হাওর বার্তা ডেস্কঃ বিশ্ব নারী দিবস সম্পর্কে আমরা জানি। প্রতি বছরই বেশ ঘটা করে পালন করা হয় দিবসটি। বর্তমান বিশ্বে দিবসটির গুরুত্ব অনেক। দিবসটি নিয়ে পুরুষদের কিঞ্চিৎ ক্ষোভ আছে। তাদের মতে, পুরুষের জন্য যেহেতু আলাদা কোনো দিবস নেই, তাহলে নারীর জন্য আলাদা দিবস কেন? সেই সব পুরুষদের উদ্দেশে বলি, আপনারা হয়তো জানেন না পুরুষদের জন্যও একটি বিশেষ দিন আছে। সেটা ১৯ নভেম্বর। আজ আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস।
চলতি বছর আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘পুরুষ ও ছেলেদের স্বাতন্ত্র্য’। এর আগের বছর ২০১৮ সালে দিবসটির প্রতিপাদ্য ছিল ‘আদর্শ পুরুষ চরিত্র’। সমাজে ও পরিবারে পুরুষের অবদানকে উদযাপন করতেই পুরুষ দিবসের সূচনা হয়। পুরুষ ও ছেলেদের স্বাস্থ্য বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি, লিঙ্গ সম্পর্ক, লিঙ্গ সাম্য, আদর্শ পুরুষ চরিত্রকে তুলে ধরাও দিবসটি পালনের উদ্দেশ্য।
ইন্টারনেটে সবচেয়ে সমৃদ্ধ মুক্ত বিশ্বকোষ উইকিপিডিয়া জানাচ্ছে, প্রতি বছর ১৯ নভেম্বর বিশ্বের ৮০টিরও বেশি দেশে পালন করা হয় দিবসটি। এই দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, কানাডা, ভারত, পাকিস্তান, ক্রোয়েশিয়া, জ্যামাইকা, কিউবা, স্কটল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, মাল্টা, কানাডা, ডেনমার্ক, নরওয়ে, অস্ট্রিয়া, ইউক্রেন ইত্যাদি। বাংলাদেশেও দিবসটি ছোট পরিসরে পালিত হয়।
দিনটিকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে স্বীকৃতি আনার পেছনে যার সবচেয়ে বেশি অবদান রয়েছে তিনি ক্রিনিদাদ ও টোবাগোর বাসিন্দা জেরোমি টিলুকসিংহ। তিনি দিবসটির স্বীকৃতির জন্য তার পিতার জন্মদিন ১৯ নভেম্বরকে বেছে নেন। আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবসের পেছনে ইউনেসকোরও পৃষ্ঠপোষকতা রয়েছে। দিনটির কারণে নভেম্বর মাসকে ‘পুরুষদের মাস’ বলেও আখ্যা দেয়া হয়।
বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ইউরোলজি বিভাগের অ্যান্ড্রলজি ইউনিট আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস পালনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। শুধু আদর, সোহাগ আর ভালোবাসায় একটি শিশু বেড়ে উঠতে পারে না। সমাজে মাথা উঁচু করে বাঁচতে হলে তাকে ব্যক্তিত্ববান হতে হয়, তাকে শক্তিশালী হতে হয়। বাস্তব জগৎকে চিনতে হলে এবং ঝুঁকি নিয়ে শিখতে হলে পুরুষের ভূমিকা প্রয়োজন। শিশুরা এসব শিখে তার পিতা ও পরিবারের পুরুষ সদস্যদের কাছ থেকে। ছেলেসন্তান তথা পুরুষের পরিপূর্ণ উন্নয়নে যত্নবান হওয়ার জন্য এবং তা মনে করিয়ে দেয়ার জন্য দিবসটি পালন করছে বলে জানিয়েছে বিএসএমএমইউর অ্যান্ড্রলজি ইউনিট।
জানা যায়, ১৯২২ সাল থেকে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নে ‘রেড আর্মি অ্যান্ড নেভি ডে’ পালন করা হতো। পুরু নব্বই দশকের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া ও মাল্টায় কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ফেব্রুয়ারিতে পুরুষ দিবস পালনের জন্য বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। পরবর্তী সময়ে ১৯ নভেম্বর বিশ্বব্যাপী পুরুষ দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।