দেশের বিরুদ্ধে যারা ষড়যন্ত্র করছে তাদের বিষদাঁত ভেঙে দেয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আমরা বীরের জাতি। আত্মসমর্পণ নয় আত্মমর্যাদা নিয়ে চলবো। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী পরাজয় জেনেই স্বাধীনতার আগ মুহূর্তে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হত্যার পরিকল্পনা করে। তাতে সহযোগিতা করে এ দেশেরই বিশ্বাস ঘাতকরা। তিনি বলেন, ঘাতকেরা মনে করেছিল, বুদ্ধিজীবীদের হত্যার মধ্যদিয়ে বাঙালি জাতিকে পঙ্গু করে দেয়া যাবে। তারা সর্বোচ্চ ক্ষতি করেছিল বটে, কিন্তু সেই বুদ্ধিজীবীদের প্রতিটি রক্তকণা থেকে আজ লাখো বুদ্ধিজীবী তৈরি হয়েছে। খন্দকার মোশতাককে ইতিহাসের মীরজাফর আখ্যা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে সেও ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারেনি। আরেক ঘাতক জিয়াউর রহমান তাকে ক্ষমতাচ্যুত করে ক্ষমতার কেন্দ্রে চলে আসেন। বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর জিয়াউর রহমানই সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছিল। শেখ হাসিনা বলেন, জিয়াউর রহমান সত্যিকার মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না। জিয়াউর রহমানই যুদ্ধাপরাধীদের পুনর্বাসন করেছিলেন। রাজাকারকে প্রধানমন্ত্রী বানিয়েছিলেন। তিনি শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি করেছেন। বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়াকে যুদ্ধাপরাধীদের দোসর দাবি করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জিয়াউর রহমানের দেখানো পথেই যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাতে তিনি সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন। সম্প্রতি দুই যুদ্ধাপরাধীকে বাঁচাতে তিনি তড়িঘড়ি করে লন্ডন থেকে দেশে আসেন। কোনো লাভ হয়নি। তিনি বলেন, অপরাধীদের ফাঁসির আগে অনেক বিশ্বনেতার ফোন পেয়েছি। আমলে নেইনি। কারণ আমরা আমাদের নিজস্ব আদর্শ বাস্তবায়ন করতে চলেছি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন করতে হলে জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করতেই হবে। শেখ হাসিনা বলেন, খালেদা জিয়ার সঙ্গে রাজনীতি করা মুক্তিযোদ্ধাদের লজ্জা নেই। তারা মনে করিছিল মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি আর ক্ষমতায় আসবে না। এ কারণেই তারা উনার কাছে গিয়ে ধর্না দিয়েছিলেন। মিডিয়া ব্যক্তিদের সমালোচনা করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বেসরকারি টেলিভিশনের অনুমোদন দিয়েছি আমরাই। সেই টেলিভিশনে গিয়ে যুদ্ধাপরাধীর বিচার, রাজনীতি নিয়ে সমালোচনার ঝড় তোলা হচ্ছে। বাঙালি বেশি কথা বলার জাতি। সুযোগ পেলেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা সমালোচনা করতে থাকেন কোনো কারণ ছাড়াই। বিশ্বের যেকোনো দেশের মানুষের চেয়ে বাঙালিরা মোবাইল ফোনে বেশি কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোনো শক্তিই পথ রুদ্ধ করতে পারবে না। দেশে ফেরার পর থেকে বহুবার হামলা করা হয়েছে। গুলি, গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয়েছে। বেঁচে আছি। মৃত্যুকে আর ভয় করি না। হারাবার আর কিছু নেই। বাংলার মানুষের ভালোবাসা নিয়েই মরতে চাই। আত্মসমর্পন নয়, আত্মত্যাগের মধ্যদিয়েই এগিয়ে যেতে চাই। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনষ্টিটিউট মিলনায়তনে আজ সোমবার বিকেলে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ আয়োজিত এ সভায় দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ বক্তব্য দেন। আলোচনা সভায় গতকাল বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শ্রদ্ধা জানানোর তীব্র সমালোচনা করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, তার এ শ্রদ্ধা জানানো জাতির সঙ্গে তামাশা ছাড়া আর কিছু নয়। সভায় অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, সভাপতিম-লীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুর করিম সেলিম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এমএ আজিজ, সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. আলীম চৌধুরীর মেয়ে ডা. নুজহাত চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
সংবাদ শিরোনাম
ওদের বিষদাঁত ভেঙে দেয়া হবে : প্রধানমন্ত্রী
- Reporter Name
- আপডেট টাইম : ১২:৩৫:৩৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৫
- ৩০৬ বার
Tag :
জনপ্রিয় সংবাদ