তাবলিগ জামাতের মুরুব্বিদের বয়ানের মধ্য দিয়ে বরিশালে প্রথমবারের মতো শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপি বিশ্ব ইজতেমার আঞ্চলিক পর্ব। বৃহস্পতিবার ফজর বাদ নগরীর নবগ্রাম রোড সংলগ্ন সরদার পাড়ায় আনুষ্ঠানিক বয়ানের মধ্যদিয়ে ইজতেমার কার্যক্রম শুরু হয়। আম বয়ানে বরিশাল নগরীর বিশিষ্ট আলেম মাওলানা হাবিবউল্লাহ সকল মানুষকে অশান্তির পথ ছেড়ে শান্তির পথে আসার আহ্বান জানান।
বয়ানে মুরুব্বিরা বলেন, শুধুমাত্র দল ভারী করে ইজতেমায় এলেই হবে না। সবার আগে ঈমানকে মজবুত করতে হবে। নবীজির (স.) দেখানো পথ অনুসরণ করে ইসলামের পথে চলতে হবে। তাহলেই আলাহর সান্নিধ্য অর্জন ও ইজতেমার লক্ষ্য অর্জিত হবে।
স্থানীয় মুরুব্বিদের পাশাপাশি পর্যায়ক্রমে কাকরাইল মসজিদের তাবলিগ জামায়াতের মুরুব্বি মাওলানা জোবায়ের হক, মাওলানা মোহাম্মদ হোসেন ও মাওলানা ওমর ফারুকসহ বিশিষ্ট আলেমগন বয়ান করেন।
এদিকে, মহান আল্লাহর দিদার লাভের আশায় ইতিমধ্যে ইজতেমা ময়দানে হাজির হয়েছেন হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মুসুল্লি। তারা মনোযোগ সহকারে অতিথি ইসলামী চিন্তাবিদদের বয়ান শুনছেন। এসব ইসলামী হুকুমাত পালন করার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন মুসুল্লিরা।
শনিবার সকাল ১১টার দিকে আখেরি মোনাজাতের মধ্যদিয়ে তিন দিনব্যাপি জেলা ইজতেমা সমাপ্ত হবে বলে জানিয়েছেন ইজতেমা মাঠের জিম্মাদার মো. হা’মীম।
আয়োজকরা জানিয়েছেন, ঢাকার টঙ্গী তুরাগ নদীত তীরে বিশ্ব ইজতেমায় মুসুল্লিদের চাপ কমাতে এবার ঢাকার বাইরে ১৫ জেলায় বিশ্ব ইজতেমার আঞ্চলিক পর্ব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। যার মধ্যে অন্যতম বরিশাল জেলা ইজতেমা। বরিশাল জেলা ইজতেমায় ইন্দোনেশিয়া, ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকাসহ বিভিন্ন দেশের ৪৫ জন মেহমান এসেছেন।
ইজতেমা সফল করতে বরিশালের জেলা ও পুলিশ প্রশাসন, সিটি কর্পোরেশনসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সার্বিক সহযোগিতা করছে।
ইজতেমা মাঠের সার্বিক তত্ত্বাবধায়নের দায়িত্ব থাকা নগরীর ১৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর গাজী আকতারুজ্জামান হিরু জানান, ইজতেমা মাঠে প্রবেশের জন্য পাঁচটি পথ নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। মাঠে এলাকাভেদে বসার স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। খাবার পানি ও অজু করার জন্য অস্থায়ী পানির লাইন স্থাপন করা হয়েছে। চারটি স্থানে প্রায় পাঁচশ’ টয়লেট নির্মাণ এবং ১২টি শ্যালো টিউবয়েল স্থাপন করা হয়েছে। মশার উপদ্রব থেকে রক্ষার জন্য ইজতেমা এলাকায় স্প্রে করা হয়েছে। এছাড়া বিপুল সংখ্যক পরিচ্ছন্নতাকর্মী এবং একটি মেডিকেল টিম ইজতেমা মাঠে রাখা হয়েছে।
বরিশাল জেলা প্রশাসক ড. গাজী সাইফুজ্জামান জানান, ইজতেমা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে দফায় দফায় সভা হয়েছে। ইজতেমার নিরাপত্তায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র সহকারী কমিশনার আবু সাঈদ জানান, ইজতেমার নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় পাঁচশ’ সদস্য বিভিন্ন স্তরে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছে। সার্বিক তদারকির জন্য ইজতেমা ময়দানে একটি কন্ট্রোল রুম এবং ওয়াচ টাওয়ার স্থাপন করা হয়েছে।