ঢাকা ০৫:১১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে : প্রেসিডেন্ট

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:০১:৪২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০১৯
  • ৩৮১ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা ঐক্যবদ্ধ রয়েছে। অসাধু ব্যবসায়ী, মুনাফাখোর, লুটেরা ও মজুতদারদের মধ্যেও ঐক্য রয়েছে। এখন এই সব দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’- প্রেসিডেন্ট মো. আব্দুল হামিদ এসব কথা বলেছেন।

পেঁয়াজ, লবণ ও চালসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মজুদের ব্যাপারে গুজব সম্পর্কে সতর্ক থাকার জন্যও দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, ‘গণমাধ্যম কর্মীদেরও এর বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রচারণা চালাতে হবে।’

শনিবার বিকেলে বাংলাদেশ আর্মি স্টেডিয়ামে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানের বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

আব্দুল হামিদ বলেন, ‘বাংলাদেশের জন্য অন্যতম বড় একটি চ্যালেঞ্জ হচ্ছে শিক্ষার গুণগতমান নিশ্চিত করা। জাতির উন্নয়ন, উন্নত সমাজ গঠন ও বিশ্বমানের গ্রাজুয়েট তৈরির লক্ষে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গুণগত মান, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা জরুরি।’

শনিবার রাজধানীর আর্মি স্টেডিয়ামে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ত্রয়োদশ সমাবর্তনে এ কথা তিনি।

অভিভাবকবৃন্দের অনুরোধ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, আপনারা আপনাদের সন্তানদের প্রতি যত্নশীল হোন। এই সন্তানরাই আমাদের ভবিষ্যৎ। সবসময় মনে রাখবেন, অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষার বিনিময়ে প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে স্বাধীনতাকামী জনগণ প্রাণের বাজি রেখে একটি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে দেশকে স্বাধীন করেছে। ত্যাগের এই অগ্নিশিখা নিজেদের মাঝে প্রজ্জ্বলিত রাখতে হবে। আমাদের রয়েছে গর্ব করার মতো ইতিহাস ও ঐতিহ্য। এই গর্বের গাথা সবার মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া আমাদের সবার দায়িত্ব ও কর্তব্য।

আবদুল হামিদ বলেছেন, বাংলাদেশের জন্য অন্যতম বড় একটি চ্যালেঞ্জ হচ্ছে শিক্ষার গুণগতমান নিশ্চিত করা। কারণ গুণগত শিক্ষা ছাড়া শিক্ষা মূল্যহীন। তাই উচ্চশিক্ষা যাতে কোনক্রমেই সার্টিফিকেটসর্বস্ব না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে।

দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আচার্য আবদুল হামিদ বলেন, যুগের চাহিদাকে ধারণ করে বর্তমানে পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। সরকারি বেসরকারি মিলে বর্তমানে দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ১৪৮টি। এ ছাড়াও তিনটি আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে।

সমাবর্তনে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে রাষ্ট্রপতি বলেন, শুধু পাঠ্যপুস্তক অধ্যয়নে সীমাবদ্ধ থাকলেই চলবে না। পাঠ্যবিষয়ের সাথে সাথে বহির্জগতের জ্ঞানভাণ্ডার হতে জ্ঞান আহরণ করতে হবে। নিজেকে কর্মী ও জ্ঞানী করে তোলাই হবে তোমাদের মূল লক্ষ্য। তোমাদের উচিত ত্যাগ ও সত্যের অভিমুখী হওয়া। সেই সাথে হতে হবে সুস্থ ও সবল মনের অধিকারী। উচ্চ চিন্তা ও সহজ জীবনাচরণ তোমাদের প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলবে।

উচ্চশিক্ষার উন্নয়নে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে রাষ্ট্রপতি বলেন, জাতির উন্নয়ন, উন্নত সমাজ গঠন ও বিশ্বমানের গ্র্যাজুয়েট তৈরির লক্ষ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গুণগত মান, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা জরুরি। বাংলাদেশ সরকার এ বিষয়ে সচেতন। দেশের উচ্চশিক্ষার মান উন্নয়নে নানা প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে শিক্ষা খাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবকে মাথায় রেখে উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে সরকার বদ্ধপরিকর। ন্যানো টেকনোলোজি, রোবটিক্স, ব্লক চেইন ম্যানেজমেন্ট, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের মতো বিষয়গুলোকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। যুগোপযোগী শিক্ষা ব্যবস্থার পরিবেশ নিশ্চিতকরণে সরকার প্রাণান্ত চেষ্টা করে যাচ্ছে।

অনুষ্ঠানে কৃতিত্বের সঙ্গে শিক্ষা জীবন শেষ করার জন্য চারজন শিক্ষার্থীকে স্বর্ণপদক দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্ত ছিলেন জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন।

অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপার্সন তামারা হোসেন আবেদ, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির উপাচার্য ভিনসেন্ট চ্যাং।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে : প্রেসিডেন্ট

আপডেট টাইম : ১২:০১:৪২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০১৯

হাওর বার্তা ডেস্কঃ পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা ঐক্যবদ্ধ রয়েছে। অসাধু ব্যবসায়ী, মুনাফাখোর, লুটেরা ও মজুতদারদের মধ্যেও ঐক্য রয়েছে। এখন এই সব দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’- প্রেসিডেন্ট মো. আব্দুল হামিদ এসব কথা বলেছেন।

পেঁয়াজ, লবণ ও চালসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মজুদের ব্যাপারে গুজব সম্পর্কে সতর্ক থাকার জন্যও দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, ‘গণমাধ্যম কর্মীদেরও এর বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রচারণা চালাতে হবে।’

শনিবার বিকেলে বাংলাদেশ আর্মি স্টেডিয়ামে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানের বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

আব্দুল হামিদ বলেন, ‘বাংলাদেশের জন্য অন্যতম বড় একটি চ্যালেঞ্জ হচ্ছে শিক্ষার গুণগতমান নিশ্চিত করা। জাতির উন্নয়ন, উন্নত সমাজ গঠন ও বিশ্বমানের গ্রাজুয়েট তৈরির লক্ষে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গুণগত মান, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা জরুরি।’

শনিবার রাজধানীর আর্মি স্টেডিয়ামে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ত্রয়োদশ সমাবর্তনে এ কথা তিনি।

অভিভাবকবৃন্দের অনুরোধ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, আপনারা আপনাদের সন্তানদের প্রতি যত্নশীল হোন। এই সন্তানরাই আমাদের ভবিষ্যৎ। সবসময় মনে রাখবেন, অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষার বিনিময়ে প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে স্বাধীনতাকামী জনগণ প্রাণের বাজি রেখে একটি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে দেশকে স্বাধীন করেছে। ত্যাগের এই অগ্নিশিখা নিজেদের মাঝে প্রজ্জ্বলিত রাখতে হবে। আমাদের রয়েছে গর্ব করার মতো ইতিহাস ও ঐতিহ্য। এই গর্বের গাথা সবার মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া আমাদের সবার দায়িত্ব ও কর্তব্য।

আবদুল হামিদ বলেছেন, বাংলাদেশের জন্য অন্যতম বড় একটি চ্যালেঞ্জ হচ্ছে শিক্ষার গুণগতমান নিশ্চিত করা। কারণ গুণগত শিক্ষা ছাড়া শিক্ষা মূল্যহীন। তাই উচ্চশিক্ষা যাতে কোনক্রমেই সার্টিফিকেটসর্বস্ব না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে।

দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আচার্য আবদুল হামিদ বলেন, যুগের চাহিদাকে ধারণ করে বর্তমানে পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। সরকারি বেসরকারি মিলে বর্তমানে দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ১৪৮টি। এ ছাড়াও তিনটি আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে।

সমাবর্তনে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে রাষ্ট্রপতি বলেন, শুধু পাঠ্যপুস্তক অধ্যয়নে সীমাবদ্ধ থাকলেই চলবে না। পাঠ্যবিষয়ের সাথে সাথে বহির্জগতের জ্ঞানভাণ্ডার হতে জ্ঞান আহরণ করতে হবে। নিজেকে কর্মী ও জ্ঞানী করে তোলাই হবে তোমাদের মূল লক্ষ্য। তোমাদের উচিত ত্যাগ ও সত্যের অভিমুখী হওয়া। সেই সাথে হতে হবে সুস্থ ও সবল মনের অধিকারী। উচ্চ চিন্তা ও সহজ জীবনাচরণ তোমাদের প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলবে।

উচ্চশিক্ষার উন্নয়নে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে রাষ্ট্রপতি বলেন, জাতির উন্নয়ন, উন্নত সমাজ গঠন ও বিশ্বমানের গ্র্যাজুয়েট তৈরির লক্ষ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গুণগত মান, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা জরুরি। বাংলাদেশ সরকার এ বিষয়ে সচেতন। দেশের উচ্চশিক্ষার মান উন্নয়নে নানা প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে শিক্ষা খাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবকে মাথায় রেখে উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে সরকার বদ্ধপরিকর। ন্যানো টেকনোলোজি, রোবটিক্স, ব্লক চেইন ম্যানেজমেন্ট, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের মতো বিষয়গুলোকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। যুগোপযোগী শিক্ষা ব্যবস্থার পরিবেশ নিশ্চিতকরণে সরকার প্রাণান্ত চেষ্টা করে যাচ্ছে।

অনুষ্ঠানে কৃতিত্বের সঙ্গে শিক্ষা জীবন শেষ করার জন্য চারজন শিক্ষার্থীকে স্বর্ণপদক দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্ত ছিলেন জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন।

অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপার্সন তামারা হোসেন আবেদ, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির উপাচার্য ভিনসেন্ট চ্যাং।