ঢাকা ০৫:৫৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা: উন্নত দেশের কাতারে প্রবেশের পদক্ষেপ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৯:৫৩:১১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২০
  • ১৬৬ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ যে কোনো কিছু পরিকল্পনা ছাড়া ভালোভাবে সম্পন্ন করা যায় না। দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা গেলে সেটি বাস্তবায়ন সম্ভব। এর উদাহরণ খোদ আমাদের সামনেই রয়েছে।

২০০৯ সালে যেখানে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ছিল পাঁচ শতাংশের ঘরে, সেখানে ২০১০ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত প্রথম প্রেক্ষিত পরিকল্পনা বা রূপকল্প-১ তৈরি ও সে অনুযায়ী পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কারণে বর্তমানে আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৮ শতাংশের ঘরে রয়েছে।

আর এর সফলতাকে কেন্দ্র করে এবার ২০২০-২০৪১ দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনার খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। ২৫ ফেব্রুয়ারি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের বৈঠকে এটি পাস হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। খসড়া রূপকল্পে উন্নত দেশ হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সব ক্ষেত্রকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

৪টি পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার মাধ্যমে এটি বাস্তবায়িত হলে ২০৪১ সালে বাংলাদেশ উন্নত দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে বলে আশা করা যায়।

জানা যায়, দ্বিতীয় রূপকল্পের খসড়ায় সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি) বৈষম্য হ্রাস, ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের ওপর সবচেয়ে বেশি জোর দিয়েছে।

এ ছাড়া এতে দারিদ্র্য নিরসন, কর্মসংস্থান তৈরি, গ্রাম ও শহরের মধ্যে পার্থক্য কমানোর মতো গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলোর পাশাপাশি রফতানি বহুমুখীকরণ, বিনিময় হার ব্যবস্থাপনাসহ ১৫টি চ্যালেঞ্জ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এতে আছে পুষ্টি ও খাদ্য নিরাপত্তা, টেকসই বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, জলবায়ু পরিবর্তন ব্যবস্থাপনার মতো জরুরি অন্যান্য বিষয়। প্রথম প্রেক্ষিত পরিকল্পনা তথা রূপকল্প ২০১০-২০২১-এর সুফল আমরা হাতেনাতে পাচ্ছি।

এরই মধ্যে বাংলাদেশ নিুআয়ের দেশের তালিকা থেকে বের হয়ে নিুমধ্যম আয়ের দেশে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। ২০২৪ সালে এটি চূড়ান্তভাবে অর্জিত হওয়ার পর ২০৩১ সালে মধ্যম আয়ের ও ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ হওয়ার লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করার জন্য দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা তথা রূপকল্প-২০৪১ তৈরি করা হচ্ছে।

প্রবৃদ্ধির বর্তমান ধারা অব্যাহত রাখা গেলে এবং পরিকল্পনামাফিক সবকিছু ঠিকঠাক বাস্তবায়ন করা সম্ভব হলে ২০৪১ সালে বাংলাদেশ উন্নত দেশে উন্নীত হবে বলে আশা করাই যায়।

২৫ ফেব্রুয়ারি অনুমোদন পাওয়ার পর অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার মাধ্যমে বাস্তবায়ন শুরু হবে দ্বিতীয় রূপকল্পের। এতে গড় প্রবৃদ্ধি ৯ দশমিক ৯ শতাংশ, চরম দারিদ্র্য শূন্যের কোঠায় ও মাঝারি দারিদ্র্য পাঁচ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনার লক্ষ্য স্থির করা হয়েছে।

এ ছাড়া সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গ্রাম ও শহরের মধ্য বৈষম্য কমানো হবে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে দেশের ৮০ শতাংশ মানুষের শহরে বাস করার পরিবেশ নিশ্চিত করা হবে। এতে বর্তমানের মতো বেশিরভাগ মানুষকে বড় বড় শহরে দৌড়ানোর মতো সমস্যা থাকবে না।

গ্রাম-শহরের বৈষম্য কমিয়ে আনার মাধ্যমে উন্নত জীবন ও উচ্চ আয়ের বিষয়টি নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। এ জন্য নতুন পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ শুরু করা হচ্ছে। কাঙ্ক্ষিত উন্নত দেশ নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে এসব বিষয় অবদান রাখবে।

যে কোনো জাতির জীবনে উন্নয়নের টার্নিং পয়েন্ট থাকে। আমাদের চলমান অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বিবেচনায় নিয়ে এরই মধ্যে আমাদের উদীয়মান অর্থনীতি, ইমার্জিং এশিয়ান টাইগার ইত্যাদি উপাধি দেয়া হচ্ছে বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে।

সরকারের সঠিক পরিকল্পনা, রূপকল্প-২ তথা দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা বাস্তবে প্রতিফলিত হবে এবং ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত বাংলাদেশ ঠিক সময়ে আত্মপ্রকাশ করবে বলে আমরা আশাবাদী।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা: উন্নত দেশের কাতারে প্রবেশের পদক্ষেপ

আপডেট টাইম : ০৯:৫৩:১১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ যে কোনো কিছু পরিকল্পনা ছাড়া ভালোভাবে সম্পন্ন করা যায় না। দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা গেলে সেটি বাস্তবায়ন সম্ভব। এর উদাহরণ খোদ আমাদের সামনেই রয়েছে।

২০০৯ সালে যেখানে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ছিল পাঁচ শতাংশের ঘরে, সেখানে ২০১০ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত প্রথম প্রেক্ষিত পরিকল্পনা বা রূপকল্প-১ তৈরি ও সে অনুযায়ী পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কারণে বর্তমানে আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৮ শতাংশের ঘরে রয়েছে।

আর এর সফলতাকে কেন্দ্র করে এবার ২০২০-২০৪১ দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনার খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। ২৫ ফেব্রুয়ারি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের বৈঠকে এটি পাস হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। খসড়া রূপকল্পে উন্নত দেশ হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সব ক্ষেত্রকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

৪টি পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার মাধ্যমে এটি বাস্তবায়িত হলে ২০৪১ সালে বাংলাদেশ উন্নত দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে বলে আশা করা যায়।

জানা যায়, দ্বিতীয় রূপকল্পের খসড়ায় সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি) বৈষম্য হ্রাস, ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের ওপর সবচেয়ে বেশি জোর দিয়েছে।

এ ছাড়া এতে দারিদ্র্য নিরসন, কর্মসংস্থান তৈরি, গ্রাম ও শহরের মধ্যে পার্থক্য কমানোর মতো গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলোর পাশাপাশি রফতানি বহুমুখীকরণ, বিনিময় হার ব্যবস্থাপনাসহ ১৫টি চ্যালেঞ্জ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এতে আছে পুষ্টি ও খাদ্য নিরাপত্তা, টেকসই বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, জলবায়ু পরিবর্তন ব্যবস্থাপনার মতো জরুরি অন্যান্য বিষয়। প্রথম প্রেক্ষিত পরিকল্পনা তথা রূপকল্প ২০১০-২০২১-এর সুফল আমরা হাতেনাতে পাচ্ছি।

এরই মধ্যে বাংলাদেশ নিুআয়ের দেশের তালিকা থেকে বের হয়ে নিুমধ্যম আয়ের দেশে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। ২০২৪ সালে এটি চূড়ান্তভাবে অর্জিত হওয়ার পর ২০৩১ সালে মধ্যম আয়ের ও ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ হওয়ার লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করার জন্য দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা তথা রূপকল্প-২০৪১ তৈরি করা হচ্ছে।

প্রবৃদ্ধির বর্তমান ধারা অব্যাহত রাখা গেলে এবং পরিকল্পনামাফিক সবকিছু ঠিকঠাক বাস্তবায়ন করা সম্ভব হলে ২০৪১ সালে বাংলাদেশ উন্নত দেশে উন্নীত হবে বলে আশা করাই যায়।

২৫ ফেব্রুয়ারি অনুমোদন পাওয়ার পর অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার মাধ্যমে বাস্তবায়ন শুরু হবে দ্বিতীয় রূপকল্পের। এতে গড় প্রবৃদ্ধি ৯ দশমিক ৯ শতাংশ, চরম দারিদ্র্য শূন্যের কোঠায় ও মাঝারি দারিদ্র্য পাঁচ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনার লক্ষ্য স্থির করা হয়েছে।

এ ছাড়া সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গ্রাম ও শহরের মধ্য বৈষম্য কমানো হবে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে দেশের ৮০ শতাংশ মানুষের শহরে বাস করার পরিবেশ নিশ্চিত করা হবে। এতে বর্তমানের মতো বেশিরভাগ মানুষকে বড় বড় শহরে দৌড়ানোর মতো সমস্যা থাকবে না।

গ্রাম-শহরের বৈষম্য কমিয়ে আনার মাধ্যমে উন্নত জীবন ও উচ্চ আয়ের বিষয়টি নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। এ জন্য নতুন পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ শুরু করা হচ্ছে। কাঙ্ক্ষিত উন্নত দেশ নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে এসব বিষয় অবদান রাখবে।

যে কোনো জাতির জীবনে উন্নয়নের টার্নিং পয়েন্ট থাকে। আমাদের চলমান অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বিবেচনায় নিয়ে এরই মধ্যে আমাদের উদীয়মান অর্থনীতি, ইমার্জিং এশিয়ান টাইগার ইত্যাদি উপাধি দেয়া হচ্ছে বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে।

সরকারের সঠিক পরিকল্পনা, রূপকল্প-২ তথা দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা বাস্তবে প্রতিফলিত হবে এবং ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত বাংলাদেশ ঠিক সময়ে আত্মপ্রকাশ করবে বলে আমরা আশাবাদী।