ঢাকা ০৯:৫২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ওসি মোয়াজ্জেমের বিচার শেষ পর্যায়ে বুধবার যুক্তিকর্ত, রায় হতে পারে এ মাসে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৯:৫৯:২১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০১৯
  • ১৯৫ বার

বাঙ্গালী কণ্ঠ ডেস্কঃ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অভিযুক্ত ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলার বিচার শেষ পর্যায়ে। ইতিমধ্যে মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণ সমাপ্ত হয়েছে। বুধবার ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু হবে। যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষেই মামলার রায়ের জন্য দিন ধার্য হবে। আইনজীবীরা বলছেন, চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে এ মামলার রায় ঘোষণা হতে পারে।

মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৬ ধারা (অনুমতি ব্যতীত পরিচিতি তথ্য সংগ্রহ, ব্যব হার, ইত্যাদির দণ্ড), ২৯ ধারা (মানহানিকর তথ্য প্রকাশ, প্রচার, ইত্যাদি) এবং ৩১ ধারায় (আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটানো, ইত্যাদির অপরাধ ও দণ্ড) মামলা করা হয়। এসব ধারার অভিযোগ প্রমাণিত হলে তিনি সর্বনিম্ন তিন বছর থেকে সর্বোচ্চ সাত বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন বলে জানান আইনজীবীরা।

পিবিআইয়ের দেওয়া তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা কর্তৃক যৌন হয়রানির শিকার ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির বক্তব্যের ভিডিও ধারণ ও প্রচার করেন ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন নিজেই। ইচ্ছাকৃতভাবে ঐ ভিডিও প্রচার করে তিনি প্রকৃত ঘটনা সম্পর্কে বিভ্রান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করেন। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঐ ভিডিও ভাইরাল হলে তা জনমনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে যা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৬, ২৯ ও ৩১ ধারার অপরাধ। এ ধরনের অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ততা পাওয়ায় ওসি মোয়াজ্জেমকে অভিযুক্ত করে গত ২৬ মে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

ঐ প্রতিবেদন আমলে নিয়ে সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক জেলা জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন বরখাস্তকৃত ঐ ওসির বিরুদ্ধে গত ১৭ জুলাই অভিযোগ গঠন করেন। ৩১ জুলাই মামলার বাদি ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের সাক্ষ্যগ্রহণের মধ্য দিয়ে শুরু হয় বিচার। রাষ্ট্রপক্ষে মোট ১২ জন সাক্ষী ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দেন। এর মধ্যে নুসরাতের মা, ভাই ও দুই সহপাঠী জবানবন্দি দেন।

সাক্ষীদের জবানবন্দি ও জেরা শেষে গত বৃহস্পতিবার আত্মপক্ষ সমর্থনে বক্তব্য রাখেন মোয়াজ্জেম। বিচারকের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, এ অভিযোগে যত বড়ো শাস্তিই দেন না কেন, তার চেয়ে বড়ো শাস্তি আমি পেয়ে গেছি। এ মামলার কারণে সামাজিকভাবে হেয় হয়েছি অনেক। আমার ১৫ বছরের ছেলে স্কুলে যেতে পারে না। আমি ১০টা খুন করলেও এত বড়ো সাজা হতো না। আত্মপক্ষ সমর্থন শেষে আসামি মোয়াজ্জেমের পক্ষে সাফাই সাক্ষ্য দেওয়া হবে না জানালে ট্রাইব্যুনাল বুধবার যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য দিন ধার্য রাখেন।

মামলার বাদি ব্যারিস্টার সুমন ইত্তেফাককে বলেন, মোয়াজ্জেমের সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত কোনো শত্রুতা নেই। পুলিশ বাহিনীর ভাবমূর্তি ফিরিয়ে আনা এবং মহিলাদের জন্য থানাকে আরো নিরাপদ করতেই এই মামলা করেছি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ওসি মোয়াজ্জেমের বিচার শেষ পর্যায়ে বুধবার যুক্তিকর্ত, রায় হতে পারে এ মাসে

আপডেট টাইম : ০৯:৫৯:২১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০১৯

বাঙ্গালী কণ্ঠ ডেস্কঃ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অভিযুক্ত ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলার বিচার শেষ পর্যায়ে। ইতিমধ্যে মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণ সমাপ্ত হয়েছে। বুধবার ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু হবে। যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষেই মামলার রায়ের জন্য দিন ধার্য হবে। আইনজীবীরা বলছেন, চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে এ মামলার রায় ঘোষণা হতে পারে।

মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৬ ধারা (অনুমতি ব্যতীত পরিচিতি তথ্য সংগ্রহ, ব্যব হার, ইত্যাদির দণ্ড), ২৯ ধারা (মানহানিকর তথ্য প্রকাশ, প্রচার, ইত্যাদি) এবং ৩১ ধারায় (আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটানো, ইত্যাদির অপরাধ ও দণ্ড) মামলা করা হয়। এসব ধারার অভিযোগ প্রমাণিত হলে তিনি সর্বনিম্ন তিন বছর থেকে সর্বোচ্চ সাত বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন বলে জানান আইনজীবীরা।

পিবিআইয়ের দেওয়া তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা কর্তৃক যৌন হয়রানির শিকার ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির বক্তব্যের ভিডিও ধারণ ও প্রচার করেন ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন নিজেই। ইচ্ছাকৃতভাবে ঐ ভিডিও প্রচার করে তিনি প্রকৃত ঘটনা সম্পর্কে বিভ্রান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করেন। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঐ ভিডিও ভাইরাল হলে তা জনমনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে যা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৬, ২৯ ও ৩১ ধারার অপরাধ। এ ধরনের অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ততা পাওয়ায় ওসি মোয়াজ্জেমকে অভিযুক্ত করে গত ২৬ মে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

ঐ প্রতিবেদন আমলে নিয়ে সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক জেলা জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন বরখাস্তকৃত ঐ ওসির বিরুদ্ধে গত ১৭ জুলাই অভিযোগ গঠন করেন। ৩১ জুলাই মামলার বাদি ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের সাক্ষ্যগ্রহণের মধ্য দিয়ে শুরু হয় বিচার। রাষ্ট্রপক্ষে মোট ১২ জন সাক্ষী ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দেন। এর মধ্যে নুসরাতের মা, ভাই ও দুই সহপাঠী জবানবন্দি দেন।

সাক্ষীদের জবানবন্দি ও জেরা শেষে গত বৃহস্পতিবার আত্মপক্ষ সমর্থনে বক্তব্য রাখেন মোয়াজ্জেম। বিচারকের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, এ অভিযোগে যত বড়ো শাস্তিই দেন না কেন, তার চেয়ে বড়ো শাস্তি আমি পেয়ে গেছি। এ মামলার কারণে সামাজিকভাবে হেয় হয়েছি অনেক। আমার ১৫ বছরের ছেলে স্কুলে যেতে পারে না। আমি ১০টা খুন করলেও এত বড়ো সাজা হতো না। আত্মপক্ষ সমর্থন শেষে আসামি মোয়াজ্জেমের পক্ষে সাফাই সাক্ষ্য দেওয়া হবে না জানালে ট্রাইব্যুনাল বুধবার যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য দিন ধার্য রাখেন।

মামলার বাদি ব্যারিস্টার সুমন ইত্তেফাককে বলেন, মোয়াজ্জেমের সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত কোনো শত্রুতা নেই। পুলিশ বাহিনীর ভাবমূর্তি ফিরিয়ে আনা এবং মহিলাদের জন্য থানাকে আরো নিরাপদ করতেই এই মামলা করেছি।