ঢাকা ০২:৪১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৯ দিনে ৭২ কোটি ডলার রেমিট্যান্স

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৫:৩৫:৪৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ অগাস্ট ২০১৯
  • ২৪৩ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কোরবানির ঈদ সামনে রেখে বিপুল রেমিট্যান্স (বিদেশে থাকা বাংলাদেশিদের পাঠানো অর্থ) পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। আর এ কারণে চলতি আগস্ট মাসের নয় দিনেই ৭২ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স দেশে এসেছে। এর আগে এত কম সময়ে এ পরিমাণ রেমিট্যান্স কখনো আসেনি। কোরবানির ঈদে বেশি অর্থ দেশে পাঠানোয় রেমিট্যান্স বেড়েছে বলে মনে করছেন ব্যাংকাররা। এছাড়া সরকার রেমিট্যান্সে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা দেওয়ায় ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে বলেও মনে করা হচ্ছে।

গত বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংক প্রকাশিত রেমিট্যান্স সংক্রান্ত তথ্যে এ চিত্র উঠে এসেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের শুরু থেকেই রেমিট্যান্স প্রবাহ ভালো ছিল। অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ১৬০ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স পাঠান প্রবাসীরা। এটা ছিল মাসের হিসাবে বাংলাদেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এছাড়া চলতি আগস্ট মাসের শুরুতেও বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। ১২ আগস্ট কোরবানির ঈদ উদযাপিত হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, ১ আগস্ট থেকে ৯ আগস্ট পর্যন্ত ৭১ কোটি ৬২ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে বাংলাদেশে। রোজার ঈদ সামনে রেখে প্রবাসীরা দেশে বেশি অর্থ পাঠানোয় মে মাসে ১৭৫ কোটি ৫৮ লাখ ডলার রেমিট্যান্সে আসে। এ পরিমাণ ছিল মাসের হিসাবে বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। তার আগে এক মাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছিল চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে, ১৫৯ কোটি ৭২ লাখ ডলার। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে আগের বছরের চেয়ে ৯ দশমিক ৬০ শতাংশ রেমিট্যান্স বেশি পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, চলতি অর্থবছরেও ভালো প্রবৃদ্ধি নিয়ে শুরু হয়েছে। কোরবানির ঈদ ঘিরে বেশি টাকা পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, আগস্ট মাসের প্রথম নয় দিনে ৭২ কোটি ডলার এসেছে। এর মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ছয় বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ১৭ কোটি ৩২ লাখ ডলার। কৃষি ব্যাংকে এসেছে ১ কোটি ২২ লাখ ডলার, ৪০ বেসরকারি ব্যাংক এনেছে ৫২ কোটি ৮৪ লাখ ডলার। আর নয়টি বিদেশি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ২৩ লাখ ৫০ হাজার ডলার।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এক হাজার ৬৪১ কোটি ৯৬ লাখ (১৬.৪২ বিলিয়ন) ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। এই অঙ্ক অতীতের যে কোনো বছরের চেয়ে বেশি।

২০১৭-১৮ অর্থবছরে এক হাজার ৪৯৮ কোটি ১৭ লাখ (১৪.৯৮ বিলিয়ন) ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। ওই অঙ্ক ২০১৬-১৭ অর্থবছরের চেয়ে ১৭ দশমিক ৩২ শতাংশ বেশি ছিল।

স্থানীয় বাজারে ডলারের তেজিভাব এবং হুন্ডি ঠেকাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নানা উদ্যোগের ফলে বেশ কিছুদিন ধরেই রেমিট্যান্স বাড়ছে বলে মনে করছেন ব্যাংকাররা।

এদিকে নতুন বাজেটে রেমিট্যান্সে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ঘোষণা অনুযায়ী, ১ জুলাই থেকে প্রবাসীরা ১০০ টাকা দেশে পাঠালে ২ টাকা প্রণাদনা পাবেন। বাজেটে এ জন্য ৩ হাজার ৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো রেমিট্যান্সে এ ধরনের প্রণাদনা দেওয়া হচ্ছে। গত ৬ আগস্ট প্রকাশিত বাংলাদেশ ব্যাংকের এ সংক্রান্ত নীতিমালায় বলা হয়েছে, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে প্রণোদনা পেতে ১ হাজার ৫০০ ডলার পর্যন্ত কোনো কাগজপত্র লাগবে না। তবে রেমিট্যান্সের পরিমাণ এই অঙ্কের বেশি হলে প্রয়োজনীয় কাগজ দাখিল করতে হবে।

বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি হলো রেমিট্যান্স। বর্তমানে এক কোটির বেশি বাংলাদেশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মরত রয়েছেন। জিডিপিতে তাদের পাঠানো অর্থের অবদান প্রায় ১২ শতাংশ।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

৯ দিনে ৭২ কোটি ডলার রেমিট্যান্স

আপডেট টাইম : ০৫:৩৫:৪৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ অগাস্ট ২০১৯

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কোরবানির ঈদ সামনে রেখে বিপুল রেমিট্যান্স (বিদেশে থাকা বাংলাদেশিদের পাঠানো অর্থ) পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। আর এ কারণে চলতি আগস্ট মাসের নয় দিনেই ৭২ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স দেশে এসেছে। এর আগে এত কম সময়ে এ পরিমাণ রেমিট্যান্স কখনো আসেনি। কোরবানির ঈদে বেশি অর্থ দেশে পাঠানোয় রেমিট্যান্স বেড়েছে বলে মনে করছেন ব্যাংকাররা। এছাড়া সরকার রেমিট্যান্সে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা দেওয়ায় ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে বলেও মনে করা হচ্ছে।

গত বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংক প্রকাশিত রেমিট্যান্স সংক্রান্ত তথ্যে এ চিত্র উঠে এসেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের শুরু থেকেই রেমিট্যান্স প্রবাহ ভালো ছিল। অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ১৬০ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স পাঠান প্রবাসীরা। এটা ছিল মাসের হিসাবে বাংলাদেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এছাড়া চলতি আগস্ট মাসের শুরুতেও বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। ১২ আগস্ট কোরবানির ঈদ উদযাপিত হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, ১ আগস্ট থেকে ৯ আগস্ট পর্যন্ত ৭১ কোটি ৬২ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে বাংলাদেশে। রোজার ঈদ সামনে রেখে প্রবাসীরা দেশে বেশি অর্থ পাঠানোয় মে মাসে ১৭৫ কোটি ৫৮ লাখ ডলার রেমিট্যান্সে আসে। এ পরিমাণ ছিল মাসের হিসাবে বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। তার আগে এক মাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছিল চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে, ১৫৯ কোটি ৭২ লাখ ডলার। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে আগের বছরের চেয়ে ৯ দশমিক ৬০ শতাংশ রেমিট্যান্স বেশি পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, চলতি অর্থবছরেও ভালো প্রবৃদ্ধি নিয়ে শুরু হয়েছে। কোরবানির ঈদ ঘিরে বেশি টাকা পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, আগস্ট মাসের প্রথম নয় দিনে ৭২ কোটি ডলার এসেছে। এর মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ছয় বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ১৭ কোটি ৩২ লাখ ডলার। কৃষি ব্যাংকে এসেছে ১ কোটি ২২ লাখ ডলার, ৪০ বেসরকারি ব্যাংক এনেছে ৫২ কোটি ৮৪ লাখ ডলার। আর নয়টি বিদেশি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ২৩ লাখ ৫০ হাজার ডলার।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এক হাজার ৬৪১ কোটি ৯৬ লাখ (১৬.৪২ বিলিয়ন) ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। এই অঙ্ক অতীতের যে কোনো বছরের চেয়ে বেশি।

২০১৭-১৮ অর্থবছরে এক হাজার ৪৯৮ কোটি ১৭ লাখ (১৪.৯৮ বিলিয়ন) ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। ওই অঙ্ক ২০১৬-১৭ অর্থবছরের চেয়ে ১৭ দশমিক ৩২ শতাংশ বেশি ছিল।

স্থানীয় বাজারে ডলারের তেজিভাব এবং হুন্ডি ঠেকাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নানা উদ্যোগের ফলে বেশ কিছুদিন ধরেই রেমিট্যান্স বাড়ছে বলে মনে করছেন ব্যাংকাররা।

এদিকে নতুন বাজেটে রেমিট্যান্সে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ঘোষণা অনুযায়ী, ১ জুলাই থেকে প্রবাসীরা ১০০ টাকা দেশে পাঠালে ২ টাকা প্রণাদনা পাবেন। বাজেটে এ জন্য ৩ হাজার ৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো রেমিট্যান্সে এ ধরনের প্রণাদনা দেওয়া হচ্ছে। গত ৬ আগস্ট প্রকাশিত বাংলাদেশ ব্যাংকের এ সংক্রান্ত নীতিমালায় বলা হয়েছে, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে প্রণোদনা পেতে ১ হাজার ৫০০ ডলার পর্যন্ত কোনো কাগজপত্র লাগবে না। তবে রেমিট্যান্সের পরিমাণ এই অঙ্কের বেশি হলে প্রয়োজনীয় কাগজ দাখিল করতে হবে।

বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি হলো রেমিট্যান্স। বর্তমানে এক কোটির বেশি বাংলাদেশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মরত রয়েছেন। জিডিপিতে তাদের পাঠানো অর্থের অবদান প্রায় ১২ শতাংশ।