দলীয় প্রতীকে প্রথমবারের মতো হতে যাওয়া পৌরসভা নির্বাচন আওয়ামী লীগের সামনে অগ্নি পরীক্ষা। মনোনয়ন প্রত্যাহারে বিদ্রোহী প্রার্থীদের কাছ থেকে আশাব্যঞ্জক সাড়া না পাওয়ায় কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ কিছুটা হলেও হতাশ। এছাড়াও ৫ জানুয়ারি ও ঢাকা-চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের বিতর্কিত নির্বাচনের কালিমা মুছে ফেলে জনপ্রিয়তা যাচাই করাই পৌর নির্বাচনের মূল লক্ষ্য ক্ষমতাসীনদের।
আওয়ামী লীগের দফতর সূত্রে জানা গেছে, এবার পৌর নির্বাচনে দলের পক্ষ থেকে ২৩৪টি পৌর আসনে একক মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। বাকি- দুটি পৌর আসনের নির্বাচন স্থগিত। তবে একক মনোনয়ন দেওয়ার কারণে দলের তৃণমূলের একাধিক মনোনয়ন প্রার্থী নাখোশ। তাদের দাবি, দলের জন্য আজীবন পরিশ্রম করেও তারা দলের পক্ষ থেকে সুবিচার পায় নি।
দলের বিভিন্ন সূত্র বলছে, প্রথম দিকে ২৩৪টি পৌর আসনের বিপরীতে ৭৬টিতে বিদ্রোহী প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দেয়। শীর্ষ নেতাদের চাপ ও সাংগঠনিক কার্যক্রমের কারণে তা নেমে এসেছে ১৪-১৫টিতে। আগামীকাল রোববার মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন এই সংখ্যা শূন্যে নেমে আসতে পারে।
সর্বশেষ ৯ ডিসেম্বর পৌর নির্বাচনে দলের কেন্দ্রীয় মনোনয়ন বোর্ডের সিদ্ধান্তের বাইরে মনোনয়ন জমাদানকারীদের হুঁশিয়ার করে দিয়েছে আওয়ামী লীগ। যারা পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে লড়াই করার জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদের প্রার্থীতা প্রত্যাহারের নির্দেশও দেয়া হয়েছে দলটির কেন্দ্র থেকে। আওয়ামী লীগ বলছে, প্রার্থীতা প্রত্যাহার করা না হলে দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে কঠোর শাস্তি প্রদান করা হবে।
পৌর নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফসহ কেন্দ্রীয় নেতারা। গতকাল শুক্রবার বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের হানিফ বলেন, “দলের বাইরে পৌর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে সর্বোচ্চ শাস্তি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে আওয়ামী লীগ। এমনকি দল থেকে তাকে (বিদ্রোহী প্রার্থী) স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হতে পারে।”
এদিকে, ৫ জানুয়ারি ও ঢাকা-চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে চলে আসা বিতর্ক ও সমালোচনা থেকে বেরিয়ে আসতে চাইছে আওয়ামী লীগ। এছাড়ও পৌর নির্বাচনের মাধ্যমে দেশি-বিদেশি মহলকে দেখিয়ে দিতে চায় আওয়ালী লীগের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়। তাছাড়া বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তাও কমেনি বরং বেড়েছে। তাই এ নির্বাচনকে আওয়ামী লীগ অ্যাচিভ টেস্ট হিসেবে নিয়েছে।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরুল্লাহ চৌধুরী বিডি টুয়েন্টিফোর লাইভ ডটকমকে বলেন, “গাছে কাঁঠাল গোফে তেল। দলের মনোনয়নের বাইরে নির্বাচন করে কেউ-ই লাভবান হতে পারবেন না। বিদ্রোহী প্রার্থীরা যতই তৃণমূল ও কেন্দ্রীয় নেতাদের মুখের দিকে চেয়ে থাকুক, মনোনয়ন প্রত্যাহার তাদের করতেই হবে।”
তিনি আরও বলেন, প্রথম দিকে ৮০ জনের মতো বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলো- এখন তা কমে ১৪-১৫ জনে চলে এসেছে। এখনও মনোনয়ন প্রত্যাহারের সময় আছে, আশা করছি- এ সমস্যার সমাধান হবে। তাছাড়া আওয়ামী লীগের অধীনে অতীতেও নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে এবারও এর ব্যতিক্রম হবে না।