হাওর বার্তা ডেস্কঃ সশস্ত্র সংঘাত ও নাশকতার মাধ্যেমে গণতান্ত্রিক কাঠামোকে উৎখাত করে উগ্রবাদী শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করার টার্গেট করেছিল ‘আল্লাহর দল বা আল্লাহর সরকার’ নামে জঙ্গি সংগঠনের সদস্যরা। সংগঠনটি তাদের সদস্যদের সশস্ত্র প্রশিক্ষণের ঝামেলা এড়াতে বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত বা চাকরিচ্যুত সদস্যদের দলে ভেড়ানোর পরিকল্পনা করে।
সোমবার (১৯ আগস্ট) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এমরানুল হাসান।
রোববার গোপন তথ্যের ভিত্তিতে সংগঠনটির নেতৃত্বে থাকা ইব্রাহিম আহমেদ হিরোসহ (৪৬) চার সদস্যকে আটক করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। আটকরা হলেন- আব্দুল আজিজ (৫০), শফিকুল ইসলাম সুরুজ (৩৮), রশিদুল ইসলাম (২৮)।
‘আল্লাহর দল’ নামের জঙ্গি সংগঠনটি প্রসঙ্গে এমরানুল হাসান বলেন, সংগঠনটি ১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠা হয়। জঙ্গি মতিন মেহেদী মমিনুল ইসলাম ওরফে মতিন মাহবুবের নেতৃত্বে এ সংগঠন গড়ে ওঠে। ২০০৪ সালের শেষের দিকে তিনি সংগঠনটিকে জেএমবির সঙ্গে যুক্ত করেন। সারাদেশে সিরিজ বোমা হামলার ওই সংগঠনও অংশ নেয়।পরে জেএমবি নেতৃত্বশূন্য হয়ে সাংগঠনিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়লে জঙ্গি মেহেদী তার মূল সংগঠনটি নিয়ে জেএমবি ত্যাগ করেন। পরে নিজের সংগঠনকে পুনঃজাগরণের চেষ্টা করেন। মতিন মেহেদী ২০০৭ সালে গ্রেফতার হলে তাকেই আমির মান্য করে ওই সংগঠন নতুন করে পরিচালিত হচ্ছে।
র্যাব মুখপাত্র আরও জানান, বর্তমানে এই জঙ্গি সংগঠনটিকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ইব্রাহিম আহমেদ হিরো।
এমরানুল হাসান আরও জানান, স্বাভাবিক জঙ্গি সংগঠনের তুলনায় এদের অবকাঠামো বিন্যাস কিছুটা ভিন্ন। গ্রাম পর্যায়ে নায়ক থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ পদ তারকা হিসেবে তারা চিহ্নিত করেছে। এদের অধিনায়ক, উপ-অধিনায়ক, অতিরিক্ত অধিনায়ক পদ রয়েছে। সংগঠনটি সশস্ত্র প্রশিক্ষণের ঝামেলা এড়াতে বিভিন্ন বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত চাকরিচ্যুত সদস্যদের যুক্ত করার চেষ্টা করে।
র্যাব জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় তারা বিজিবির চাকরিচ্যুত সদস্যদের দলের টানতে অগ্রাধিকার দিয়ে পরিকল্পনা করেছে। তবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারির ফলে তাদের কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হয়।
২০০৪ সালে ৮ জন, সাম্প্রতিক সময়ে খুলনা থেকে ৩ জন, ঢাকা থেকে ৪ জন, রংপুর থেকে ৩ জনসহ এ জঙ্গি সংগঠনের মোট ১৮ জন সদস্যকে বিভিন্ন সময়ে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
সর্বশেষ আটক চার জনের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। তাদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তাদের কার্যক্রমের বিষয়ে আরও স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাবে বলেও জানান র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক।