ঢাকা ০৭:৩৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পাঁচ রূপরেখা তাপসের ইশতেহারে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৮:২৪:০০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২০
  • ১৮৩ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ঐতিহ্যের ঢাকা, সুন্দর ঢাকা, সচল ঢাকা, সুশাসিত ঢাকা ও উন্নত ঢাকা-এমন পাঁচটি রূপরেখা দিয়ে নিজের নির্বাচনি ইশতেহার ঘোষণা করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে (ডিএসসিসি) আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। বুধবার সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে শেখ ফজলুল হক মনির ছোটো ছেলে তাপস নির্বাচনি ইশতেহার ঘোষণা করেন। গৃহ কর না বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচিত হয়ে ঢাকাকে পুনরুজ্জীবিত করব। দায়িত্ব গ্রহণের ৯০ দিনের মধ্যেই মৌলিক সকল নাগরিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করব। ডিএসসিসি হবে বাংলাদেশে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রথম দুর্নীতিমুক্ত সংস্থা।

এদিকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলামের সমাবেশে দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে।

সপ্তাহে একদিন নগরবাসী মেয়রের সাথে আলোচনার সুযোগ পাবেন

ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস নির্বাচনি ইশতেহারে ৫টি রূপরেখার বিস্তারিত তুলে ধরেন। এই রূপরেখা অনুসারেই ৩০ বছরের মহাপরিকল্পনা তৈরি করে বিভিন্ন মেয়াদে তা বাস্তবায়ন করা হবে। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কোনো কর না বাড়িয়ে দুই বছরের মধ্যে ডিএসসিসি স্বয়ংসম্পূর্ণ করা হবে। সহজে ও দ্রুত নাগরিক সেবা দিতে ‘ওয়ান স্টপ সার্ভিস ডেস্ক’ স্থাপনের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, সপ্তাহে একদিন নগরবাসী মেয়রের সাথে আলোচনার সুযোগ পাবেন।

ঐতিহ্যের ঢাকা

চারশ বছরের পুরনো এ মহানগরের ইতিহাস-ঐতিহ্য, প্রত্নতাত্ত্বিক গুরুত্ব ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য তুলে ধরে তাপস বলেন, মহাপরিকল্পনা ও সুব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ঐতিহ্য পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ করে ঢাকাকে তার স্বকীয় গৌরবে সাজিয়ে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরব। তিনি বলেন, ঢাকার ঐতিহ্য সংরক্ষণে সমন্বিত উদ্যোগে যাদুঘর ও আর্ট গ্যালারি নির্মাণ করা হবে। পরিত্যক্ত কেন্দ্রীয় কারাগার এলাকাকে ‘ঐতিহ্য প্রাঙ্গণ’ হিসেবে গড়ে তোলা হবে।

সুন্দর ঢাকা

বুড়িগঙ্গা ও শীতলক্ষ্যা দুই নদীর অববাহিকায় পত্তন হওয়া ‘বিরল শহর’ ঢাকার সৌন্দর্যবর্ধনের পরিকল্পনা তুলে ধরে তাপস বলেন, র্দীঘমেয়াদি পরিকল্পনায় বুড়িগঙ্গা ও শীতলক্ষ্যার পাড় ঘিরে বনায়ন ও বিনোদন কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। বায়ু ও শব্দ দূষণ রোধ ও চিত্তবিনোদনের জন্য প্রতিটি ওয়ার্ডে খেলার মাঠ, শরীর চর্চাকেন্দ্র এবং নারী-শিশু ও প্রবীণদের জন্যে হাঁটার উন্মুক্ত স্থান, আধুনিক মানের কমিউনিটি সেন্টারের ব্যবস্থা করা হবে।’ তিনি বলেন, নগরীতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক উদ্যান নির্মাণ, বাড়িতে ছাদবাগানে উত্সাহ দান ও পরিবেশবান্ধব স্থাপনা বাড়ানো, সাধারণ ও ভ্রাম্যমাণ পাঠাগারের ব্যবস্থার ও বস্তিবাসীদের সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী কর্মসূচির আওতায় আনার উদ্যোগ নেওয়া হবে। জলাধার সংরক্ষণে খালগুলো থেকে অবৈধ দখল উচ্ছেদ ও খনন, প্রয়োজনীয়সংখ্যক নর্দমা নির্মাণ, জলাবদ্ধতা নিরসন ও সড়কের উন্মুক্ত আবর্জনার স্তূপ প্রতিদিন অপসারণের প্রতিশ্রুতির কথাও রয়েছে।

সচল ঢাকা

যানজটের কারণে রাস্তায় চলাচল দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে উল্লেখ করে তাপস বলেন, সকালে বাসা থেকে বেরিয়ে যথাসময়ে গন্তব্যে পৌঁছানো ও ফিরে আসতে নিরন্তর সংগ্রাম করতে হয়। বিশেষ করে কর্মজীবী নারীদের বিড়ম্বনা অপরিসীম। তাই গণপরিবহনের চলাচল নিয়ন্ত্রণ ও সুব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কিছু রাস্তায় দ্রুত গতির যানবাহন, কিছু রাস্তায় ধীর গতির যানবাহন, আবার কিছু রাস্তায় শুধু মানুষের হাঁটার ব্যবস্থা করব।

সুশাসিত ঢাকা

সুশাসিত ঢাকা গড়ার পরিকল্পনা তুলে ধরে তাপস বলেন, এলাকাভিত্তিক সুশাসন প্রতিষ্ঠায় পঞ্চায়েত ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি মাদক নির্মূল, জুয়া, কিশোর অপরাধসহ নৈতিক ও সামাজিক অবক্ষয়জনিত বিভিন্ন অপরাধ রোধ সংশোধন কেন্দ্র নির্মাণ করব। বছরের ৩৬৫ দিন, সপ্তাহের ৭ দিন, ২৪ ঘণ্টা নাগরিক সেবা প্রদানের জন্য খোলা থাকবে। হতদরিদ্রদের শিক্ষার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা; অটিস্টিক ও প্রতিবন্ধী শিশু-কিশোরদের শিক্ষা, বিনোদন ও চিকিত্সা সেবায় পদক্ষেপ নেওয়া হবে এবং স্থাপন করা হবে ডে-কেয়ার সেন্টার।

উন্নত ঢাকা

আওয়ামী লীগ সরকার ঘোষিত ‘রূপকল্প ২০৪১’ এর আলোকে উন্নত ঢাকা গড়ে তোলার পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে তাপস বলেন, দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে ৩০ বছর মেয়াদি মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করে তার আওতায় পাঁচ বছর মেয়াদি নানা প্রকল্প হাতে নিয়ে ইমারত নির্মাণ, ভূমি ব্যবস্থাপনা, ভূমি অধিগ্রহণ ও নগরীর উন্নতিসাধন করা হবে। তিনি বলেন, ঢাকা দক্ষিণে যুক্ত নতুন ১৮টি ওয়ার্ডে ভালোভাবে প্রত্যেকটি সড়ক ও নর্দমার উন্নয়ন করা হবে, যাতে অন্তত ১০ বছর স্থায়িত্ব থাকে। বাণিজ্য লাইসেন্স, জন্ম নিবন্ধনপত্র, প্রত্যয়নপত্র, গৃহকর, পৌরকর, অন্যান্য করসমূহ তথ্য প্রযুক্তিগত সেবার আওতায় আনা হবে। নাগরিক সেবায় ২৪ ঘণ্টা হেল্প লাইন, তথ্যসমৃদ্ধ নগর অ্যাপ, ই-লাইব্রেরি, নগর ভবনে নিয়ন্ত্রণকক্ষ রেখে বিভিন্ন স্থানে সিসি ক্যামেরা স্থাপন ও ফ্রি ওয়াইফাই সেবা দেওয়ার কথাও জানান তাপস। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যে কোনো সমালোচনা ইতিবাচক হিসেবে নেব। গণমাধ্যমের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করব।

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু এমপি, মোজাফ্ফর হোসেন পল্টু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, আফজাল হোসেন, ত্রাণ ও দুর্যোগ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক আব্দুস সবুর, উপপ্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, কেন্দ্রীয় সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, কামরুল ইসলাম এমপি, রিয়াজুল কবির কাউসার, গোলাম রাব্বানী চিনু, আনোয়ার হোসেন, পারভীন জামান কল্পনা, সাহাবউদ্দিন ফরাজী, ঢাকা দক্ষিণের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফি, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ প্রমুখ এসময় তার সঙ্গে ছিলেন।

আতিকের প্রচার সভা পণ্ড হলো যেভাবে

ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আতিকুল ইসলামের উপস্থিতিতেই সংঘর্ষে জড়িয়েছেন দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকরা। বুধবার বলা ১২টার দিকে গুলশানের শহিদ ফজলে রাব্বি পার্কের ভেতরে আতিকের নির্বাচনী প্রচারসভার সময় ঢাকা উত্তরের ২০ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী মো. নাসির ও দলটির বিদ্রোহী প্রার্থী মো. জাহিদুর রহমানের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে। এ সময় সমাবেশস্থলের চেয়ার ভাঙচুর হয়। কয়েকজনকে বেদম লাঠিপেটা করতেও দেখা যায়। মারামারির মধ্যে পণ্ড হয়ে যায় মেয়র প্রার্থী আতিকের প্রচারসভা।

ঐ সময় গাছের নিচে তৈরি মঞ্চে কথা বলছিলেন মেয়র পদপ্রার্থী আতিকুল ইসলাম। মঞ্চে তার ভাই মাইনুল ইসলাম, তিন বোন আমেনা, হালিমা, রহিমা, আতিকুলের স্ত্রী শায়লা সাগুফতা, মেয়ে বুশরা আফরীন, বোনের স্বামী ও সন্তানরা উপস্থিত ছিলেন। বক্তব্য শেষ হলে কর্মীরা আতিকুলসহ তার পরিবারের সদস্যদের ঘিরে ধরে পার্ক থেকে বের করে নিয়ে যান। পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার পর পার্কের পশ্চিম কোণে আতিকুল ইসলামসহ মো. নাসিরের কর্মী-সমর্থকেরা পার্ক থেকে বের হয়ে গণসংযোগে যান।

মহাখালী দক্ষিণপাড়া সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে সামনে গণসংযোগকালে আতিকুল ইসলাম সাংবদিকের প্রশ্নের জবাবে বলেন, পার্কের ভেতর কাউন্সিলরের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাটি অনাকাঙ্ক্ষিত। বিষয়টি তিনি দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে জানিয়েছেন তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। তবে এ ঘটনায় ভোটের দিন কোনো প্রভাব ফেলবে না বলে মনে করেন আতিকুল। পরে মহাখালী সাততলা বস্তি এলাকা প্রচারণা চালান তিনি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

পাঁচ রূপরেখা তাপসের ইশতেহারে

আপডেট টাইম : ০৮:২৪:০০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ঐতিহ্যের ঢাকা, সুন্দর ঢাকা, সচল ঢাকা, সুশাসিত ঢাকা ও উন্নত ঢাকা-এমন পাঁচটি রূপরেখা দিয়ে নিজের নির্বাচনি ইশতেহার ঘোষণা করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে (ডিএসসিসি) আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। বুধবার সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে শেখ ফজলুল হক মনির ছোটো ছেলে তাপস নির্বাচনি ইশতেহার ঘোষণা করেন। গৃহ কর না বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচিত হয়ে ঢাকাকে পুনরুজ্জীবিত করব। দায়িত্ব গ্রহণের ৯০ দিনের মধ্যেই মৌলিক সকল নাগরিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করব। ডিএসসিসি হবে বাংলাদেশে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রথম দুর্নীতিমুক্ত সংস্থা।

এদিকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলামের সমাবেশে দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে।

সপ্তাহে একদিন নগরবাসী মেয়রের সাথে আলোচনার সুযোগ পাবেন

ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস নির্বাচনি ইশতেহারে ৫টি রূপরেখার বিস্তারিত তুলে ধরেন। এই রূপরেখা অনুসারেই ৩০ বছরের মহাপরিকল্পনা তৈরি করে বিভিন্ন মেয়াদে তা বাস্তবায়ন করা হবে। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কোনো কর না বাড়িয়ে দুই বছরের মধ্যে ডিএসসিসি স্বয়ংসম্পূর্ণ করা হবে। সহজে ও দ্রুত নাগরিক সেবা দিতে ‘ওয়ান স্টপ সার্ভিস ডেস্ক’ স্থাপনের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, সপ্তাহে একদিন নগরবাসী মেয়রের সাথে আলোচনার সুযোগ পাবেন।

ঐতিহ্যের ঢাকা

চারশ বছরের পুরনো এ মহানগরের ইতিহাস-ঐতিহ্য, প্রত্নতাত্ত্বিক গুরুত্ব ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য তুলে ধরে তাপস বলেন, মহাপরিকল্পনা ও সুব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ঐতিহ্য পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ করে ঢাকাকে তার স্বকীয় গৌরবে সাজিয়ে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরব। তিনি বলেন, ঢাকার ঐতিহ্য সংরক্ষণে সমন্বিত উদ্যোগে যাদুঘর ও আর্ট গ্যালারি নির্মাণ করা হবে। পরিত্যক্ত কেন্দ্রীয় কারাগার এলাকাকে ‘ঐতিহ্য প্রাঙ্গণ’ হিসেবে গড়ে তোলা হবে।

সুন্দর ঢাকা

বুড়িগঙ্গা ও শীতলক্ষ্যা দুই নদীর অববাহিকায় পত্তন হওয়া ‘বিরল শহর’ ঢাকার সৌন্দর্যবর্ধনের পরিকল্পনা তুলে ধরে তাপস বলেন, র্দীঘমেয়াদি পরিকল্পনায় বুড়িগঙ্গা ও শীতলক্ষ্যার পাড় ঘিরে বনায়ন ও বিনোদন কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। বায়ু ও শব্দ দূষণ রোধ ও চিত্তবিনোদনের জন্য প্রতিটি ওয়ার্ডে খেলার মাঠ, শরীর চর্চাকেন্দ্র এবং নারী-শিশু ও প্রবীণদের জন্যে হাঁটার উন্মুক্ত স্থান, আধুনিক মানের কমিউনিটি সেন্টারের ব্যবস্থা করা হবে।’ তিনি বলেন, নগরীতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক উদ্যান নির্মাণ, বাড়িতে ছাদবাগানে উত্সাহ দান ও পরিবেশবান্ধব স্থাপনা বাড়ানো, সাধারণ ও ভ্রাম্যমাণ পাঠাগারের ব্যবস্থার ও বস্তিবাসীদের সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী কর্মসূচির আওতায় আনার উদ্যোগ নেওয়া হবে। জলাধার সংরক্ষণে খালগুলো থেকে অবৈধ দখল উচ্ছেদ ও খনন, প্রয়োজনীয়সংখ্যক নর্দমা নির্মাণ, জলাবদ্ধতা নিরসন ও সড়কের উন্মুক্ত আবর্জনার স্তূপ প্রতিদিন অপসারণের প্রতিশ্রুতির কথাও রয়েছে।

সচল ঢাকা

যানজটের কারণে রাস্তায় চলাচল দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে উল্লেখ করে তাপস বলেন, সকালে বাসা থেকে বেরিয়ে যথাসময়ে গন্তব্যে পৌঁছানো ও ফিরে আসতে নিরন্তর সংগ্রাম করতে হয়। বিশেষ করে কর্মজীবী নারীদের বিড়ম্বনা অপরিসীম। তাই গণপরিবহনের চলাচল নিয়ন্ত্রণ ও সুব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কিছু রাস্তায় দ্রুত গতির যানবাহন, কিছু রাস্তায় ধীর গতির যানবাহন, আবার কিছু রাস্তায় শুধু মানুষের হাঁটার ব্যবস্থা করব।

সুশাসিত ঢাকা

সুশাসিত ঢাকা গড়ার পরিকল্পনা তুলে ধরে তাপস বলেন, এলাকাভিত্তিক সুশাসন প্রতিষ্ঠায় পঞ্চায়েত ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি মাদক নির্মূল, জুয়া, কিশোর অপরাধসহ নৈতিক ও সামাজিক অবক্ষয়জনিত বিভিন্ন অপরাধ রোধ সংশোধন কেন্দ্র নির্মাণ করব। বছরের ৩৬৫ দিন, সপ্তাহের ৭ দিন, ২৪ ঘণ্টা নাগরিক সেবা প্রদানের জন্য খোলা থাকবে। হতদরিদ্রদের শিক্ষার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা; অটিস্টিক ও প্রতিবন্ধী শিশু-কিশোরদের শিক্ষা, বিনোদন ও চিকিত্সা সেবায় পদক্ষেপ নেওয়া হবে এবং স্থাপন করা হবে ডে-কেয়ার সেন্টার।

উন্নত ঢাকা

আওয়ামী লীগ সরকার ঘোষিত ‘রূপকল্প ২০৪১’ এর আলোকে উন্নত ঢাকা গড়ে তোলার পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে তাপস বলেন, দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে ৩০ বছর মেয়াদি মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করে তার আওতায় পাঁচ বছর মেয়াদি নানা প্রকল্প হাতে নিয়ে ইমারত নির্মাণ, ভূমি ব্যবস্থাপনা, ভূমি অধিগ্রহণ ও নগরীর উন্নতিসাধন করা হবে। তিনি বলেন, ঢাকা দক্ষিণে যুক্ত নতুন ১৮টি ওয়ার্ডে ভালোভাবে প্রত্যেকটি সড়ক ও নর্দমার উন্নয়ন করা হবে, যাতে অন্তত ১০ বছর স্থায়িত্ব থাকে। বাণিজ্য লাইসেন্স, জন্ম নিবন্ধনপত্র, প্রত্যয়নপত্র, গৃহকর, পৌরকর, অন্যান্য করসমূহ তথ্য প্রযুক্তিগত সেবার আওতায় আনা হবে। নাগরিক সেবায় ২৪ ঘণ্টা হেল্প লাইন, তথ্যসমৃদ্ধ নগর অ্যাপ, ই-লাইব্রেরি, নগর ভবনে নিয়ন্ত্রণকক্ষ রেখে বিভিন্ন স্থানে সিসি ক্যামেরা স্থাপন ও ফ্রি ওয়াইফাই সেবা দেওয়ার কথাও জানান তাপস। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যে কোনো সমালোচনা ইতিবাচক হিসেবে নেব। গণমাধ্যমের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করব।

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু এমপি, মোজাফ্ফর হোসেন পল্টু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, আফজাল হোসেন, ত্রাণ ও দুর্যোগ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক আব্দুস সবুর, উপপ্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, কেন্দ্রীয় সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, কামরুল ইসলাম এমপি, রিয়াজুল কবির কাউসার, গোলাম রাব্বানী চিনু, আনোয়ার হোসেন, পারভীন জামান কল্পনা, সাহাবউদ্দিন ফরাজী, ঢাকা দক্ষিণের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফি, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ প্রমুখ এসময় তার সঙ্গে ছিলেন।

আতিকের প্রচার সভা পণ্ড হলো যেভাবে

ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আতিকুল ইসলামের উপস্থিতিতেই সংঘর্ষে জড়িয়েছেন দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকরা। বুধবার বলা ১২টার দিকে গুলশানের শহিদ ফজলে রাব্বি পার্কের ভেতরে আতিকের নির্বাচনী প্রচারসভার সময় ঢাকা উত্তরের ২০ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী মো. নাসির ও দলটির বিদ্রোহী প্রার্থী মো. জাহিদুর রহমানের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে। এ সময় সমাবেশস্থলের চেয়ার ভাঙচুর হয়। কয়েকজনকে বেদম লাঠিপেটা করতেও দেখা যায়। মারামারির মধ্যে পণ্ড হয়ে যায় মেয়র প্রার্থী আতিকের প্রচারসভা।

ঐ সময় গাছের নিচে তৈরি মঞ্চে কথা বলছিলেন মেয়র পদপ্রার্থী আতিকুল ইসলাম। মঞ্চে তার ভাই মাইনুল ইসলাম, তিন বোন আমেনা, হালিমা, রহিমা, আতিকুলের স্ত্রী শায়লা সাগুফতা, মেয়ে বুশরা আফরীন, বোনের স্বামী ও সন্তানরা উপস্থিত ছিলেন। বক্তব্য শেষ হলে কর্মীরা আতিকুলসহ তার পরিবারের সদস্যদের ঘিরে ধরে পার্ক থেকে বের করে নিয়ে যান। পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার পর পার্কের পশ্চিম কোণে আতিকুল ইসলামসহ মো. নাসিরের কর্মী-সমর্থকেরা পার্ক থেকে বের হয়ে গণসংযোগে যান।

মহাখালী দক্ষিণপাড়া সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে সামনে গণসংযোগকালে আতিকুল ইসলাম সাংবদিকের প্রশ্নের জবাবে বলেন, পার্কের ভেতর কাউন্সিলরের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাটি অনাকাঙ্ক্ষিত। বিষয়টি তিনি দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে জানিয়েছেন তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। তবে এ ঘটনায় ভোটের দিন কোনো প্রভাব ফেলবে না বলে মনে করেন আতিকুল। পরে মহাখালী সাততলা বস্তি এলাকা প্রচারণা চালান তিনি।