মিষ্টান্নের মধ্যে দই অত্যন্ত জনপ্রিয়। এর প্রচলন প্রায় ৪ হাজার ৫০০ বছর ধরে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত দুই বেলা দই খাওয়ায় রাশিয়ার মানুষের গড় আয়ু তুলনামুলক বেশি হয়ে থাকে।
এটি এক ধরনের দুগ্ধজাত খাবার যা দুধের ব্যাক্টেরিয়া গাঁজন হতে প্রস্তুত করা হয়। ল্যাক্টোজেন গাঁজনের মাধ্যমে ল্যাক্টিক এসিড তৈরি করা হয়। যা দুধের প্রোটিনের ওপর কাজ করে দইয়ের স্বাদ ও এর বৈশিষ্ট্যপূর্ণ গন্ধ প্রদান করে।
মিষ্টি এবং টক দইয়ের ভিন্ন স্বাদ হয়ে থাকে। পুষ্টিমানের ভিত্তিতেও দুয়ের মধ্যে বেশ অমিল রয়েছে। টক দই ও মিষ্টি দইয়ের মধ্যে একটি অন্যতম পার্থক্য রয়েছে, তা হলো গ্রিক ইয়োগার্টে মিষ্টি দইয়ের চাইতে দ্বিগুণ প্রোটিন থাকে।
প্রস্তুতিপর্ব আলাদা
দুটোরই মূল উপাদান দুধ। টক দই তৈরি হয় দুধের সঙ্গে এসিডিক পদার্থ মিশিয়ে। যেমন- লেবুর রস বা ভিনেগার দিয়ে তৈরি করা হয়। আর মিষ্টি দই বানানো হয় দুধে ব্যাকটেরিয়ার গাঁজন প্রক্রিয়ায়। এটি তৈরি করতে নির্দিষ্ট পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়। যাতে থাকে ল্যাক্টোব্যাসিলাস বুলগারিকাস এবং স্ট্রেপ্টোককাস থার্মোফাইলস।
দই ভিন্ন ভিন্ন ফ্লেভারের হয়ে থাকে
অনেক ফ্লেভারের হয়ে থাকে দই । আম, স্ট্রবেরি, বুলুবেরি, পিচ, কিউয়ি, ভ্যানিলা ইত্যাদি ফ্লেভার মিশিয়ে স্বাদে এবং গন্ধে ভিন্নতা মিলতে পারে। টক দই সাধারণত একই ফ্লেভারের হয়ে থাকে। অর্থাৎ, ফ্লেভারের জন্যে এতে অন্য কিছু মেশানো হয় না।
মিষ্টি দইয়ের উপকারিতা
বিভিন্ন খাবারের ক্ষতিকর উপাদান থেকে নিষ্কৃতি দিয়ে আপনার পাকস্থলীকে ঠাণ্ডা রাখতে দই বেশ উপকারী। নিয়মিত দই খেয়ে ত্বক ও চুলের সমস্যা থেকে রেহাই পেতে পারেন। দইয়ে থাকা ক্যালসিয়াম, আয়রন, পটাশিয়াম, ভিটামিন বি ৬ পাকস্থলী সহজে গ্রহণ করে। তাই ভালো হজমের জন্য মিষ্টি দই খাওয়ার পরামর্শ দেন পুষ্টিবিদরা। এতে প্রচুর উপকারী ব্যাকটেরিয়া থাকে বলে বদহজম, কোষ্ঠকাঠিন্য ও অ্যাসিডিটি দূর করে। এতে প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিডেন্টও থাকে।
টক দইয়ের উপকারিতা
টক দই বা গ্রিক ইয়োগার্টে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে। যা শরীরের বড় সব মাংসপেশি গঠনে সহায়তা করে। যারা ওজন কমাতে চান, তাদের জন্য টক দই খুবই উপকারী। প্রতিদিন টক দই খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে রোগ দূর হয়। এতে থাকা উপকারী ফ্যাট আপনার হৃদযন্ত্রকে ভালো রাখবে।
টক দই থেকে ভালো উপকার পেতে চিনিমুক্ত গ্রিক ইয়োগার্ট বেছে নিন। এক্ষেত্রে যারা ল্যাকটোজ ইনটলারেন্ট বা দুধ পছন্দ করেন না বা হজম করতে পারেন না। তারা টক দই খেতে পারেন। যেহেতু দুধের ল্যাকটোজকে ল্যাকটিক অ্যাসিডে রূপান্তর করা হয়, তাই টক দই সহজে হজম হয়।