বৈবাহিক জীবনে সুখী হওয়ার মূলমন্ত্র হচ্ছে যৌনজীবনে সক্ষমতা অর্জন করা। যৌন অক্ষমতা সঙ্গী বা সঙ্গিনী উভয়ের মনেই এক ধরণের হতাশার সৃষ্টি করে। যার কারণে তারা ঝুঁকে পড়ে অন্য নারী বা পুরুষে। ভেঙে যায় সংসার। যৌন অক্ষমতা নারী পুরুষ উভয়েরই থাকে। কিন্তু সমাজে যৌন অক্ষমতার প্রশ্নটি ওঠে শুধু পুরুষকে ঘিরেই। পুরুষের এই যৌন অক্ষমতা কারো ক্ষেত্রে জন্মগত। কারো ক্ষেত্রে আবার দীর্ঘদিনের খাদ্যাভাস থেকে এই সমস্যার সৃষ্টি হয়।
অনেক পুরুষের ক্ষেত্রে টেস্টোস্টেরন নামক হরমোন কমে গেলে যৌন চাহিদা হ্রাস পায়। তাই যে খাবারের কারণে এই হরমোনের মাত্রা কমে যায় সেগুলি থেকে পুরুষের যৌনইচ্ছাও কমে যেতে পারে। এমনকি কমতে পারে সন্তান জন্ম দেয়ার সক্ষমতাও। আসুন তবে কোন খাদ্যাভাসগুলো এতো বড় ক্ষতি করছে পুরুষের যৌন স্বাস্থ্যের।
সয়াজাতীয় খাবারঃ অতিরিক্ত সয়াজাতীয় খাবার খেলে পুরুষের যৌন আকাঙ্ক্ষা ও সক্ষমতা কমে যায়। সয়া থেকে যে সমস্ত খাবার তৈরি হয় যেমন সয়াসস, সয়ামিল্ক এগুলি ব্যাপক হারে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা কমিয়ে দেয়। ফলে কমে যায় যৌন চাহিদা ও সক্ষমতা। গবেষকেরা বলছেন, যারা দিনে অন্তত ১২০ গ্রাম সয়া খান তাদের শরীরে টেস্টোস্টেরন কমে যায়। আর যেসব পুরুষ সন্তান গ্রহনের কথা ভাবছেন তারা এই খাবার খাদ্যাতালিকা থেকে একেবারে বাদ দিন। সয়া পুরুষের শুক্রাণুর পরিমাণও কমিয়ে দেয়।
কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা জাতীয় খাবারঃ যেকোনো ধরনের রিফাইন কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা জাতীয় খাবারও যৌনচাহিদা ও সক্ষমতা কমিয়ে দিতে পারে। বিভিন্ন ধরনের ক্র্যাকার্সে শর্করার পরিমাণ সবচেয়ে বেশি থাকে। অতিরিক্ত রিফাইনড কার্বোহাইড্রেট টেস্টোস্টেরনের মাত্রাও কমিয়ে দেয। এছাড়াও এগুলো থেকে ওজন বৃদ্ধি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এগুলো শরীরে ইস্ট্রোজেনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।
অতিরিক্ত মদ্য পানঃ অতিরিক্ত মদ পান যৌন চাহিদা ও সক্ষমতার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিকারক। এটি যৌন জীবনেও মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। ইরেক্টাইলের সমস্যাসহ অর্গাজম না হওয়া, এমনকি যৌন মিলনে অক্ষমতার জন্য দায়ী অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবন। তাছাড়া অ্যালকোহল ও রিচ ফুড সবসময় মানুষকে তন্দ্রাচ্ছান্ন করে রাখে। ফলে যৌন মিলনের উৎসাহ হারিয়ে যায়।
লাল মাংসঃ যে খাবারে অতিরিক্ত হরমোন বা অ্যান্টিবায়োটিক রয়েছে সেগুলি না খাওয়াই ভাল। যেমন কিছু লাল মাংসে প্রচুর হরমোন থাকে। এর ফলে লাল মাংস খেলেই শরীরে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়। তবে যদি নিয়ন্ত্রিত মাত্রায় খাওয়া যায় তবে তা উপযোগীও বটে। লাল মাংস জিঙ্ক এবং প্রোটিনের অন্যতম উৎস। প্রোটিন এবং জিঙ্ক দুটিই শরীরের মেদ কমায় এবং পেশী গঠনে সাহায্য করে।
অতিরিক্ত খাদ্য গ্রহণঃ প্রয়োজনের তুলনায় বেশি খাবার খাওয়ার ফলে স্বাভাবিকভাবেই ওজন বেড়ে যায়। ওজন বৃদ্ধির ফলে যৌনইচ্ছা হ্রাস পায়। যেকোনো ধরনের খাবারই অতিরিক্ত খেলে তা যৌন আকাঙ্খা ও সক্ষমতার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। খাওয়ার পরিমাণের উপর মানুষের বয়স বাড়াও নির্ভর করে। যাদের বয়স ৩৫ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে তাদের ওজন দ্রুত বাড়ে। শরীর বয়সের আগেই বৃদ্ধ হয়ে যায়। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই যৌন চাহিদাও কমে আসে।
বর্তমানে বেশিরভাগ পুরুষই যৌনাকাঙ্খা কম হওয়ার এবং প্রজনন অক্ষমতার সমস্যায় ভোগেন। এর পেছনে মূল কারণই হচ্ছে খাদ্যাভ্যাস। খারাপ খাদ্যাভ্যাস পুরুষের শরীরে ও প্রজনন স্বাস্থ্যে মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। বিশেষ করে বয়স বাড়তে থাকলে এর প্রকোপ আরও বেশি বেড়ে যায়। তাই যে ধরনের খাবার যৌনচাহিদা কমিয়ে দেয় সেগুলো থেকে দূরে থাকাই শ্রেয়।