ঢাকা ১০:১৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যে গ্রামের সবাই কোটিপতি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:০৪:২৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩ নভেম্বর ২০১৯
  • ২৭৪ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ গ্রাম বলতেই আমাদের চোখে ভেসে উঠে ফসলের খেত, পুকুর, মেটো রাস্তা, কাঁচা-পাকা বাড়ি সর্বোপরি চারদিকে একটা দারিদ্র্যের ছাপ। কিন্তু বিশ্বে এমনও গ্রাম আছে, যেখানে আধুনিক সকল সুযোগ সুবিধা এবং মানুষের জীবনযাত্রার মান যেকোনো অত্যাধুনিক শহরের চেয়েও ঢেঁড় বেশি।

চীনের জিয়াংসু প্রদেশে অবস্থিত হুয়াক্সি এমনই একটি গ্রাম। সবমিলিয়ে ২ হাজার লোকের বাস এখানে। গ্রামটির গোড়াপত্তন ১৯৬১ সালে। শুরুর দিকে আর আট দশটা গ্রামের মতোই এর চেহারা ছিলো। কৃষিকাজ করে এখানকার অধিকাংশ মানুষ জীবিকা নির্বাহ করতেন। গ্রামটি আধুনিক রূপ পায় কমিউনিস্ট পার্টির প্রাক্তন সেক্রেটারি উ রেনবাওয়ের ছোঁয়ায়। একসময় এখানে গড়ে ওঠে বড় বড় শিল্প কারখানা। একসময়কার কৃষক হয়ে উঠেন শিল্প কারখানার মালিক এবং কর্মী। বদলে যায় গ্রামের চেহারা।

এখানকার শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার হোল্ডার খোদ গ্রামবাসীরাই। বার্ষিক লভ্যাংশের পাঁচ ভাগের এক ভাগ তাদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়। ফলে এখানে অর্থের দিক দিয়ে মানুষে মানুষে ব্যবধান নেই বললেই চলে। গ্রামের প্রতিটি বাসিন্দার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে রয়েছে কমপক্ষে ১ কোটি টাকা!

হুয়াক্সিতে সবকিছু নিয়ন্ত্রণের জন্য রয়েছে নির্দিষ্ট প্রশাসন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে গ্রামের প্রত্যেক বাসিন্দাকে বিলাসবহুল বাড়ি, গাড়ি এবং জীবনযাপনের সব রকম অত্যাধুনিক সুবিধা দেওয়া হয়। মজার ব্যাপার হলো এই সুবিধা পাওয়ার জন্য বাসিন্দাদের নিজেদের পকেট থেকে একটি টাকাও খরচ করতে হয় না। তবে এই সব সুবিধা কেবল গ্রামের আসল বাসিন্দাদের কপালে জোটে।

এখানে রয়েছে ৭২ তলা বিশিষ্ট বহুতল ভবন, শপিং মল এবং অত্যাধুনিক থিম পার্ক। চাইলে হেলিকপ্টার সেবাও পাওয়া যায় সহজেই। গ্রামের প্রতিটি বাড়ির আকার এবং নকশা একই রকম। দূর থেকে দেখলে মনে হয় যেন হাজারো হোটেল সারি সারি দাঁড়িয়ে আছে।

তবে নিয়মের দিক থেকে বেশ কড়াকড়ি রয়েছে হুয়াক্সিতে। এখানে সপ্তাহের সাত দিনই কাজ করতে হয় গ্রামবাসীদের। কোনো ছুটি নেই। গ্রামে সব ধরণের মাদক নিষিদ্ধ। কেউ যদি এক বার এই গ্রাম ছেড়ে চলে যান, তাহলে তার সমস্ত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে নেয় প্রশাসন।

তথ্য সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

যে গ্রামের সবাই কোটিপতি

আপডেট টাইম : ১২:০৪:২৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩ নভেম্বর ২০১৯

হাওর বার্তা ডেস্কঃ গ্রাম বলতেই আমাদের চোখে ভেসে উঠে ফসলের খেত, পুকুর, মেটো রাস্তা, কাঁচা-পাকা বাড়ি সর্বোপরি চারদিকে একটা দারিদ্র্যের ছাপ। কিন্তু বিশ্বে এমনও গ্রাম আছে, যেখানে আধুনিক সকল সুযোগ সুবিধা এবং মানুষের জীবনযাত্রার মান যেকোনো অত্যাধুনিক শহরের চেয়েও ঢেঁড় বেশি।

চীনের জিয়াংসু প্রদেশে অবস্থিত হুয়াক্সি এমনই একটি গ্রাম। সবমিলিয়ে ২ হাজার লোকের বাস এখানে। গ্রামটির গোড়াপত্তন ১৯৬১ সালে। শুরুর দিকে আর আট দশটা গ্রামের মতোই এর চেহারা ছিলো। কৃষিকাজ করে এখানকার অধিকাংশ মানুষ জীবিকা নির্বাহ করতেন। গ্রামটি আধুনিক রূপ পায় কমিউনিস্ট পার্টির প্রাক্তন সেক্রেটারি উ রেনবাওয়ের ছোঁয়ায়। একসময় এখানে গড়ে ওঠে বড় বড় শিল্প কারখানা। একসময়কার কৃষক হয়ে উঠেন শিল্প কারখানার মালিক এবং কর্মী। বদলে যায় গ্রামের চেহারা।

এখানকার শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার হোল্ডার খোদ গ্রামবাসীরাই। বার্ষিক লভ্যাংশের পাঁচ ভাগের এক ভাগ তাদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়। ফলে এখানে অর্থের দিক দিয়ে মানুষে মানুষে ব্যবধান নেই বললেই চলে। গ্রামের প্রতিটি বাসিন্দার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে রয়েছে কমপক্ষে ১ কোটি টাকা!

হুয়াক্সিতে সবকিছু নিয়ন্ত্রণের জন্য রয়েছে নির্দিষ্ট প্রশাসন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে গ্রামের প্রত্যেক বাসিন্দাকে বিলাসবহুল বাড়ি, গাড়ি এবং জীবনযাপনের সব রকম অত্যাধুনিক সুবিধা দেওয়া হয়। মজার ব্যাপার হলো এই সুবিধা পাওয়ার জন্য বাসিন্দাদের নিজেদের পকেট থেকে একটি টাকাও খরচ করতে হয় না। তবে এই সব সুবিধা কেবল গ্রামের আসল বাসিন্দাদের কপালে জোটে।

এখানে রয়েছে ৭২ তলা বিশিষ্ট বহুতল ভবন, শপিং মল এবং অত্যাধুনিক থিম পার্ক। চাইলে হেলিকপ্টার সেবাও পাওয়া যায় সহজেই। গ্রামের প্রতিটি বাড়ির আকার এবং নকশা একই রকম। দূর থেকে দেখলে মনে হয় যেন হাজারো হোটেল সারি সারি দাঁড়িয়ে আছে।

তবে নিয়মের দিক থেকে বেশ কড়াকড়ি রয়েছে হুয়াক্সিতে। এখানে সপ্তাহের সাত দিনই কাজ করতে হয় গ্রামবাসীদের। কোনো ছুটি নেই। গ্রামে সব ধরণের মাদক নিষিদ্ধ। কেউ যদি এক বার এই গ্রাম ছেড়ে চলে যান, তাহলে তার সমস্ত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে নেয় প্রশাসন।

তথ্য সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।