ঢাকা ১১:৪৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম

১৩১ কোটি টাকা আত্মসাৎ: কালো তালিকায় ১৪ ঠিকাদার

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৩:০১:৩৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুন ২০২০
  • ২০৬ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ, হাসপাতাল ও প্রতিষ্ঠানের কাজে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে ১৪টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।

এদের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় ব্যবহৃত সরঞ্জাম কেনাকাটায় ১৩১ কোটি টাকা আত্মাসাতের অভিযোগ রয়েছে। বুধবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (প্রশাসন) এ সংক্রান্ত আদেশ স্বাক্ষর করেন।

এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ছয় মাসেরও বেশি সময় আগে ব্যবস্থা নিতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

এ পরিপ্রেক্ষিতে ৯ জুন মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপসচিব হাসান মাহমুদ স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে কালো তালিকাভুক্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে স্বাস্থ্য অধিদফতরে জানানো হয়।

জানা গেছে, দুর্নীতি, অনিয়ম ও চক্রান্তের অভিযোগে অভিযুক্ত ১৪টি প্রতিষ্ঠান স্বাস্থ্য সরঞ্জাম কেনাকাটার ১৩১ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে।

এসব অভিযোগে ২০১৮ ও ২০১৯ সালে এদের বিরুদ্ধে নয়টি মামলা করে দুদক। মামলাগুলো বিচারাধীন আছে। এই ১৪ ঠিকাদারকে চিহ্নিত করে গত বছরের ১২ ডিসেম্ব^র স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠিতে তালিকা পাঠায় দুদক।

দুদকের সুপারিশ অনুযায়ী কালো তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে- স্বাস্থ্য অধিদফতরের দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত ও আলোচিত আবজাল হোসেনের স্ত্রী রুবিনা খানমের ‘রহমান ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল’ ও ‘রুপা ফ্যাশন’।

প্রতিষ্ঠান দুটির বিরুদ্ধে মেডিকেল সরঞ্জাম ক্রয় সংক্রান্ত এক মামলায় ৫ কোটি ৯০ লাখ টাকা আত্মসাৎ এবং ৩১ কোটি ৫০ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের কথা বলা হয়েছে।

তাদের বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় করা এক মামলায় সাড়ে ৩৭ কোটি টাকা সরকারি তহবিল আত্মসাতের অভিযোগ করা হয়েছে।

পুরানা পল্টনের আবদুস সাত্তার সরকার ও মো. আহসান হাবীবের মালিকানাধীন মেসার্স মার্কেন্টাইল ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, তোপখানা রোডের জাহের উদ্দিন সরকারের মালিকানাধীন বেঙ্গল সায়েন্টিফিক অ্যান্ড সার্জিক্যাল ও দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার আসাদুর রহমানের মালিকানাধীন ইউনিভার্সেল ট্রেড কর্পোরেশনের বিরুদ্ধে দুদকের খুলনার সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের মামলায় সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৬ কোটি ৬ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করা হয়েছে।

জাহেরউদ্দিন সরকারের মালিকানাধীন বেঙ্গল সায়েন্টিফিক অ্যান্ড সার্জিক্যালের বিরুদ্ধে রংপুর মেডিকেল কলেজের সাড়ে চার কোটি টাকা ও চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের নামে যন্ত্রপাতি ক্রয়ের নামে ৯ কোটি ১৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করেছিল দুদক।

এছাড়া চট্টগ্রামে দুর্নীতির অভিযোগে মুন্সী ফররুখ হোসাইনের মেসার্স আহমেদ এন্টারপ্রাইজ এবং এএসএল ও প্রতিষ্ঠানটির এমডি আফতাব আহমেদকেও কালো তালিকাভুক্ত করতে বলেছিল দুদক।

ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কেনাকাটায় অনিয়মের মাধ্যমে ১০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ঢাকার মিরপুরের আবদুল্লাহ আল মামুনের মালিকানাধীন অনিক ট্রেডার্স ও মুন্সী ফররুখ হোসাইনের মেসার্স আহমেদ এন্টারপ্রাইজের বিরুদ্ধেও দুদকের মামলা রয়েছে।

এছাড়া বিনা টেন্ডারে সাড়ে নয় কোটি টাকার বেশি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে রংপুরের মনজুর আহমেদের মালিকানাধীন মেসার্স ম্যানিলা এন্টারপ্রাইজ ও মেসার্স এসকে ট্রেডার্স, মোসাদ্দেক হোসেনের মালিকানাধীন এমএইচ ফার্মা, জয়নাল আবেদীনের মালিকানাধীন মেসার্স অভি ড্রাগস, আলমগীর হোসেনের মালিকানাধীন মেসার্স আলবিরা ফার্মেসি ও মো. মিন্টুর মালিকানাধীন এসএম ট্রেডার্সকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়।

এছাড়া ঢাকার মোকছেদুল ইসলামের মালিকানাধীন বেয়ার এভিয়েশনের নামে ৭৫ লাখ টাকা ভ্যাট ফাঁকি এবং মিথ্যা ব্যয় দেখিয়ে ৮৮ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দিনাজপুরে একটি মামলা রয়েছে।

এদিকে ৯ জুন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে বলা হয়, সরকারি অর্থের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিতকরণসহ ক্রয় কার্যক্রমে স্বচ্ছতা আনয়ন এবং দুর্নীতি, প্রতারণা ও চক্রান্তমূলক কার্যক্রম প্রতিরোধে ১৪টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এবং তাদের স্বত্বাধিকারীদের কালো তালিকাভুক্ত করা প্রয়োজন বলে অভিমত দিয়েছে দুদক।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

গাজায় যুদ্ধবিরতিকে স্বাগত জানাল জাতিসংঘ

১৩১ কোটি টাকা আত্মসাৎ: কালো তালিকায় ১৪ ঠিকাদার

আপডেট টাইম : ০৩:০১:৩৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুন ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ, হাসপাতাল ও প্রতিষ্ঠানের কাজে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে ১৪টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।

এদের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় ব্যবহৃত সরঞ্জাম কেনাকাটায় ১৩১ কোটি টাকা আত্মাসাতের অভিযোগ রয়েছে। বুধবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (প্রশাসন) এ সংক্রান্ত আদেশ স্বাক্ষর করেন।

এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ছয় মাসেরও বেশি সময় আগে ব্যবস্থা নিতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

এ পরিপ্রেক্ষিতে ৯ জুন মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপসচিব হাসান মাহমুদ স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে কালো তালিকাভুক্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে স্বাস্থ্য অধিদফতরে জানানো হয়।

জানা গেছে, দুর্নীতি, অনিয়ম ও চক্রান্তের অভিযোগে অভিযুক্ত ১৪টি প্রতিষ্ঠান স্বাস্থ্য সরঞ্জাম কেনাকাটার ১৩১ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে।

এসব অভিযোগে ২০১৮ ও ২০১৯ সালে এদের বিরুদ্ধে নয়টি মামলা করে দুদক। মামলাগুলো বিচারাধীন আছে। এই ১৪ ঠিকাদারকে চিহ্নিত করে গত বছরের ১২ ডিসেম্ব^র স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠিতে তালিকা পাঠায় দুদক।

দুদকের সুপারিশ অনুযায়ী কালো তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে- স্বাস্থ্য অধিদফতরের দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত ও আলোচিত আবজাল হোসেনের স্ত্রী রুবিনা খানমের ‘রহমান ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল’ ও ‘রুপা ফ্যাশন’।

প্রতিষ্ঠান দুটির বিরুদ্ধে মেডিকেল সরঞ্জাম ক্রয় সংক্রান্ত এক মামলায় ৫ কোটি ৯০ লাখ টাকা আত্মসাৎ এবং ৩১ কোটি ৫০ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের কথা বলা হয়েছে।

তাদের বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় করা এক মামলায় সাড়ে ৩৭ কোটি টাকা সরকারি তহবিল আত্মসাতের অভিযোগ করা হয়েছে।

পুরানা পল্টনের আবদুস সাত্তার সরকার ও মো. আহসান হাবীবের মালিকানাধীন মেসার্স মার্কেন্টাইল ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, তোপখানা রোডের জাহের উদ্দিন সরকারের মালিকানাধীন বেঙ্গল সায়েন্টিফিক অ্যান্ড সার্জিক্যাল ও দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার আসাদুর রহমানের মালিকানাধীন ইউনিভার্সেল ট্রেড কর্পোরেশনের বিরুদ্ধে দুদকের খুলনার সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের মামলায় সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৬ কোটি ৬ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করা হয়েছে।

জাহেরউদ্দিন সরকারের মালিকানাধীন বেঙ্গল সায়েন্টিফিক অ্যান্ড সার্জিক্যালের বিরুদ্ধে রংপুর মেডিকেল কলেজের সাড়ে চার কোটি টাকা ও চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের নামে যন্ত্রপাতি ক্রয়ের নামে ৯ কোটি ১৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করেছিল দুদক।

এছাড়া চট্টগ্রামে দুর্নীতির অভিযোগে মুন্সী ফররুখ হোসাইনের মেসার্স আহমেদ এন্টারপ্রাইজ এবং এএসএল ও প্রতিষ্ঠানটির এমডি আফতাব আহমেদকেও কালো তালিকাভুক্ত করতে বলেছিল দুদক।

ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কেনাকাটায় অনিয়মের মাধ্যমে ১০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ঢাকার মিরপুরের আবদুল্লাহ আল মামুনের মালিকানাধীন অনিক ট্রেডার্স ও মুন্সী ফররুখ হোসাইনের মেসার্স আহমেদ এন্টারপ্রাইজের বিরুদ্ধেও দুদকের মামলা রয়েছে।

এছাড়া বিনা টেন্ডারে সাড়ে নয় কোটি টাকার বেশি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে রংপুরের মনজুর আহমেদের মালিকানাধীন মেসার্স ম্যানিলা এন্টারপ্রাইজ ও মেসার্স এসকে ট্রেডার্স, মোসাদ্দেক হোসেনের মালিকানাধীন এমএইচ ফার্মা, জয়নাল আবেদীনের মালিকানাধীন মেসার্স অভি ড্রাগস, আলমগীর হোসেনের মালিকানাধীন মেসার্স আলবিরা ফার্মেসি ও মো. মিন্টুর মালিকানাধীন এসএম ট্রেডার্সকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়।

এছাড়া ঢাকার মোকছেদুল ইসলামের মালিকানাধীন বেয়ার এভিয়েশনের নামে ৭৫ লাখ টাকা ভ্যাট ফাঁকি এবং মিথ্যা ব্যয় দেখিয়ে ৮৮ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দিনাজপুরে একটি মামলা রয়েছে।

এদিকে ৯ জুন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে বলা হয়, সরকারি অর্থের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিতকরণসহ ক্রয় কার্যক্রমে স্বচ্ছতা আনয়ন এবং দুর্নীতি, প্রতারণা ও চক্রান্তমূলক কার্যক্রম প্রতিরোধে ১৪টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এবং তাদের স্বত্বাধিকারীদের কালো তালিকাভুক্ত করা প্রয়োজন বলে অভিমত দিয়েছে দুদক।