ঢাকা ০৫:৩৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ২৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আলুক্ষেত ও বোরো বীজতলা নিয়ে শঙ্কায় কৃষকরা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:১৪:৩২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২০
  • ২৩২ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ  বিরূপ আবহাওয়ায় আলুক্ষেত ও বোরো বীজতলা নিয়ে চরম শঙ্কায় দিন কাটছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম আলু উৎপাদনকারী জেলা জয়পুরহাটের কৃষকদের। বার বার কীটনাশক ছিটিয়েও শঙ্কা কাটছে না তাদের।

ইতোমধ্যেই আশা জাগানিয়া আলুর গাছে নাবি ধ্বস রোগ দেখা দেওয়ায় চিন্তিত হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। এছাড়া ঘন কুয়াশার কারণে বোরো বীজতলা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে, বাজারে বিভিন্ন কোম্পানির কিটনাশকের মান নিয়েও কৃষকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে সংশয়। তবে এসব নিয়ে মাঠের কৃষকদের নানা ধরনের অভিযোগ থাকলেও আমলে নিচ্ছেন না স্থানীয় কৃষি বিভাগ।

জয়পুরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ জানায়, শুরুতেই আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় জেলায় এ বছর আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ৩৭ হাজার ৯১৭ হেক্টর নির্ধারণ করা হলেও আলু চাষ হচ্ছে ৩৮ হাজার ৩২৫ হেক্টর জমিতে। আর বীজতলার লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করে বীজ বপন করা হয়েছে ৩ হাজার ৮৪০ হেক্টর।

জয়পুরহাট সদর উপজেলার ধারকী ঘোনাপাড়া আফজাল হোসেন, গলি পাড়ার আব্দুর রাজ্জাকসহ একাধিক কৃষক বাংলানিউজকে জানান, টানা শৈত্যপ্রবাহ, কুয়াশা ও মাঝে মধ্যে বৃষ্টির কারণে আলুতে নাবি ধ্বস রোগ দেখা দিয়েছে। এ কারণে বার বার ছত্রাক নাশক, কিটনাশক স্প্রে করেও ফল পাচ্ছি না।

জয়পুরহাটের আক্কেরপুর উপজেলার মাতাপুর গ্রামের কৃষক আব্দুর রহমান, নজরুল ইসলামসহ অনেক কৃষকই জানান, খারাপ আবহাওয়ায় অধিকাংশ বীজতলা হলুদ বর্ণ হয়ে গেছে। উপায় না পেয়ে বীজতলাগুলো পলিথিন দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এরপরও শেষ রক্ষা হচ্ছে না।

এদিকে, বাজারে আসা বিভিন্ন কোম্পানির ওষুধের মান নিয়েও কৃষকদের মাঝে দেখা দিয়েছে সংশয়। জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার শালপাড়া গ্রামের কৃষক জোবায়ের হোসেন ও আটাপুর গ্রামের কৃষক আবু নাছের জানান, অন্য বছরের তুলনায় বাজারে আসা এ বছর আসা কিটনাশকের দাম বেশি হলেও বার বার স্প্রে করেও কোনো কাজে আসছে না।

তবে কিটনাশক বিক্রেতারা এমন অভিযোগকে আমলে নিচ্ছেন না। জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার বটতলী বাজারের কিটনাশক ব্যবসায়ী মেসার্স মহিবুল্লাহ ট্রেডার্সে ও স্বত্বাধিকারী আবু তালেব, মেসার্স আবির ট্রেডার্সে ও স্বত্বাধিকারী শামীম হোসেন জানান, আলু ক্ষেত ও বীজতলায় এমন ক্ষতির কারণ বিরুপ আবহাওয়া। কেননা কোনো কোনো সময় রাতে হালকা বৃষ্টি হচ্ছে আবার ভোরে প্রচণ্ড কুয়াশা দেখা দিচ্ছে।

এদিকে, কৃষকদের নানা অভিযোগ থাকলেও আমলে নিচ্ছেন না স্থানীয় কৃষি বিভাগ। জয়পুরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক স.ম মেফতাহুল বারি বাংলানিউজকে বলেন, আলুতে এখনো তেমন রোগ বালাই দেখা দেয়নি। তবে নাবি ধ্বসসহ বিভিন্ন রোগ দেখা দেওয়ার আগেই আমরা কৃষকদের মধ্যে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করছি। এছাড়াও মাঠে মাঠে কৃষকদের নানা ধরনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। সর্বশেষ গেল বছরের তুলনায় এ বছর আলুর ফলন অনেকটা ভাল।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

আলুক্ষেত ও বোরো বীজতলা নিয়ে শঙ্কায় কৃষকরা

আপডেট টাইম : ১১:১৪:৩২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ  বিরূপ আবহাওয়ায় আলুক্ষেত ও বোরো বীজতলা নিয়ে চরম শঙ্কায় দিন কাটছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম আলু উৎপাদনকারী জেলা জয়পুরহাটের কৃষকদের। বার বার কীটনাশক ছিটিয়েও শঙ্কা কাটছে না তাদের।

ইতোমধ্যেই আশা জাগানিয়া আলুর গাছে নাবি ধ্বস রোগ দেখা দেওয়ায় চিন্তিত হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। এছাড়া ঘন কুয়াশার কারণে বোরো বীজতলা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে, বাজারে বিভিন্ন কোম্পানির কিটনাশকের মান নিয়েও কৃষকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে সংশয়। তবে এসব নিয়ে মাঠের কৃষকদের নানা ধরনের অভিযোগ থাকলেও আমলে নিচ্ছেন না স্থানীয় কৃষি বিভাগ।

জয়পুরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ জানায়, শুরুতেই আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় জেলায় এ বছর আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ৩৭ হাজার ৯১৭ হেক্টর নির্ধারণ করা হলেও আলু চাষ হচ্ছে ৩৮ হাজার ৩২৫ হেক্টর জমিতে। আর বীজতলার লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করে বীজ বপন করা হয়েছে ৩ হাজার ৮৪০ হেক্টর।

জয়পুরহাট সদর উপজেলার ধারকী ঘোনাপাড়া আফজাল হোসেন, গলি পাড়ার আব্দুর রাজ্জাকসহ একাধিক কৃষক বাংলানিউজকে জানান, টানা শৈত্যপ্রবাহ, কুয়াশা ও মাঝে মধ্যে বৃষ্টির কারণে আলুতে নাবি ধ্বস রোগ দেখা দিয়েছে। এ কারণে বার বার ছত্রাক নাশক, কিটনাশক স্প্রে করেও ফল পাচ্ছি না।

জয়পুরহাটের আক্কেরপুর উপজেলার মাতাপুর গ্রামের কৃষক আব্দুর রহমান, নজরুল ইসলামসহ অনেক কৃষকই জানান, খারাপ আবহাওয়ায় অধিকাংশ বীজতলা হলুদ বর্ণ হয়ে গেছে। উপায় না পেয়ে বীজতলাগুলো পলিথিন দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এরপরও শেষ রক্ষা হচ্ছে না।

এদিকে, বাজারে আসা বিভিন্ন কোম্পানির ওষুধের মান নিয়েও কৃষকদের মাঝে দেখা দিয়েছে সংশয়। জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার শালপাড়া গ্রামের কৃষক জোবায়ের হোসেন ও আটাপুর গ্রামের কৃষক আবু নাছের জানান, অন্য বছরের তুলনায় বাজারে আসা এ বছর আসা কিটনাশকের দাম বেশি হলেও বার বার স্প্রে করেও কোনো কাজে আসছে না।

তবে কিটনাশক বিক্রেতারা এমন অভিযোগকে আমলে নিচ্ছেন না। জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার বটতলী বাজারের কিটনাশক ব্যবসায়ী মেসার্স মহিবুল্লাহ ট্রেডার্সে ও স্বত্বাধিকারী আবু তালেব, মেসার্স আবির ট্রেডার্সে ও স্বত্বাধিকারী শামীম হোসেন জানান, আলু ক্ষেত ও বীজতলায় এমন ক্ষতির কারণ বিরুপ আবহাওয়া। কেননা কোনো কোনো সময় রাতে হালকা বৃষ্টি হচ্ছে আবার ভোরে প্রচণ্ড কুয়াশা দেখা দিচ্ছে।

এদিকে, কৃষকদের নানা অভিযোগ থাকলেও আমলে নিচ্ছেন না স্থানীয় কৃষি বিভাগ। জয়পুরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক স.ম মেফতাহুল বারি বাংলানিউজকে বলেন, আলুতে এখনো তেমন রোগ বালাই দেখা দেয়নি। তবে নাবি ধ্বসসহ বিভিন্ন রোগ দেখা দেওয়ার আগেই আমরা কৃষকদের মধ্যে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করছি। এছাড়াও মাঠে মাঠে কৃষকদের নানা ধরনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। সর্বশেষ গেল বছরের তুলনায় এ বছর আলুর ফলন অনেকটা ভাল।