অনেক আলোচনা-সমালোচনার মুখেই দলীয় প্রতীকে স্থানীয় নির্বাচন করছে আওয়ামী লীগ সরকার। ২০৪১ সালের যে স্বপ্ন দেখছে সরকার, হয়তো সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন অথবা মধ্যেবর্তী নির্বাচনের লক্ষ্যে নিজেদের জনপ্রিয়তা মাপার জন্যেই দলীয় প্রতীকে নির্বাচনরে ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এই নির্বাচন সরকারের জন্য অগ্নিপরীক্ষা।কেননা বিএনপিসহ দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও অধিকাংশ সাধরণ মানুষেরই দাবি দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না। ইতোমধ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে গণমানুষের সেই ধারনাই সঠিক হয়েছে। তাই এ নির্বাচনটা আওয়ামী লীগের কাছে একটি বড় চ্যালেঞ্জ। তাছাড়া বাংলাদেশের ইতিহাসে এটাই প্রথম দলীয় প্রতীকে স্থানীয় নির্বাচন। এজন্যে সরকারের উচিত এই নির্বাচনকে বিতর্কিত হতে না দেয়া।
তবে বর্তমান সরকার যে কারণেই এই প্রক্রিয়ায় নির্বাচন করুক না কেন? এই নির্বাচনে বিএনপিই লাভবান।কারণ সরকারের কোনঠাসার কারণে বিএনপি মাঠে বড় ধরনের কোন রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করতে পারছে না। তবে আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপি রাজনৈতিক ভাবে কর্মসূচি পালন করার বড় একটি সুযোগ পাচ্ছে। কেননা নির্বাচন কমিশন প্রার্থীদের হয়রানি না করার জন্য পুলিশ বাহীনিকে নির্দেশ দিয়েছেন।
তাছাড়া বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াও বিভিন্ন উপজেলায় গিয়ে প্রার্থীদের জন্য গণসংযোগ করতে পারবেন। পাশাপাশি জিমিয়ে পড়া দলকে উজ্জীবিত করার সুযোগ পাচ্ছে বিএনপি। এছাড়াও আগামী দিনে সরকার পতনের আন্দোলনের জন্য তৃণমূল নেতাদের দিক নির্দেশনা দেয়ার একটি বড় সুযোগ পাচ্ছে তারা।
এদিকে সরকার সুষ্ঠু নির্বাচন করতে ব্যর্থ হলে সেটাও বিএনপির জন্য লাভজনক। কেননা বিএনপি বারবার দাবি করছে দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। যদি সরকার সিটি নির্বাচনের মতো এবারও ব্যর্থতার পরিচয় দেয় তাহলে বিএনপি আরও একবার প্রমাণ করার সুযোগ পাবে নিজেদের দাবির পক্ষে। এতে দেশ-বিদেশে বিএনপির পক্ষে আরও সমর্থন বাড়বে। আর নির্বাচন সুষ্ঠু হলে বিভিন্ন জরিপ, চায়ের দোকান, রাস্তা-ঘাটে শোনা সাধারণ মানুষের আলাপচারিতা ও একজন সাংবাদিক হিসেবে এতটুকু বলা যায় বিএনপির জয়লাভ অসম্ভব কিছু নয়। আর বিএনপি জয়লাভ করলে সেটাও আগামী দিনের আন্দোলনের জন্য বেশ কাজে দিবে। তাই বলা যায় এই নির্বাচনে উভয় দিকেই বিএনপি লাভবান।