এশিয়ার তিন প্রভাবশালী দেশ চীন, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে বহু বছরের বিরোধ শেষে সম্পর্কের সুবাতাস বইতে শুরু করেছে। আঞ্চলিক ও ঐতিহাসিক ইস্যুতে বিরোধ থাকা সত্ত্বেও গতকাল রোববার তিন দেশ গত তিন বছরের মধ্যে এই প্রথম এক সম্মেলনে যোগ দিয়েছে। বিরোধ নয়, এবার নিরাপত্তা ও বাণিজ্য ইস্যুতে তিন দেশের সাধারণ স্বার্থই প্রাধান্য পেয়েছে এই সম্মেলনে। খবর এএফপি ও বিবিসি অনলাইনের।
চীন, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার তিন সরকারপ্রধান এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, ‘এই সম্মেলনে ত্রিপক্ষীয় সহযোগিতা সম্পূর্ণভাবে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে।’ এ সম্মেলনের ভেতর দিয়ে বাণিজ্যিক ও নিরাপত্তা ইস্যু ছাড়াও অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদারেও সহমত হয়েছে তিন দেশ। ১৬ জাতির মুক্তবাণিজ্য অঞ্চল রিজিওনাল কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ (আরসিইপি) গঠনে একসঙ্গে কাজ করতেও রাজি হন তিন নেতা। উত্তর কোরিয়াকে পারমাণবিক কর্মসূচি থেকে ফেরানোর লক্ষ্যে কাজ করতেও নেতারা সহমত হয়েছেন।
এর আগে শনিবার চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াং, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট পার্ক জিউন-হাইয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। বাণিজ্য বৃদ্ধি, বিশেষ করে দক্ষিণ কোরিয়ার খাদ্য চীনে রফতানিতে এবং রোবট প্রযুক্তি গবেষণায় পারস্পরিক জ্ঞান বিনিময়ে দুই নেতা একমত হন। এরপর গতকাল জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে ওই দুই দেশের নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় যোগ দেন।
তবে চীন ও ওয়াশিংটনের মধ্যে যে সম্পর্কের টানাপড়েন তা নিয়ে সিউল ও টোকিও কথা তোলে কি-না তাও পর্যবেক্ষকদের মধ্যে কৌতূহল ছিল।
দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনকে দেশগুলোর মধ্যে সম্পর্কের টানাপড়েন হ্রাস করে স্বাভাবিক করার ক্ষেত্রে এটা বড় এক পদক্ষেপ বলে ধারণা করা হচ্ছে।
চীন ও দক্ষিণ কোরিয়া মনে করে, সম্পর্ক উন্নয়নের লক্ষ্যে জাপান কখনোই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে তাদের সেনাবাহিনীর নৃশংসতার বিষয়ে যথেষ্ট পদক্ষেপ নেয়নি। ২০১২ সাল পর্যন্ত নিয়মিতভাবে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক হলেও এরপর আর হয়নি।
তবে তিন দেশই এখন বিশেষ করে অর্থনৈতিক ইস্যুতে পরস্পরের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক উন্নয়ন যে দরকার, তা বেশ ভালোই বুঝতে পারছে। দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান দু’দেশই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে যেমন আগ্রহী, তেমনি চীনের সঙ্গে নিজেদের বাণিজ্য সম্পর্ক গড়ে তোলা দরকার বলে মনে করে। এ দুই ইস্যুতে তারা বরাবরই দোদুল্যমান ছিল।