ঢাকা ০১:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হিন্দুধর্ম থেকে ফিরে লক্ষাধিক মানুষকে ইসলামে ফেরালেন যিনি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৬:১৪:২৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ অগাস্ট ২০১৯
  • ২৪৯ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ জন্ম নিয়েছিলেন একটি হিন্দু পরিবারে। জীবনের ৪৭টি বছর অতিবাহিত হওয়ার পর ইসলামের আলোয় আলোকিত হয়েছেন তিনি। এরপর থেকেই উদ্যোগী হয়েছেন দ্বীনপ্রচারে। তার হাতে ইসলাম গ্রহণ করেছেন প্রায় ১ লাখ ৮ হাজার মানুষ। আলোচিত ওই ব্যক্তি হলেন পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের দ্বীন মোহাম্মদ শেখ। ১৯৪২ সালে একটি হিন্দু পরিবারে জন্ম নেয়া এ ব্যক্তি আলোকিত জীবনের খোঁজে ১৯৮৯ সালে ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে আসেন।

জন্মগতভাবে ইসলাম সম্পর্কে ছিল তার ব্যাপক আগ্রহ। ইসলামের প্রতি এমন অনুরাগ দেখে তার মা ১৫ বছর বয়সেই বিয়ে দিয়ে দেন। মায়ের বিশ্বাস ছিল, বিয়ে করে ফেললে অন্য ধর্মের প্রতি তার টান কমে আসবে।

কিন্তু বিয়ের পরও ইসলাম সম্পর্কে তার কৌতুহল একটুও কমেনি। তাই ইসলাম সম্পর্কে জানতে মোহাম্মদ জাগসি নামে এক মুসলিম শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন দ্বীন মোহাম্মদ। মোহাম্মদ জাগসির কাছেই নিয়মিত পবিত্র কোরআন এবং হাদিসের বাণী সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করেন তিনি।

ভাগ্যক্রমে দ্বীন মোহাম্মদ শেখের চাচাও একই মানসিকতার লোক ছিলেন। তারা দু’জন এই মর্মে একমত হলেন যে, তারা একে অপরকে সব কাজে সহায়তা করবেন। অতঃপর তিনি তার মেয়েদের বিয়ের পর ইসলাম গ্রহণ করেন এবং ইসলাম প্রচারে আত্মনিয়োগ করেন।

ইসলাম গ্রহণের পর থেকে পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশে হিন্দুসহ বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের কাছে ইসলামের দাওয়াত দিতে থাকেন দ্বীন মোহাম্মদ। বিভিন্ন তথ্য থেকে জানা যায়, দ্বীন মোহাম্মাদের দাওয়াতে ১ লাখ ৮ হাজার মানুষ ইসলাম গ্রহণ করেছেন।

দ্বীন মোহাম্মদ শেখ স্থানীয় আল্লাহওয়ালী জামে মসজিদের সভাপতি। তিনি অসহায় ইসলাম গ্রহণকারীদের আবাসনের জন্য প্রায় ৯ একর জায়গারও ব্যবস্থা করেছেন। যারা সেখানে বসবাস করছে।

ইসলাম গ্রহণের পর দ্বীন মোহাম্মদ শেখ নিজের অনুভূতি জানিয়ে বলেন, আমি ইসলামকে ভালোবাসি। ইসলাম গ্রহণ করার আগে পবিত্র কোরআন অধ্যয়ন করতে শুরু করি। কোরআন পড়ার পর বুঝতে পারি ৩৬০ দেবতার পূজা করে আসলেও কোনোদিন আমার কোনো উপকার হয়নি।

ইসলাম প্রচারের জন্য একটি মিশনারী সংস্থা খুলেছেন দ্বীন মোহাম্মদ শেখ। শুরুতে পরিবার থেকেই ইসলামের দাওয়াতি কার্যক্রম শুরু করেন তিনি। পরিবারের শক্তিশালী সমর্থনই ইসলামের প্রচার কাজে তার মানসিক শক্তি বাড়িয়ে দিয়েছে।

দ্বীন মোহাম্মদ শেখের ধর্ম প্রচারের কথা পাকিস্তানের বিভিন্ন রাজ্যে ছড়িয়ে পড়লে অনেক দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ তার কাছে এসেই ইসলাম গ্রহণ করেন। তার বাড়ির মসজিদে নও মুসলিম শিশু কিশোর নারী ও পুরুষদের জন্য রয়েছে নামাজ ও পবিত্র কোরআন শেখার ব্যবস্থা।

নারী শিক্ষকদের দিয়ে নারীদের কোরআন শেখারও রয়েছে আলাদা ব্যবস্থা। সেখানে ১৫ দিনের বিশেষ প্রশিক্ষণ দিয়ে কোরআন ও নামাজ শেখানোর ব্যবস্থা রেখেছেন তিনি।

সূত্র: দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

হিন্দুধর্ম থেকে ফিরে লক্ষাধিক মানুষকে ইসলামে ফেরালেন যিনি

আপডেট টাইম : ০৬:১৪:২৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ অগাস্ট ২০১৯

হাওর বার্তা ডেস্কঃ জন্ম নিয়েছিলেন একটি হিন্দু পরিবারে। জীবনের ৪৭টি বছর অতিবাহিত হওয়ার পর ইসলামের আলোয় আলোকিত হয়েছেন তিনি। এরপর থেকেই উদ্যোগী হয়েছেন দ্বীনপ্রচারে। তার হাতে ইসলাম গ্রহণ করেছেন প্রায় ১ লাখ ৮ হাজার মানুষ। আলোচিত ওই ব্যক্তি হলেন পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের দ্বীন মোহাম্মদ শেখ। ১৯৪২ সালে একটি হিন্দু পরিবারে জন্ম নেয়া এ ব্যক্তি আলোকিত জীবনের খোঁজে ১৯৮৯ সালে ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে আসেন।

জন্মগতভাবে ইসলাম সম্পর্কে ছিল তার ব্যাপক আগ্রহ। ইসলামের প্রতি এমন অনুরাগ দেখে তার মা ১৫ বছর বয়সেই বিয়ে দিয়ে দেন। মায়ের বিশ্বাস ছিল, বিয়ে করে ফেললে অন্য ধর্মের প্রতি তার টান কমে আসবে।

কিন্তু বিয়ের পরও ইসলাম সম্পর্কে তার কৌতুহল একটুও কমেনি। তাই ইসলাম সম্পর্কে জানতে মোহাম্মদ জাগসি নামে এক মুসলিম শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন দ্বীন মোহাম্মদ। মোহাম্মদ জাগসির কাছেই নিয়মিত পবিত্র কোরআন এবং হাদিসের বাণী সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করেন তিনি।

ভাগ্যক্রমে দ্বীন মোহাম্মদ শেখের চাচাও একই মানসিকতার লোক ছিলেন। তারা দু’জন এই মর্মে একমত হলেন যে, তারা একে অপরকে সব কাজে সহায়তা করবেন। অতঃপর তিনি তার মেয়েদের বিয়ের পর ইসলাম গ্রহণ করেন এবং ইসলাম প্রচারে আত্মনিয়োগ করেন।

ইসলাম গ্রহণের পর থেকে পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশে হিন্দুসহ বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের কাছে ইসলামের দাওয়াত দিতে থাকেন দ্বীন মোহাম্মদ। বিভিন্ন তথ্য থেকে জানা যায়, দ্বীন মোহাম্মাদের দাওয়াতে ১ লাখ ৮ হাজার মানুষ ইসলাম গ্রহণ করেছেন।

দ্বীন মোহাম্মদ শেখ স্থানীয় আল্লাহওয়ালী জামে মসজিদের সভাপতি। তিনি অসহায় ইসলাম গ্রহণকারীদের আবাসনের জন্য প্রায় ৯ একর জায়গারও ব্যবস্থা করেছেন। যারা সেখানে বসবাস করছে।

ইসলাম গ্রহণের পর দ্বীন মোহাম্মদ শেখ নিজের অনুভূতি জানিয়ে বলেন, আমি ইসলামকে ভালোবাসি। ইসলাম গ্রহণ করার আগে পবিত্র কোরআন অধ্যয়ন করতে শুরু করি। কোরআন পড়ার পর বুঝতে পারি ৩৬০ দেবতার পূজা করে আসলেও কোনোদিন আমার কোনো উপকার হয়নি।

ইসলাম প্রচারের জন্য একটি মিশনারী সংস্থা খুলেছেন দ্বীন মোহাম্মদ শেখ। শুরুতে পরিবার থেকেই ইসলামের দাওয়াতি কার্যক্রম শুরু করেন তিনি। পরিবারের শক্তিশালী সমর্থনই ইসলামের প্রচার কাজে তার মানসিক শক্তি বাড়িয়ে দিয়েছে।

দ্বীন মোহাম্মদ শেখের ধর্ম প্রচারের কথা পাকিস্তানের বিভিন্ন রাজ্যে ছড়িয়ে পড়লে অনেক দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ তার কাছে এসেই ইসলাম গ্রহণ করেন। তার বাড়ির মসজিদে নও মুসলিম শিশু কিশোর নারী ও পুরুষদের জন্য রয়েছে নামাজ ও পবিত্র কোরআন শেখার ব্যবস্থা।

নারী শিক্ষকদের দিয়ে নারীদের কোরআন শেখারও রয়েছে আলাদা ব্যবস্থা। সেখানে ১৫ দিনের বিশেষ প্রশিক্ষণ দিয়ে কোরআন ও নামাজ শেখানোর ব্যবস্থা রেখেছেন তিনি।

সূত্র: দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন