ঢাকা ১২:৩৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে প্রায় ২০০ গাছ লাগাতে খরচ ১১ কোটি টাকা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:১৩:৩৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০১৯
  • ২৩৭ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ  ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. এস এম খবীরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। কলেজে বৃক্ষ রোপন প্রকল্পে প্রায় ১১ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, সাময়িক বরখাস্ত হওয়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মেডিক্যাল এডুকেশন শাখার হিসাবরক্ষণ (ভারপ্রাপ্ত) কর্মকর্তা মো. আফজাল হোসেনের ঘনিষ্ট আত্মীয় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডাঃ এস এম খবীরুল ইসলাম।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের বৃক্ষ রোপন প্রকল্পে প্রায় ১১ কোটি টাকার গড়মিল রয়েছে। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, প্রায় ২০০টি গাছ লাগানো হয়েছে। এমত অবস্থায় এলাকাবাসীর প্রশ্ন উঠে, তাহলে কি প্রায় ২০০ গাছ লাগাতে খরচ ১১ কোটি টাকা

বিশেষ সূত্রে জানা যায়, ডাঃ এস এম খবীরুল ইসলাম কিছু জমি- জমা ও সম্পত্তি বিক্রি করে এ টাকা বিদেশে পাঠিয়েছেন। অন্যদিকে আত্মীয়  আফজালের অবৈধ অর্থে গড়া বাড়ির ভাড়া তিনি নিজেই তুলছেন। দ্বিতীয় আফজাল হিসাবেই ফরিদপুরে সমালোচিত ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. এস এম খবীরুল ইসলাম। আফজালের যোগসাজশে দুর্নীতির মাধ্যমে খবীরুল ইসলাম সম্পদের পাহাড় গড়েছেন বলেও জানা যায়।

খবীরুল এখন শত কোটি টাকার মালিক। অন্ধকারে থেকে বদলী, নিয়োগ বাণিজ্যসহ দুর্নীতি অনিয়ম করেছেন অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. এস এম খবীরুল ইসলাম। জানা গেছে, আফজাল হোসেন ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চতুর্থ শ্রেণীর একজন কর্মচারী। তিনি এখন শত কোটি টাকার মালিক। ঢাকায় রয়েছে একাধিক ফ্ল্যাট। বিলাসবহুল গাড়ি। এছাড়াও অস্ট্রেলিয়া ও সিঙ্গাপুরে বিপুল অঙ্কের অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। এই কর্মচারীর সিটি ব্যাংক ও এবি ব্যাংকে জমা রয়েছে কোটি টাকা। এমনকি তার স্ত্রী একই অধিদপ্তরের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য জনশক্তি উন্নয়ন শাখার স্টেনোগ্রাফার রুবিনা খানমও ঢাকায় বেশ কয়েকটি বাড়ির মালিক।

আফজাল গত এক বছরে সপরিবারে বিদেশ সফর করেছেন ২৮ বারের বেশি। দুুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধানে এসব অবৈধ সম্পদের ভয়াবহ তথ্য উঠে এসেছে। ইতোমধ্যে আফজাল ও তার স্ত্রীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এই দম্পত্তির স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি জব্দ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। আফজাল হোসেন ও তার স্ত্রীর নামে রাজধানীর উত্তরায় ১৩ নম্বর সেক্টরের ১১ নম্বর রোডে তিনটি পাঁচতলা বাড়ি রয়েছে।

বাড়ি নম্বর ৪৭, ৬২ ও ৬৬। ১৬ নম্বর রোডে রয়েছে পাঁচতলা বাড়ি। বাড়ি নম্বর ১৬। উত্তরার ১১ নম্বর রোডে রয়েছে একটি প্লট। এসবের বাইরে সিটি ব্যাংকের একটি অ্যাকাউন্টে বিপুল পরিমাণ অর্থ জমা করেছেন আফজাল। এছাড়া আরব বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি হিসাবের তথ্যও পেয়েছে দুদক। এছাড়া রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ও ফরিদপুরের বিভিন্ন জায়গায় রয়েছে তাদের অঢেল সম্পদ। অস্ট্রেলিয়ায় রয়েছে তাদের বাড়ি। দুদক সেই বাড়ির সন্ধানও পেয়েছে বলে জানা যায়। আফজাল হোসেনের মাসিক বেতন মাত্র ২৪ হাজার টাকা হলেও তিনি মিলিয়ন ডলার ব্যয় করে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে বিলাসবহুল একটি বাড়ি কিনেছেন। তিনি গত এক বছরে বিভিন্ন দেশে ২৮ বারের বেশি সপরিবারে সফর করেন।

আফজালের প্রাডো, পাজেরো, হ্যারিয়ারের মতো দামি গাড়ির মালিক। তার স্ত্রী রুবিনা খানম একজন স্টেনোগ্রাফার। তার নামেও রাজধানী ঢাকায় রয়েছে বেশ কয়েকটি ভবন। দুদকের কাছে জমা দেয়া সম্পদের বিবরণীতে তারা ১২ কোটি টাকার সম্পত্তি কথা জানিয়েছেন। তবে দুদকের অনুসন্ধানে তাদের শত কোটি টাকার সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। গত ১০ জানুয়ারি এ কর্মকর্তা আফজাল দম্পতিকে তাদের সম্পত্তির বিষয়ে দুদকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। বিপুল সম্পদের তথ্য পেয়েই তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এই দুজনের বিদেশ গমনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। আফজাল হোসেন ও তার স্ত্রী রুবিনা খানমের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি জব্দ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত।

এদিকে আফজাল ও তার স্ত্রীর অবৈধ সম্পদ দেখভাল করছেন, ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডাঃ এস এম খবীরুল ইসলাম। অনুসন্ধানে এই অধ্যক্ষের দুর্নীতি অনিয়মের অভিযোগ এখন ফরিদপুর টক অফ দি টাউনে পরিণত হয়েছে। এ ব্যাপারে অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডাঃ এস এম খবীরুল ইসলাম জানান, আফজাল আমার কোন আত্বীয় না, তিনি আমার কিছু হয় না। আমি কোন অনিয়ম ্ও দুর্নীতির সাথে জড়িত না, গাছরোপন করেছে পূর্ত ভবন ও প্রকল্প পরিচালক তারা সব জানেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে প্রায় ২০০ গাছ লাগাতে খরচ ১১ কোটি টাকা

আপডেট টাইম : ১০:১৩:৩৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০১৯

হাওর বার্তা ডেস্কঃ  ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. এস এম খবীরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। কলেজে বৃক্ষ রোপন প্রকল্পে প্রায় ১১ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, সাময়িক বরখাস্ত হওয়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মেডিক্যাল এডুকেশন শাখার হিসাবরক্ষণ (ভারপ্রাপ্ত) কর্মকর্তা মো. আফজাল হোসেনের ঘনিষ্ট আত্মীয় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডাঃ এস এম খবীরুল ইসলাম।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের বৃক্ষ রোপন প্রকল্পে প্রায় ১১ কোটি টাকার গড়মিল রয়েছে। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, প্রায় ২০০টি গাছ লাগানো হয়েছে। এমত অবস্থায় এলাকাবাসীর প্রশ্ন উঠে, তাহলে কি প্রায় ২০০ গাছ লাগাতে খরচ ১১ কোটি টাকা

বিশেষ সূত্রে জানা যায়, ডাঃ এস এম খবীরুল ইসলাম কিছু জমি- জমা ও সম্পত্তি বিক্রি করে এ টাকা বিদেশে পাঠিয়েছেন। অন্যদিকে আত্মীয়  আফজালের অবৈধ অর্থে গড়া বাড়ির ভাড়া তিনি নিজেই তুলছেন। দ্বিতীয় আফজাল হিসাবেই ফরিদপুরে সমালোচিত ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. এস এম খবীরুল ইসলাম। আফজালের যোগসাজশে দুর্নীতির মাধ্যমে খবীরুল ইসলাম সম্পদের পাহাড় গড়েছেন বলেও জানা যায়।

খবীরুল এখন শত কোটি টাকার মালিক। অন্ধকারে থেকে বদলী, নিয়োগ বাণিজ্যসহ দুর্নীতি অনিয়ম করেছেন অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. এস এম খবীরুল ইসলাম। জানা গেছে, আফজাল হোসেন ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চতুর্থ শ্রেণীর একজন কর্মচারী। তিনি এখন শত কোটি টাকার মালিক। ঢাকায় রয়েছে একাধিক ফ্ল্যাট। বিলাসবহুল গাড়ি। এছাড়াও অস্ট্রেলিয়া ও সিঙ্গাপুরে বিপুল অঙ্কের অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। এই কর্মচারীর সিটি ব্যাংক ও এবি ব্যাংকে জমা রয়েছে কোটি টাকা। এমনকি তার স্ত্রী একই অধিদপ্তরের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য জনশক্তি উন্নয়ন শাখার স্টেনোগ্রাফার রুবিনা খানমও ঢাকায় বেশ কয়েকটি বাড়ির মালিক।

আফজাল গত এক বছরে সপরিবারে বিদেশ সফর করেছেন ২৮ বারের বেশি। দুুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধানে এসব অবৈধ সম্পদের ভয়াবহ তথ্য উঠে এসেছে। ইতোমধ্যে আফজাল ও তার স্ত্রীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এই দম্পত্তির স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি জব্দ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। আফজাল হোসেন ও তার স্ত্রীর নামে রাজধানীর উত্তরায় ১৩ নম্বর সেক্টরের ১১ নম্বর রোডে তিনটি পাঁচতলা বাড়ি রয়েছে।

বাড়ি নম্বর ৪৭, ৬২ ও ৬৬। ১৬ নম্বর রোডে রয়েছে পাঁচতলা বাড়ি। বাড়ি নম্বর ১৬। উত্তরার ১১ নম্বর রোডে রয়েছে একটি প্লট। এসবের বাইরে সিটি ব্যাংকের একটি অ্যাকাউন্টে বিপুল পরিমাণ অর্থ জমা করেছেন আফজাল। এছাড়া আরব বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি হিসাবের তথ্যও পেয়েছে দুদক। এছাড়া রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ও ফরিদপুরের বিভিন্ন জায়গায় রয়েছে তাদের অঢেল সম্পদ। অস্ট্রেলিয়ায় রয়েছে তাদের বাড়ি। দুদক সেই বাড়ির সন্ধানও পেয়েছে বলে জানা যায়। আফজাল হোসেনের মাসিক বেতন মাত্র ২৪ হাজার টাকা হলেও তিনি মিলিয়ন ডলার ব্যয় করে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে বিলাসবহুল একটি বাড়ি কিনেছেন। তিনি গত এক বছরে বিভিন্ন দেশে ২৮ বারের বেশি সপরিবারে সফর করেন।

আফজালের প্রাডো, পাজেরো, হ্যারিয়ারের মতো দামি গাড়ির মালিক। তার স্ত্রী রুবিনা খানম একজন স্টেনোগ্রাফার। তার নামেও রাজধানী ঢাকায় রয়েছে বেশ কয়েকটি ভবন। দুদকের কাছে জমা দেয়া সম্পদের বিবরণীতে তারা ১২ কোটি টাকার সম্পত্তি কথা জানিয়েছেন। তবে দুদকের অনুসন্ধানে তাদের শত কোটি টাকার সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। গত ১০ জানুয়ারি এ কর্মকর্তা আফজাল দম্পতিকে তাদের সম্পত্তির বিষয়ে দুদকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। বিপুল সম্পদের তথ্য পেয়েই তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এই দুজনের বিদেশ গমনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। আফজাল হোসেন ও তার স্ত্রী রুবিনা খানমের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি জব্দ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত।

এদিকে আফজাল ও তার স্ত্রীর অবৈধ সম্পদ দেখভাল করছেন, ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডাঃ এস এম খবীরুল ইসলাম। অনুসন্ধানে এই অধ্যক্ষের দুর্নীতি অনিয়মের অভিযোগ এখন ফরিদপুর টক অফ দি টাউনে পরিণত হয়েছে। এ ব্যাপারে অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডাঃ এস এম খবীরুল ইসলাম জানান, আফজাল আমার কোন আত্বীয় না, তিনি আমার কিছু হয় না। আমি কোন অনিয়ম ্ও দুর্নীতির সাথে জড়িত না, গাছরোপন করেছে পূর্ত ভবন ও প্রকল্প পরিচালক তারা সব জানেন।