কিন্তু; পুলিশ, স্বেচ্ছাসেবক দল আর ভ্রাম্যমাণ আদালত তাদের সে স্বপ্ন গুঁড়িয়ে দিল।

কিশোরগঞ্জ জেলা করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সচিব সিভিল সার্জন ডা. মো. মুজিবুর রহমানের সঙ্গে কথা হলে তিনি সাতকাহনকে জানান, রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের লোকজন এভাবে এ পর্যটন এলাকায় ভিড় করলে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার যতই দোহাই দিক না কেনো, এতে সোশ্যাল ট্রান্সমিশন ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।

আর এসব দিক বিবেচনায় রেখে আগে থেকেই পর্যটন নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু ; বেপরোয়া পর্যটকরা নিষেধ উপেক্ষা করে আসা অব্যাহত রাখলে এ ব্যাপারে কঠোর হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

নিকলী হাওর পর্যটন এলাকায় ঢুকতে না পেরে ফিরে গেল ঢাকা থেকে আসা শত-শত বাইকার-পর্যটক

আপডেট টাইম : ১২:১৯:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুন ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ এখনও বর্ষার পানি কানায় কানায় পূর্ণ হয়নি। তবু,  করোনা প্রাদুর্ভাবকে সামনে রেখে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়েও কিশোরগঞ্জের নিকলী বেড়ি বাঁধ পর্যটন এলাকায় ঠেকানো যাচ্ছিলনা না দেশের দূরদূরান্ত থেকে আগত  দর্শনার্থী-পর্যটকদের।

এমন পরিস্থিতিতে করোনা প্রতিরোধ কমিটির কঠোর সিদ্ধান্তে  প্রবেশ পথে পথে পুলিশ, স্বেচ্ছাসেবক আর ভ্রাম্যমাণ আদালতের তৎপরতা বাড়ানো হয়েছিল ভোর বেলা থেকে।

আর এ কারণে বরাবরের মতো আজ শুক্রবারও রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা শত-শত বাইকার ও পর্যটকদের ভিড় জমেছিল এ পর্যটন এলাকার চারপাশের প্রবেশ পথে।

কিন্তু; পুলিশ, স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক দল আর ভ্রাম্যমাণ আদালতের ব্যাপক তৎপরতার মুখে কেউ-ই প্রবেশ করতে পারেনি। প্রবেশ পথে এমন  নিচ্ছিদ্র বাঁধার মুখে তারা ব্যর্থ মনোরথে নিজ নিজ ঠিকানার উদ্দেশ্যে ফিরে গেল।

আর হাফ ছেড়ে বাঁচলো নিকলী উপজেলা করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ কমিটি।

জানা গেছে, বরাবরের মতো আজ শুক্রবার কাকডাকা ভোর থেকেই রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মোটরবাইক এবং বিভিন্ন ব্রাণ্ডের বিলাসবহুল প্রাইভেট কার, মাইক্রো  হাঁকিয়ে নিকলীর বেড়িবাঁধ পর্যটন এলাকার প্রবেশ পথে ভিড় করতে থাকে শতশত পর্যটক।

কিন্তু; আগে থেকেই অবস্থান নেয়া পুলিশ, স্বেচ্ছাসেবক দল এবং ভ্রাম্যমাণ আদালতের কঠোর হুশিয়ারি ও ভূমিকায় কেউ-ই প্রবেশ করতে পারেনি।

অনেক চেষ্টা ও আকুতি-মিনতি করে প্রবেশের সুযোগ না পেয়ে ফিরে যান নানা বয়সের  ভ্রমণ বিলাসী অসংখ্য নারী-পুরুষ দর্শনার্থী-পর্যটক দল।

নিকলী উপজেলা করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ কমিটি বলছে, ঢাকা রেড জোনের অন্তর্গত করোনার হটস্পট কিশোরগঞ্জ। এখানে বাইরের লোকজনের এমন সমাগম করোনার সোশ্যাল ট্রান্সমিশন ভয়ঙ্কর রূপ নিতে পারে।

আর এমন নিষিদ্ধ ঘোষণার পরও ব্যাপক হারে পর্যটক সমাগম বারায় এ কঠোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

আগন্তুকরা বলছেন, লকডাউন আর খাঁচাবন্দী পাখির মতো হোম কোয়ারেন্টিন থেকে বেরিয়ে  একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস নেয়া ছাড়া উপায় নেই। তাই তারা এ-ই সুদূর নির্জন হাওর পর্যটন এলাকাকে বেছে নিয়েছিলেন।

শুক্রবার বিকালে সরেজমিন পরিদর্শন কালে দেখা গেছে, নিকলী সদরের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষাকালী সবক’টি প্রধান সড়কে পুলিশ, স্বেচ্ছাসেবক দলের পাহারা এবং ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে দর্শনার্থী ও পর্যটকদের ঠেকাচ্ছে প্রশাসন।

এ সময়  জেলা এবং আশপাশের জেলার লোকজনও স্ত্রী- ও স্বজনদের নিয়েও উপস্থিত হয়েছিল এ আনন্দ কোলাহলে অংশ নিতে।

নিকলী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আসপিয়া সিরাতের নেতৃত্বে গঠিত ভ্রাম্যমাণ আদালত, পুলিশ  আর স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের ব্যাপক তৎপরতা শেষ পর্যন্ত রুখে দিল অপরিনামদর্শী ভ্রমণ বিলাসীদের এমন আনন্দ কোলাহলের আয়োজন।

নিকলী থানার  ওসি  মোঃ শামসুল আলম সিদ্দিকীর সঙ্গে কথা হলে তিনি সাতকাহনকে জানান, প্রবেশ পথে পথে  পুলিশ এবং স্বেচ্ছাসেবক দলের কঠোর অবস্থানের কারণে আজ কোনো পর্যটক দল-ই বেড়িবাঁধ পর্যটন এলাকায় ঢুকতে পারেনি।

এ সময় কথা হলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আসপিয়া সিরাত সাতকাহনকে বলেন, এখানে পর্যটন কেন্দ্রটি গড়ে ওঠায় নিকলী উপজেলার সামাজিক ও অর্থনৈতিক গুরুত্ব বেড়েছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

এখানে অনেক বেকার লোকজন বিভিন্ন কাজে জড়িয়ে নতুন জীবিকারও সন্ধান পেয়েছে। আমরা এ বিষয়টিও গুরুত্বের সঙ্গে দেখি।

কিন্তু; এই করোনা সংক্রমণের মহামারীর সময় এ ধরনের লোক সমাগমের কারণে সোশ্যাল ট্রান্সমিশন ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।

আর এজন্য করোনা প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর থেকেই এখানে দর্শনার্থী- পর্যটক সমাগম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। এ ছাড়া রাস্তায় রাস্তায় পুলিশ পাহারা বসিয়ে ব্যারিকেড সৃষ্টি এবং মোবাইল কোর্টের তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

জানা গেছে, বর্ষার পানির ঢেউয়ের প্রচণ্ড আঘাত থেকে সদর এলাকাকে  রক্ষায় ২০০০ সালের দিকে ঘোড়াউত্রা নদী তীরে অবস্থিত কিশোরগঞ্জ হাওর উপজেলা নিকলীতে পাঁচ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য বেড়িবাঁধ তৈরি করে সরকার।

তারপর থেকেই উপচে পড়া বর্ষার পানির ঢেউয়ের প্রচণ্ড আঘাত থেকে রক্ষা পায় এলাকাটি।

কালক্রমে ওই বেড়িবাঁধ এলাকাটির সামনে বর্ষায়  দিগন্তবিস্তৃত থৈ-থৈ পানি আর ঢেউয়ের খেলা, মুক্ত-নির্মল হাওয়া এবং অপরূপ নৈসর্গিকতা পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।

মিডিয়া ও সোশ্যাল মিডিয়ার কল্যাণে এখন সারা দেশের ভ্রমণ বিলাসী মানুষের পছন্দের পর্যটন এলাকা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে এই নিকলী হাওর পর্যটন এলাকা।

আর এ এলাকাটি ঘিরে নতুন করে জীবিকার সন্ধান পায় নৌকা,স্পিট বোট চালক,হোটেল ব্যবসায়ীসহ এক শ্রেণির খেটে খাওয়া মৌসুমি ব্যবসায়ীরা।

এসব গুরুত্বের কথা বিবেচনায় নিয়ে ইতিমধ্যেই পর্যটন মন্ত্রণালয় ভাটিকন্যা কিশোরগঞ্জের  এ এলাকাটিকে পর্যটন উপযোগী করে গড়ে তোলার পরিকল্পনাও গ্রহণ করেছে।

এ সময় ঢাকা থেকে ১৮ টি মোটরসাইকেল যোগে এখানে আসা বাইকার দলের জাফর ওয়াজেদ নামে একজনের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, লকডাউন আর হোম কোয়ারেন্টিনে থেকে আমরা এখন কী যে “বোর ফিল” করছি তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারবোনা।

তা-ই একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে, মুক্ত বিস্তীর্ণ জলাভূমিতে নৌকা-স্পীড বোটে ঘুরে বেড়াতে এবং জল ক্রীড়ায় মেতে ওঠতে এ পর্যটন এলাকাটিকে বেছে নিয়েছিলাম।

কিন্তু; পুলিশ, স্বেচ্ছাসেবক দল আর ভ্রাম্যমাণ আদালত তাদের সে স্বপ্ন গুঁড়িয়ে দিল।

কিশোরগঞ্জ জেলা করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সচিব সিভিল সার্জন ডা. মো. মুজিবুর রহমানের সঙ্গে কথা হলে তিনি সাতকাহনকে জানান, রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের লোকজন এভাবে এ পর্যটন এলাকায় ভিড় করলে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার যতই দোহাই দিক না কেনো, এতে সোশ্যাল ট্রান্সমিশন ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।

আর এসব দিক বিবেচনায় রেখে আগে থেকেই পর্যটন নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু ; বেপরোয়া পর্যটকরা নিষেধ উপেক্ষা করে আসা অব্যাহত রাখলে এ ব্যাপারে কঠোর হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।