ঢাকা ০৯:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নদী দখল-দূষণ: স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য ফিরিয়ে আনতে হবে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:২০:০২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২০
  • ২১১ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ দখল-দূষণে দেশের বেশিরভাগ নদী স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য হারিয়েছে অনেক আগেই। বর্তমানে নদী দখলের মাত্রা এতটাই ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে যে, অনেক নদী মরা খালে পরিণত হয়েছে।

গতকালের যুগান্তরে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বরিশাল বিভাগের ৬ জেলার বিভিন্ন নদীর তীরের বিস্তীর্ণ এলাকা কয়েক হাজার ব্যক্তির দখলে চলে গেছে। বস্তুত সারা দেশের নদী ও খালগুলোর তীরের বিস্তীর্ণ এলাকাই বিভিন্ন ব্যক্তির দখলে চলে গেছে।

নদী দখলদারদের বিরুদ্ধে সারা দেশে বিভিন্ন সময় উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হলেও লক্ষ করা গেছে, উচ্ছেদ অভিযানের পর আবারও শুরু হয় দখলের প্রতিযোগিতা। কোনো কোনো ক্ষেত্রে দখলদাররা নদীতীরের সীমানা পিলার পর্যন্ত উপড়ে ফেলে দেয়।

কোনো কোনো স্থানীয় প্রভাবশালী দখলদার ভুয়া দলিল ও কাগজপত্র তৈরি করে মালিকানা স্বত্ব প্রতিষ্ঠার চেষ্টাও চালিয়ে যাচ্ছে। অবশ্য যেভাবেই দলিল করা হোক না কেন, কর্তৃপক্ষ যথাযথ পদক্ষেপ নিলে নদী রক্ষা আইন অনুযায়ী তীরের দখলকৃত জায়গা যে কোনো সময় উদ্ধার করা সম্ভব।

সারা দেশের নদীগুলোর ভয়াবহ দূষণের বিষয়টিও বহুল আলোচিত। দেশে বিভিন্ন নদীর পানি কতটা দূষণের শিকার, রাজধানীর চারপাশের নদীগুলোর দিকে তাকালেই তা স্পষ্ট হয়। শিল্প-কারখানার বর্জ্য যাতে চারপাশে ছড়িয়ে পড়তে না পারে তার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া জরুরি হলেও এসব ক্ষেত্রে নানা রকম অনিয়মের খবর পাওয়া যায়।

অভিযোগ রয়েছে, পরিশোধন যন্ত্র থাকলেও কোনো কোনো কারখানায় বর্জ্য পরিশোধন না করে সরাসরি তা ফেলে দেয়া হয়। এতে বিভিন্ন ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ আমাদের খাদ্যচক্রে প্রবেশ করার সুযোগ তৈরি হয়। কোনো কোনো রাসায়নিক পদার্থ মানবস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।

সেসব রাসায়নিক পদার্থের সামান্য অংশও যাতে আমাদের খাদ্যচক্রে প্রবেশ করতে না পারে তা নিশ্চিত করতে হবে। বর্ষার কয়েক মাস ছাড়া সারা বছরই এখন দেশের বিভিন্ন নদীতে নাব্যতা সংকট লক্ষ করা যায়। এ অবস্থায় সারা দেশের নদী দূষণ রোধে বাড়তি কিছু পদক্ষেপও নিতে হবে।

ট্যানারি শিল্প রাজধানী থেকে সাভারে স্থানান্তরের পর ট্যানারি থেকে নির্গত বর্জ্যে ধলেশ্বরীর পানিতে দূষণ ছড়িয়ে পড়ছে। চামড়া শিল্পনগরীর প্রধান বর্জ্য পরিশোধন কেন্দ্র চালু থাকার পরও ধলেশ্বরীতে দূষণ ছড়িয়ে পড়ছে। এতে বোঝা যাচ্ছে, এ ক্ষেত্রেও নানা রকম অনিয়ম বিদ্যমান।

সারা দেশের শিল্প-কারখানায় এসব ক্ষেত্রে বিদ্যমান অনিয়মগুলো খুঁজে বের করতে দেরি করা হলে দেশের বিভিন্ন নদীর বিস্তীর্ণ এলাকায় দূষণ ছড়িয়ে পড়বে। দেশের সব নদীর স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য ফিরিয়ে আনতে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

নদী দখল-দূষণ: স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য ফিরিয়ে আনতে হবে

আপডেট টাইম : ১২:২০:০২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ দখল-দূষণে দেশের বেশিরভাগ নদী স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য হারিয়েছে অনেক আগেই। বর্তমানে নদী দখলের মাত্রা এতটাই ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে যে, অনেক নদী মরা খালে পরিণত হয়েছে।

গতকালের যুগান্তরে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বরিশাল বিভাগের ৬ জেলার বিভিন্ন নদীর তীরের বিস্তীর্ণ এলাকা কয়েক হাজার ব্যক্তির দখলে চলে গেছে। বস্তুত সারা দেশের নদী ও খালগুলোর তীরের বিস্তীর্ণ এলাকাই বিভিন্ন ব্যক্তির দখলে চলে গেছে।

নদী দখলদারদের বিরুদ্ধে সারা দেশে বিভিন্ন সময় উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হলেও লক্ষ করা গেছে, উচ্ছেদ অভিযানের পর আবারও শুরু হয় দখলের প্রতিযোগিতা। কোনো কোনো ক্ষেত্রে দখলদাররা নদীতীরের সীমানা পিলার পর্যন্ত উপড়ে ফেলে দেয়।

কোনো কোনো স্থানীয় প্রভাবশালী দখলদার ভুয়া দলিল ও কাগজপত্র তৈরি করে মালিকানা স্বত্ব প্রতিষ্ঠার চেষ্টাও চালিয়ে যাচ্ছে। অবশ্য যেভাবেই দলিল করা হোক না কেন, কর্তৃপক্ষ যথাযথ পদক্ষেপ নিলে নদী রক্ষা আইন অনুযায়ী তীরের দখলকৃত জায়গা যে কোনো সময় উদ্ধার করা সম্ভব।

সারা দেশের নদীগুলোর ভয়াবহ দূষণের বিষয়টিও বহুল আলোচিত। দেশে বিভিন্ন নদীর পানি কতটা দূষণের শিকার, রাজধানীর চারপাশের নদীগুলোর দিকে তাকালেই তা স্পষ্ট হয়। শিল্প-কারখানার বর্জ্য যাতে চারপাশে ছড়িয়ে পড়তে না পারে তার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া জরুরি হলেও এসব ক্ষেত্রে নানা রকম অনিয়মের খবর পাওয়া যায়।

অভিযোগ রয়েছে, পরিশোধন যন্ত্র থাকলেও কোনো কোনো কারখানায় বর্জ্য পরিশোধন না করে সরাসরি তা ফেলে দেয়া হয়। এতে বিভিন্ন ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ আমাদের খাদ্যচক্রে প্রবেশ করার সুযোগ তৈরি হয়। কোনো কোনো রাসায়নিক পদার্থ মানবস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।

সেসব রাসায়নিক পদার্থের সামান্য অংশও যাতে আমাদের খাদ্যচক্রে প্রবেশ করতে না পারে তা নিশ্চিত করতে হবে। বর্ষার কয়েক মাস ছাড়া সারা বছরই এখন দেশের বিভিন্ন নদীতে নাব্যতা সংকট লক্ষ করা যায়। এ অবস্থায় সারা দেশের নদী দূষণ রোধে বাড়তি কিছু পদক্ষেপও নিতে হবে।

ট্যানারি শিল্প রাজধানী থেকে সাভারে স্থানান্তরের পর ট্যানারি থেকে নির্গত বর্জ্যে ধলেশ্বরীর পানিতে দূষণ ছড়িয়ে পড়ছে। চামড়া শিল্পনগরীর প্রধান বর্জ্য পরিশোধন কেন্দ্র চালু থাকার পরও ধলেশ্বরীতে দূষণ ছড়িয়ে পড়ছে। এতে বোঝা যাচ্ছে, এ ক্ষেত্রেও নানা রকম অনিয়ম বিদ্যমান।

সারা দেশের শিল্প-কারখানায় এসব ক্ষেত্রে বিদ্যমান অনিয়মগুলো খুঁজে বের করতে দেরি করা হলে দেশের বিভিন্ন নদীর বিস্তীর্ণ এলাকায় দূষণ ছড়িয়ে পড়বে। দেশের সব নদীর স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য ফিরিয়ে আনতে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।