হাওর বার্তা ডেস্কঃ সুনামগঞ্জে বাবার হাতে বীভত্সভাবে শিশু তুহিন হত্যার রেশ না কাটতেই এবার মার হাতে শিশু হত্যার অভিযোগ উঠল। আর্থিক টানাপড়েন আর সংসারের অশান্তিই কি লক্ষ্মীপুরের মাকে ঘাতকরূপ দিল? এ প্রশ্নের উত্তর পাওয়াটা হয়তো কঠিন। কিন্তু এমন নারকীয় ঘটনাই ঘটেছে সন্তানের ১০ টাকার আবদারকে কেন্দ্র করে। শিশু কাউসার মার কাছে ১০ টাকার জন্য বায়না ধরেছিল। আর এর জের ধরে মা স্বপ্না বেগম তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় স্বপ্নাসহ চারজনকে আটক করেছে পুলিশ। আর নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় আশফাক জামান জাহিন নামের আড়াই বছরের এক শিশুকে চারতলার ছাদ থেকে ফেলে দিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’ মা রোকসানা আক্তারের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় মা রোকসানাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
নিহত কাউসার লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চররুহিতা এলাকার কাভার্ড ভ্যান চালক মো. রাসেলের ছেলে। সে স্থানীয় লোকমানিয়া হাফিজিয়া মাদরাসার প্রথম শ্রেণির ছাত্র ছিল।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গাড়িচালক হওয়ায় বেশির ভাগ সময়ই নিহতের বাবা রাসেল লক্ষ্মীপুরের বাইরে থাকেন। গত সোমবার রাতে শিশুটি তার মা স্বপ্নার কাছে ১০ টাকা চায়। এ কারণে তাকে মারধর করা হয়। একপর্যায়ে স্বপ্না তাকে গলা টিপে ধরেন। কিছুক্ষণ পরই কাউছার মারা গেছে বলে স্বপ্না চিত্কার দিয়ে কান্না শুরু করেন। এর আগেও স্বপ্নার একটি কন্যাসন্তানের রহস্যজনক মৃত্যু হয়।
পুলিশ জানায়, রাসেল দ্বিতীয় বিয়ে করার কারণে সংসারে কলহ চলছিল। পরিবারে অর্থনৈতিক সংকটও দেখা দেয়। এ জন্য স্বপ্নার কাছে ১০ টাকা চাইলে ছেলের ওপর ক্ষুব্ধ হন মা। ঘটনার পরে শিশুটিকে ওড়না দিয়ে পেঁচিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা করেছে বলে অপপ্রচার চালানোর চেষ্টা করা হয়।
সদর থানার ওসি মো. আজিজুর রহমান বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে শিশুর মাসহ চারজনকে আটক করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে স্বপ্না শ্বাসরোধে ছেলেকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
এদিকে সোমবার সন্ধ্যায় ফতুল্লার পাগলা পশ্চিম নন্দলালপুর এলাকার আমান উল্লাহ প্রধানের বাড়ির ছাদ থেকে ফেলে শিশু হত্যার ঘটনা ঘটেছে। পরিবারের সদস্যরা বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করলেও রাতে পুলিশ ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’ মা রোকসানাকে গ্রেপ্তার করে।
ফতুল্লা মডেল থানার ওসি আসলাম হোসেন জানান, আমান উল্লাহ প্রধানের বাড়িতে খন্দকার নুরুজ্জামান মারুফ স্ত্রী রোকসানা আক্তার ও তিন সন্তানকে নিয়ে ভাড়া থাকেন। রোকসানা আক্তার মানসিক ভারসাম্যহীন বলে পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় চারতলা বাড়ির ছাদ থেকে শিশু জাহিনকে তার মা রোকসানা আক্তার ফেলে দেন। তাত্ক্ষণিকভাবে শিশুটিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয় পরিবারের সদস্যরা। পরে পুলিশ রোকসানাকে গ্রেপ্তার করে।