ঢাকা ১২:১৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ২১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জামায়াতের প্রার্থী দেয়ার রহস্য খুঁজছে বিএনপি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:১৪:২৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ ডিসেম্বর ২০১৫
  • ২২৮ বার

সরকারের চাপে জামায়াতে ইসলামীর নেতারা পৌরসভা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন বলে সুনির্দিষ্ট তথ্য পেয়েছে বিএনপি। বিএনপির মেয়রপ্রার্থীর ভোট কাটতে সরকারদলীয়রা চাপ দিয়ে এই কাজ করেছে বলে মনে করছে বিএনপি।এমন একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে দৈনিক প্রথম আলো। ওই প্রতিবেদনে দেয়া তথ্য মতে, বিএনপির নীতি নির্ধারকেরা মনে করেন, এ কারণে বেশ কিছু পৌরসভায় জামায়াতের প্রার্থীকে বসিয়ে দেওয়া সম্ভব না-ও হতে পারে। গত বৃহস্পতিবার রাতে বিএনপির সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে জানানো হয়, ৩৫টি পৌরসভায় জামায়াতে ইসলামীর নেতারা মেয়র পদে প্রার্থী হয়েছেন। এই পৌরসভাগুলোতে বিএনপি প্রার্থীরা জয়ের সম্ভাবনা অনেক বেশি। কিন্তু জামায়াতের প্রার্থী থাকায় বিএনপির প্রার্থীর ভোটে প্রভাব পড়তে পারে। নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন না থাকায় জামায়াতে ইসলামী এবার প্রতীক নিয়ে দলীয় ভিত্তিতে পৌরসভা নির্বাচনে অংশ নিতে পারছে না। তবে দলের নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মেয়র পদে নির্বাচন করছেন। বিএনপির কাছে থাকা দুটি তালিকার একটিতে জামায়াতের মেয়র প্রার্থী ৩৫ ও অন্যটিতে ৪০ জন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। আগামী ১৩ ডিসেম্বরের মধ্যে জামায়াত নেতারা মনোনয়ন প্রত্যাহার না করলে ওই পৌরসভাগুলোতে বিএনপি ও জামায়াতের পৃথক প্রার্থী থাকবে। ফলে এগুলোতে সরকারদলীয় প্রার্থীর পাশাপাশি জামায়াতের সঙ্গেও বিএনপির প্রার্থীকে লড়তে হবে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি, সরকারদলীয় ব্যক্তিদের চাপে জামায়াতের অনেক নেতাকে প্রার্থী হতে হয়েছে। ৩৫টি পৌরসভায় জামায়াত প্রার্থী দিয়েছে। মূলত বিএনপি প্রার্থীকে চাপে ফেলতে ও ২০-দলীয় জোটকে নিজেদের সঙ্গে লড়াইয়ে ব্যস্ত রাখতে সরকার এটা করছে বলে তাঁরা মনে করছেন।’ তিনি বলেন, স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আরও দুদিন সময় আছে। যতটা সম্ভব সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করা হবে। বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটের প্রধান শরিক জামায়াতে ইসলামী। আগামী ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য ২৩৫টি পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপি একাই ২৩৩ পৌরসভায় প্রার্থী দিয়েছে। জোটের শরিক এলডিপি ও জাতীয় পার্টিকে (কাজী জাফর) একটি করে পৌরসভায় মেয়র পদে ছাড় দিয়েছে। তবে জামায়াতের ইসলামীর সঙ্গে এখনো কোনো সমঝোতা হয়নি। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কাছে জামায়াত যেসব পৌরসভায় প্রার্থী দিয়েছে তার একটি তালিকা রয়েছে। পৌরসভা নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন আগামী ১৩ ডিসেম্বর। তাই আজকালের মধ্যে জামায়াতের সঙ্গে সমঝোতা করার চেষ্টা চলছে বলে বিএনপির একাধিক সূত্র জানিয়েছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে দলটির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য বলেন, পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপি, জামায়াতের সঙ্গে সমঝোতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ জন্য স্থানীয় নেতাদের দায়িত্ব নিতে বলা হয়েছে। কেন্দ্রীয় পর্যায়ের নেতারাও জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। আজকের মধ্যে সমাধান না হলে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া নিজেই সমাধান করবেন বলে জানিয়েছেন। তবে সরকারের চাপে প্রার্থী হওয়া অনেক জামায়াত নেতার পক্ষে শেষ পর্যন্ত প্রার্থিতা প্রত্যাহার করা সম্ভব হবে কি না, এ ব্যাপারে বিএনপির সংশয় আছে। জানতে চাইলে বিএনপির নির্বাচন পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত এক নেতা বলেন, স্থায়ী কমিটিতে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হওয়ায় ভালো হয়েছে। তাঁরা আগেই বিষয়টি চেয়ারপারসনকে জানিয়েছেন। জামায়াতকে জোটের স্বার্থে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। ওই নেতা বলেন, আরও দুদিন সময় আছে। দেখা যাক, শেষ পর্যন্ত কী হয়।’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জামায়াতের প্রার্থী দেয়ার রহস্য খুঁজছে বিএনপি

আপডেট টাইম : ১০:১৪:২৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ ডিসেম্বর ২০১৫

সরকারের চাপে জামায়াতে ইসলামীর নেতারা পৌরসভা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন বলে সুনির্দিষ্ট তথ্য পেয়েছে বিএনপি। বিএনপির মেয়রপ্রার্থীর ভোট কাটতে সরকারদলীয়রা চাপ দিয়ে এই কাজ করেছে বলে মনে করছে বিএনপি।এমন একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে দৈনিক প্রথম আলো। ওই প্রতিবেদনে দেয়া তথ্য মতে, বিএনপির নীতি নির্ধারকেরা মনে করেন, এ কারণে বেশ কিছু পৌরসভায় জামায়াতের প্রার্থীকে বসিয়ে দেওয়া সম্ভব না-ও হতে পারে। গত বৃহস্পতিবার রাতে বিএনপির সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে জানানো হয়, ৩৫টি পৌরসভায় জামায়াতে ইসলামীর নেতারা মেয়র পদে প্রার্থী হয়েছেন। এই পৌরসভাগুলোতে বিএনপি প্রার্থীরা জয়ের সম্ভাবনা অনেক বেশি। কিন্তু জামায়াতের প্রার্থী থাকায় বিএনপির প্রার্থীর ভোটে প্রভাব পড়তে পারে। নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন না থাকায় জামায়াতে ইসলামী এবার প্রতীক নিয়ে দলীয় ভিত্তিতে পৌরসভা নির্বাচনে অংশ নিতে পারছে না। তবে দলের নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মেয়র পদে নির্বাচন করছেন। বিএনপির কাছে থাকা দুটি তালিকার একটিতে জামায়াতের মেয়র প্রার্থী ৩৫ ও অন্যটিতে ৪০ জন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। আগামী ১৩ ডিসেম্বরের মধ্যে জামায়াত নেতারা মনোনয়ন প্রত্যাহার না করলে ওই পৌরসভাগুলোতে বিএনপি ও জামায়াতের পৃথক প্রার্থী থাকবে। ফলে এগুলোতে সরকারদলীয় প্রার্থীর পাশাপাশি জামায়াতের সঙ্গেও বিএনপির প্রার্থীকে লড়তে হবে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি, সরকারদলীয় ব্যক্তিদের চাপে জামায়াতের অনেক নেতাকে প্রার্থী হতে হয়েছে। ৩৫টি পৌরসভায় জামায়াত প্রার্থী দিয়েছে। মূলত বিএনপি প্রার্থীকে চাপে ফেলতে ও ২০-দলীয় জোটকে নিজেদের সঙ্গে লড়াইয়ে ব্যস্ত রাখতে সরকার এটা করছে বলে তাঁরা মনে করছেন।’ তিনি বলেন, স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আরও দুদিন সময় আছে। যতটা সম্ভব সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করা হবে। বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটের প্রধান শরিক জামায়াতে ইসলামী। আগামী ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য ২৩৫টি পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপি একাই ২৩৩ পৌরসভায় প্রার্থী দিয়েছে। জোটের শরিক এলডিপি ও জাতীয় পার্টিকে (কাজী জাফর) একটি করে পৌরসভায় মেয়র পদে ছাড় দিয়েছে। তবে জামায়াতের ইসলামীর সঙ্গে এখনো কোনো সমঝোতা হয়নি। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কাছে জামায়াত যেসব পৌরসভায় প্রার্থী দিয়েছে তার একটি তালিকা রয়েছে। পৌরসভা নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন আগামী ১৩ ডিসেম্বর। তাই আজকালের মধ্যে জামায়াতের সঙ্গে সমঝোতা করার চেষ্টা চলছে বলে বিএনপির একাধিক সূত্র জানিয়েছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে দলটির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য বলেন, পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপি, জামায়াতের সঙ্গে সমঝোতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ জন্য স্থানীয় নেতাদের দায়িত্ব নিতে বলা হয়েছে। কেন্দ্রীয় পর্যায়ের নেতারাও জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। আজকের মধ্যে সমাধান না হলে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া নিজেই সমাধান করবেন বলে জানিয়েছেন। তবে সরকারের চাপে প্রার্থী হওয়া অনেক জামায়াত নেতার পক্ষে শেষ পর্যন্ত প্রার্থিতা প্রত্যাহার করা সম্ভব হবে কি না, এ ব্যাপারে বিএনপির সংশয় আছে। জানতে চাইলে বিএনপির নির্বাচন পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত এক নেতা বলেন, স্থায়ী কমিটিতে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হওয়ায় ভালো হয়েছে। তাঁরা আগেই বিষয়টি চেয়ারপারসনকে জানিয়েছেন। জামায়াতকে জোটের স্বার্থে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। ওই নেতা বলেন, আরও দুদিন সময় আছে। দেখা যাক, শেষ পর্যন্ত কী হয়।’