টিভি মিডিয়ার জনপ্রিয় অভিনেত্রী ফারহানা মিলি। ক্যারিয়ারের শুরু থেকে নিয়মিত কাজ করে আসছেন তিনি। এর মাঝে ‘মনপুরা’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে ব্যাপক আলোচনায় আসেন। বর্তমান ব্যস্ততা ও অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয় নিয়ে আজকের ‘আলাপন’-এ কথা বলেছেন তিনি। তার সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন মারুফ কিবরিয়া।
কেমন আছেন?
আলহামদুলিল্লাহ। ভালো। কিন্তু অনেক ব্যস্ততার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। টানা শুটিং। দম ফেলার অবস্থা নেই।
এখন কোন কোন নাটকের কাজ চলছে?
এনটিভিতে একটি নাটক প্রচার হচ্ছে। নাম ‘বাক্সবন্দি’। এটি নির্মাণ করছেন নঈম ইমতিয়াজ নেয়ামুল। এছাড়া মারুফ মিঠুর ‘তিনি আসবেন’ বাংলাভিশনে প্রচার হচ্ছে। পাশাপাশি অরণ্য আনোয়ারের ‘দহন’ এটিএন বাংলায় চলছে।
‘উজান গাঙের নাইয়া ২’-তে অভিনয় করেছেন। এর নতুন সিক্যুয়ালে কি আপনাকে দেখা যাবে?
হ্যাঁ, এ নাটকের কাজও শেষ করেছি। চারদিন শুটিং ছিল। আমার অংশের কাজ শেষ। এখন প্রচার হওয়ার অপেক্ষা।
নতুন আর কোন নাটকের কাজ করছেন?
এনটিভির নিজস্ব প্রযোজনায় একটি ধারাবাহিকের শুটিং করছি। হুমায়ূন ফরিদের পরিচালনায় এর নাম ‘পাগলা হাওয়ার দিন’। নাটকটির গল্প খুবই চমৎকার। আমার চরিত্রটিও বেশ দারুণ। আশা করছি দর্শকের ভালো লাগবে।
খ- নাটকে কাজ করছেন না?
ধারাবাহিকের পাশাপাশি খ- নাটকেও অভিনয় করছি। দ্ইু ধরণের নাটকে নিয়মিত সময় দিতে হচ্ছে। এরই মধ্যে দুটি নাটক প্রচারও হয়েছে। আর সামনে ভালোবাসা দিবস ও পহেলা বৈশাখকে ঘিরে নাটকের কাজ করছি।
কি ধরণের চরিত্রে অভিনয় করতে বেশি সাচ্ছন্দ্যবোধ করেন?
আসলে আমি যে ধরণের চরিত্র খুঁজি সেগুলোই আমার কাছে চলে আসে। একজন নারীর বেড়ে ওঠা, সংগ্রামের গল্প, কষ্টের কথা চরিত্রের মাঝে সবসময় ফুটে উঠুক এমনটাই আমার চাওয়া। আর সেসব চরিত্রেই প্রায় অভিনয় করি। তাই এক্ষেত্রে আমি অনেকটা সন্তুষ্ট বলতে পারেন। এক কথায় এমন চরিত্রেই সবসময় অভিনয় করতে চাই যার মাধ্যমে দর্শক হৃদয়ে সারাজীবন মিলির নামটা অবস্থান করে নিতে পারে।
এখনকার নাটক নিয়ে আপনার মূল্যায়ন কি?
নাটকের গল্প ভালো হচ্ছে না, নির্মাণশৈলী ভালো না, দর্শক বিমুখ হচ্ছেনÑএসব হতাশার বাণী আমি বলতে পারবো না। আমি বরাবরই পজিটিভ। অনেক চ্যানেল, অনেক নাটকÑ ভালো যেমন হবে খারাপটাও হবে। এ নিয়ে হতাশ হলে তো চলবে না। অন্যদিকে অনেকে বেশি বিজ্ঞাপনের দোষও দেন। কিন্তু বিজ্ঞাপন ছাড়া তো চ্যানেল চালানো যাবে না। এসব নিয়ে অনেক তর্ক বিতর্ক হচ্ছে। গবেষণা হচ্ছে। আমি খারাপের আগে ভালোটার কথা চিন্তা করি। সমস্যা যদি হয়ে থাকে তার সমাধান তো হবেই। আমাদের নাটকে একসময় সুদিন আসবে। দুঃচিন্তার কিছু নেই। চিন্তা না করে ঘাটতি কি আছে সেটা বের করা উচিৎ সবার।
আপনার মতে কিসের ঘাটতি আছে বলে মনে হয়?
নাটক নির্মাণ হচ্ছে ভালোবাসা কিংবা পরিবার কেন্দ্রিক। অনুষ্ঠান নির্মাণ হচ্ছে তারকানির্ভর। কিন্তু এসবের মাঝে শিশুদের চলচ্চিত্র, নাটক, কিংবা কোন অনুষ্ঠান নির্মাণ খুব কম দেখি। আমাদের শিশুরা অনলাইন আর ভিডিও গেমস-এর ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে। সিসিমপুর, ডোরেমন, এসব দেখা যাচ্ছে। তাও কয়েকটি চ্যানেলে। এতগুলো চ্যানেলে শুধু এই কয়টি অনুষ্ঠান খুবই কম হয়ে যায়। শিশুদের জানার দুনিয়াকে বাড়াতে সব চ্যানেলে একাগ্রতা খুবই দরকার বলে আমি মনে করি।
এক চলচ্চিত্রের পর আর বড়পর্দায় দেখা মেলেনি। নতুন করে কি দেখা যাবে না?
অবশ্যই দেখা যাবে। আমি তো প্রস্তুত চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য। ভালো গল্প ও চরিত্রের সমন্বয় হলে যেকোন সময় চলচ্চিত্রে আসবো আবার।
শুটিংয়ের বাইরের সময়টা কিভাবে কাটে?
বাসায় থাকি। বন্ধু আড্ডা এসবের সময় একদমই হয় না। শুটিং শেষ করতে করতে রাত হয়ে যায়। বাসায় গিয়ে ছেলের পেছনে পুরোটা সময় থাকতে হয়। আর ছেলের বাবা তো রয়েছেই। এছাড়া নিজের নাটকের স্ত্রিপ্টও পড়ি।
সবমিলিয়ে ব্যক্তিজীবন কেমন কাটছে?
আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো আছি। আমার ছেলে রুসলান ধীরে ধীরে বড় হচ্ছে। ওর জন্য সবাই দোয়া করবেন। সবমিলিয়ে স্বামী-সন্তান নিয়ে আমি বেশ ভালো আছি।