যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা ফোরাম চুক্তি (টিকফা)-এর দ্বিতীয় বৈঠক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার ওয়াশিংটনস্থ বাণিজ্য প্রতিনিধির কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় বলে দেশটিতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা জানানো হয়। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ এশীয় বিষয়ক উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই তার ব্যাক্তিগত টুইট বার্তায় বাংলাদেশের সাথে টিকফা চুক্তির বিষয়ে বৈঠক অনুষ্ঠানের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেদায়তুল্লাহ আল মামুন। আরো উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র সচিব মো. শহিদুল হক, শ্রম ও কর্মসংস্থান সচিব মিকাইল শিপারসহ ওয়াশিংটন দূতাবাসের কর্মকর্তারা।
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে নেতৃত্ব দেন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিন এশিয়া বিষয়ক সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধি মিখাইল জে. ডিলানি।
প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, বৈঠকে শ্রমিক অধিকার, জিএসপি সুবিধা, জলবায়ু পরিবর্তনে অভিঘাত মোকাবেলায় বিনিয়োগসহ বিস্তারিত আলোচনা হয়। বৈঠকে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে বাংলাদেশে শ্রমিক অধিকার রক্ষায় সরকারি নানামূখী উদ্যোগ ও জিএসপি এ্যাকশন প্লানের বিষয়ে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের অগ্রগতিগুলো তুলে ধরা হয়। এতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়, হংকং মিনিস্ট্রারিয়েল ডিক্লারেশন ও বালি ডব্লিওটিও মিনিস্ট্রারিয়েল প্যাকেজের আওতায় যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশী পণ্যের শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত পণ্যের প্রবেশাধিকার নিশ্চিতে ডিএফকিউএফ অনুমোদনে যেন যুক্তরাষ্ট্র উদ্যোগী হয়।
বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রণীত ট্রান্স প্যাসিফিক পার্টনারশীপ(টিপিপি) এর ব্যাপারে বাংলাদেশের উদ্বেগের কথা জানানো হয়। বাংলাদেশ সরকার মনে করে টিপিপি -এর কারণে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশী পণ্যের রপ্তানী বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
বাংলাদেশ দূতাবাসের ওই প্রেস রিলিজে আরও জানানো হয়, বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে জিএসপি এ্যাকশন প্লানের অগ্রগতিতে সন্তুষ প্রকাশ করা হয়। ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্রের আরো বেশী বিনোয়োগ বাড়বে বলে আশা ব্যক্ত করা হয়। বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় ২০১৬ সালে ডিসেম্বরে রাজধানী ঢাকায় টিকফা চুক্তির তৃতীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
একইসঙ্গে নিশা দেশাই তার ব্যাক্তিগত টুইট বার্তায় বাংলাদেশের সাথে টিকফা চুক্তির বিষয়ে বৈঠক অনুষ্ঠানের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি তাঁর সংক্ষিপ্ত টুইট বার্তায় লিখেন, ‘এই শহরে (ওয়াশিংটনে) সেক্রেটারি হককে টিকফা আলোচনায় আসতে দেখে আমি আনন্দিত। বাংলাদেশের সাথে অংশিদারিত্ব শক্তিশালী করতে আমরা আলোচনা করছি’।
টুইট বার্তার সাথে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মো. শহিদুল হকের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের উপসহকারী পররাষ্ট্র মন্ত্রী নিশা দেশাই-এর একটি ছবি শোভা পাচ্ছিল।
উল্লেখ্য, দুই দেশের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির প্রতিবন্ধকতাগুলোকে চিহ্নিত করার লক্ষ্যে ২০১৩ সালের ২৫ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যকার টিকফা চুক্তি সাক্ষরিত হয়। ২০১৪ সালে এই ফোরামের প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায়।