ঢাকা ১০:৪৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিশ্ব হার্ট দিবস ও আমাদের করণীয়

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৭:২০:৪২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯
  • ২৩১ বার

বিশ্ব হার্ট দিবস আজ। বিশ্বজুড়ে হৃদরোগ বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বিশ্বের অন্যান্য দেশসহ বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হচ্ছে।

স্বাস্থ্যবিষয়ক দিনগুলোর মধ্যে অন্যতম বড়দিন হলো- বিশ্ব হার্ট দিবস। প্রতিবছর ২৯ সেপ্টেম্বর বিশ্ব হার্ট দিবস পালিত হয়। হৃদরোগ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য ওয়ার্ল্ড হার্ট ফেডারেশনের বৃহত্তম একটি দিন এটি।

প্রথম বিশ্ব হার্ট দিবসটি পালন করা হয় ২০০০ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর এবং ২০১০ সাল পর্যন্ত প্রতিবছর সেপ্টেম্বরের শেষ রবিবার বিশ্ব হার্ট দিবস হিসেবে পালন করা হত।

আরো পড়ুন>>> হার্ট অ্যাটাকের আগে দেহের ৭ সিগনাল

পরবর্তীকালে ২০১১ সাল থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর দিনটি বিশ্ব হার্ট দিবস হিসেবে পালন করা শুরু হয়। বর্তমানে হৃদরোগ বিশ্বের এক নম্বর ঘাতক ব্যাধি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রতিবছর প্রায় পৌনে ২ কোটি মানুষের মৃত্যু হয় এই রোগে, যা ২০৩০ সাল নাগাদ ২ কোটি ৩০ লাখ ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বিশ্ব হার্ট দিবসের এ বছরের প্রতিপাদ্য হলো- ‘আমার হার্ট, তোমার হার্ট’। এই প্রতিপাদ্যের মূল কথা হলো- হার্টের সুস্থতার জন্য একতাবদ্ধ হওয়া। অর্থাৎ নিজের হার্টের পাশাপাশি আপনজন ও অন্যদের হার্টেরও যত্ন নেয়া। বিশ্ব হার্ট দিবস স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন পালন করতে আমাদের উদ্বুদ্ধ করে। এ বছরের বিশ্ব হার্ট দিবসের মূল বিষয়ও তাই। এই দিন নিজের কাছে প্রতিশ্রুতি পালনের দিন। নিজেকে আরো সক্রিয় রাখা, আরো বেশি ব্যায়াম করা, আরো বেশি করে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার অঙ্গীকার করা এবং ধূমপান ছাড়া আজকের দিনের মূলমন্ত্র হওয়া উচিত।

স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় হার্ট সুস্থ রাখাই বিশ্ব হার্ট দিবসের মূল প্রচারণা। পাশাপাশি নীতি-নির্ধারকদের জন্যও এই দিনটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ, যাতে নানা হৃদরোগ ও তার চিকিৎসা নিয়ে সাধারণ মানুষ আরো বেশি সচেতন হয়। যদি আপনার হৃদরোগের পারিবারিক ইতিহাস থাকে, তবে এর অর্থ হলো, আপনারও হৃদরোগের ঝুঁকি রয়েছে। ধূমপান, জাঙ্ক ফুড এবং ব্যায়ামের অভাব এই ঝুঁকি আরো বাড়িয়ে তোলে।

আরো পড়ুন>>> নারীর হৃদরোগের লক্ষণ

নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং সুস্থ জীবনযাপন করে আপনি আপনার নিজের হার্টের যত্ন নিতে পারেন। হৃদরোগে ভোগা ব্যক্তিদের অবশ্যই নিয়মিতভাবে রক্তচাপ ও কোলেস্টেরলের মাত্রা যাচাই করা উচিত। হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের খাবারের ধরন ও পরিমাণ নিয়ে সচেতন হতে হবে। খাদ্যের মধ্যে আরো বেশি সবজি এবং ফল অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। আপনার হার্টের যত্ন নেয়ার জন্য এমন খাবার খেতে হবে, যাতে তেল-চর্বির মাত্রা কম রয়েছে।

বর্তমানে হৃদরোগ বাংলাদেশে আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েই চলেছে। তাই এ রোগ প্রতিরোধে সবার আগে হৃদ-স্বাস্থ্যের ঝুঁকি সম্পর্কে অবগত হয়ে সতর্ক থাকতে হবে। যে কোনো রোগ প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধই উত্তম। হৃদরোগের ক্ষেত্রে তা বেশি প্রযোজ্য। এ বছর বিশ্ব হার্ট দিবস পালনের মধ্য দিয়ে হৃদরোগ প্রতিরোধে আমাদের হার্টের যত্ন নেয়ার জন্য কয়েকটা বিষয়ের ওপর বিশেষভাবে গুরুত্ব আরোপ করা হচ্ছে। সেগুলো হলো, নিজের হার্টের যেমন যত্ন নিতে হবে, তেমনি অন্যের হার্টেরও যত্ন নিতে হবে।

দিবসটি পালনের মাধ্যমে সাধারণ জনগণের মধ্যে হৃদরোগ সম্পর্কে সচেতন হওয়ার বার্তা পৌঁছানো হয়। তাই এ বছরের বিশ্ব হার্ট দিবসের প্রতিপাদ্য ‘আমার হার্ট, তোমার হার্ট’ বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ।

হার্ট সুস্থ রাখার সাধারণ নিয়ম-কানুন : ধূমপান বর্জন করতে হবে। খাবারে অতিরিক্ত লবণ খাওয়া উচিত নয়। বিশেষ করে, যাদের উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে, তাদের উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে খাবারে অতিরিক্ত লবণ পরিহার অপরিহার্য। শরীরের জন্য যা উপকারী, সেসব খাবার খান। সব সময় সুষম খাবার খাওয়া উচিত। শস্যজাতীয় খাবার যেমন শস্য থেকে তৈরি রুটি খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য বেশ উপকারী। তাই প্রতিদিনের খাবারে এগুলো খাওয়ার চেষ্টা করুন।

প্রতিদিন টাটকা শাকসবজি ও ফলমূল খাওয়ার অভ্যাস করুন। তেল হচ্ছে আমাদের নিত্যদিনের খাবারের এক অপরিহার্য উপাদান। চর্বি আমাদের শরীরের এক প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান। পরিমিত চর্বিযুক্ত খাবার আমাদের শরীরে শক্তি জোগায়। কিন্তু অতিরিক্ত তেলে ভাজা বা চর্বিযুক্ত খাবার হার্টের জন্য ক্ষতিকর। প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট শরীরচর্চা করা উচিত। ৪০ বছর বয়সের পর নিয়মিত পরীক্ষা করে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, রক্তে উচ্চ মাত্রার কোলেস্টেরল আছে কিনা, দেখতে হবে এবং সে অনুযায়ী চিকিৎসা নিয়ে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। বিশ্ব হার্ট দিবস ২০১৯-এ এসব নিয়ম-কানুন পালনে আমাদের সবাইকে অঙ্গীকার করতে হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

বিশ্ব হার্ট দিবস ও আমাদের করণীয়

আপডেট টাইম : ০৭:২০:৪২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯

বিশ্ব হার্ট দিবস আজ। বিশ্বজুড়ে হৃদরোগ বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বিশ্বের অন্যান্য দেশসহ বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হচ্ছে।

স্বাস্থ্যবিষয়ক দিনগুলোর মধ্যে অন্যতম বড়দিন হলো- বিশ্ব হার্ট দিবস। প্রতিবছর ২৯ সেপ্টেম্বর বিশ্ব হার্ট দিবস পালিত হয়। হৃদরোগ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য ওয়ার্ল্ড হার্ট ফেডারেশনের বৃহত্তম একটি দিন এটি।

প্রথম বিশ্ব হার্ট দিবসটি পালন করা হয় ২০০০ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর এবং ২০১০ সাল পর্যন্ত প্রতিবছর সেপ্টেম্বরের শেষ রবিবার বিশ্ব হার্ট দিবস হিসেবে পালন করা হত।

আরো পড়ুন>>> হার্ট অ্যাটাকের আগে দেহের ৭ সিগনাল

পরবর্তীকালে ২০১১ সাল থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর দিনটি বিশ্ব হার্ট দিবস হিসেবে পালন করা শুরু হয়। বর্তমানে হৃদরোগ বিশ্বের এক নম্বর ঘাতক ব্যাধি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রতিবছর প্রায় পৌনে ২ কোটি মানুষের মৃত্যু হয় এই রোগে, যা ২০৩০ সাল নাগাদ ২ কোটি ৩০ লাখ ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বিশ্ব হার্ট দিবসের এ বছরের প্রতিপাদ্য হলো- ‘আমার হার্ট, তোমার হার্ট’। এই প্রতিপাদ্যের মূল কথা হলো- হার্টের সুস্থতার জন্য একতাবদ্ধ হওয়া। অর্থাৎ নিজের হার্টের পাশাপাশি আপনজন ও অন্যদের হার্টেরও যত্ন নেয়া। বিশ্ব হার্ট দিবস স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন পালন করতে আমাদের উদ্বুদ্ধ করে। এ বছরের বিশ্ব হার্ট দিবসের মূল বিষয়ও তাই। এই দিন নিজের কাছে প্রতিশ্রুতি পালনের দিন। নিজেকে আরো সক্রিয় রাখা, আরো বেশি ব্যায়াম করা, আরো বেশি করে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার অঙ্গীকার করা এবং ধূমপান ছাড়া আজকের দিনের মূলমন্ত্র হওয়া উচিত।

স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় হার্ট সুস্থ রাখাই বিশ্ব হার্ট দিবসের মূল প্রচারণা। পাশাপাশি নীতি-নির্ধারকদের জন্যও এই দিনটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ, যাতে নানা হৃদরোগ ও তার চিকিৎসা নিয়ে সাধারণ মানুষ আরো বেশি সচেতন হয়। যদি আপনার হৃদরোগের পারিবারিক ইতিহাস থাকে, তবে এর অর্থ হলো, আপনারও হৃদরোগের ঝুঁকি রয়েছে। ধূমপান, জাঙ্ক ফুড এবং ব্যায়ামের অভাব এই ঝুঁকি আরো বাড়িয়ে তোলে।

আরো পড়ুন>>> নারীর হৃদরোগের লক্ষণ

নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং সুস্থ জীবনযাপন করে আপনি আপনার নিজের হার্টের যত্ন নিতে পারেন। হৃদরোগে ভোগা ব্যক্তিদের অবশ্যই নিয়মিতভাবে রক্তচাপ ও কোলেস্টেরলের মাত্রা যাচাই করা উচিত। হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের খাবারের ধরন ও পরিমাণ নিয়ে সচেতন হতে হবে। খাদ্যের মধ্যে আরো বেশি সবজি এবং ফল অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। আপনার হার্টের যত্ন নেয়ার জন্য এমন খাবার খেতে হবে, যাতে তেল-চর্বির মাত্রা কম রয়েছে।

বর্তমানে হৃদরোগ বাংলাদেশে আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েই চলেছে। তাই এ রোগ প্রতিরোধে সবার আগে হৃদ-স্বাস্থ্যের ঝুঁকি সম্পর্কে অবগত হয়ে সতর্ক থাকতে হবে। যে কোনো রোগ প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধই উত্তম। হৃদরোগের ক্ষেত্রে তা বেশি প্রযোজ্য। এ বছর বিশ্ব হার্ট দিবস পালনের মধ্য দিয়ে হৃদরোগ প্রতিরোধে আমাদের হার্টের যত্ন নেয়ার জন্য কয়েকটা বিষয়ের ওপর বিশেষভাবে গুরুত্ব আরোপ করা হচ্ছে। সেগুলো হলো, নিজের হার্টের যেমন যত্ন নিতে হবে, তেমনি অন্যের হার্টেরও যত্ন নিতে হবে।

দিবসটি পালনের মাধ্যমে সাধারণ জনগণের মধ্যে হৃদরোগ সম্পর্কে সচেতন হওয়ার বার্তা পৌঁছানো হয়। তাই এ বছরের বিশ্ব হার্ট দিবসের প্রতিপাদ্য ‘আমার হার্ট, তোমার হার্ট’ বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ।

হার্ট সুস্থ রাখার সাধারণ নিয়ম-কানুন : ধূমপান বর্জন করতে হবে। খাবারে অতিরিক্ত লবণ খাওয়া উচিত নয়। বিশেষ করে, যাদের উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে, তাদের উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে খাবারে অতিরিক্ত লবণ পরিহার অপরিহার্য। শরীরের জন্য যা উপকারী, সেসব খাবার খান। সব সময় সুষম খাবার খাওয়া উচিত। শস্যজাতীয় খাবার যেমন শস্য থেকে তৈরি রুটি খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য বেশ উপকারী। তাই প্রতিদিনের খাবারে এগুলো খাওয়ার চেষ্টা করুন।

প্রতিদিন টাটকা শাকসবজি ও ফলমূল খাওয়ার অভ্যাস করুন। তেল হচ্ছে আমাদের নিত্যদিনের খাবারের এক অপরিহার্য উপাদান। চর্বি আমাদের শরীরের এক প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান। পরিমিত চর্বিযুক্ত খাবার আমাদের শরীরে শক্তি জোগায়। কিন্তু অতিরিক্ত তেলে ভাজা বা চর্বিযুক্ত খাবার হার্টের জন্য ক্ষতিকর। প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট শরীরচর্চা করা উচিত। ৪০ বছর বয়সের পর নিয়মিত পরীক্ষা করে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, রক্তে উচ্চ মাত্রার কোলেস্টেরল আছে কিনা, দেখতে হবে এবং সে অনুযায়ী চিকিৎসা নিয়ে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। বিশ্ব হার্ট দিবস ২০১৯-এ এসব নিয়ম-কানুন পালনে আমাদের সবাইকে অঙ্গীকার করতে হবে।