হাওর বার্তা ডেস্কঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী অক্টোবরে দিল্লি যাচ্ছেন। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ইন্ডিয়ান চ্যাপ্টার বা রিজিওনাল এজেন্ডা ইন্ডিয়ান ইকোনমিক সামিটে অংশ নেয়ার কথা রয়েছে তার। ওই সম্মেলনে অন্যতম কো-চেয়ার হিসাবে বাংলাদেশের সরকার প্রধানকে বিশেষ আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তবে ঢাকা চাইছে বহুপক্ষীয় ওই আয়োজনে সফরটি সীমাবদ্ধ না রেখে দ্বিপক্ষীয় উপাদান যুক্ত করতে। সে মতেই প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। এ নিয়ে গতকাল সেগুনবাগিচায় একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভাও হয়েছে।
সভায় বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার বিদ্যমান এবং ঝুলে থাকা ইস্যুগুলো পর্যালোচনায় এসেছে। ঢাকা ও দিল্লির দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র জানিয়েছে নয়া দিল্লিতে ২-৩ অক্টোবরের ওই সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী অংশ নিতে আগ্রহী- সেই গ্রীণ সিগন্যাল পাওয়ায় পর সফরের আনুষ্ঠানিক প্রস্তুতি-আলোচনা শুরু হয়েছে। তবে সফরটির ধরণ কী হবে তা এখনও স্পষ্ট নয়। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের এমন একটি সম্মেলনের সঙ্গে মিলিয়ে সর্বশেষ চীনে সফর করেন প্রধানমন্ত্রী। চীনের ডালিয়ানে ২রা জুলাই’র ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের শ্রীষ্মকালীন সভায় অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী, পরে তিনি ৪-৫ জুলাই বেইজিংয়ে দ্বিপক্ষীয় সফর করেন।
আসন্ন দিল্লি সম্মেলনে যোগদানের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর ভারতে দ্বিপক্ষীয় সফর হতে যাচ্ছে জানিয়ে এক কর্মকর্তা গতকাল বলেন, এটা হবে। বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক এটার স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট রয়েছে। তাছাড়া ওই সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি থাকছেন। দিল্লি চাইছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতে অংশ নিন। ফলে আমরা চাই সফরটি দ্বিপক্ষীয় সফরে রূপান্তর হোক। সে মতেই আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। ওই কর্মকর্তা এ-ও বলেন, হাই প্রোফাইল ওই সফরের প্রস্তুতির এখনও অনেক কাজ বাকী। সফরের সময়ক্ষণ ঘনিয়ে এলে দুই পক্ষের আরও ঘনিষ্ঠ আলোচনা হবে।
আশা করছি তার আগে ভারতের নবনিযুক্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. সুব্রামানিয়াম জয়শঙ্কর বাংলাদেশ সফর করবেন। অন্য একটি সূত্র অবশ্য দাবি করেছে দিল্লির বিদেশমন্ত্রীর ঢাকা সফরটি আগস্টের মাঝামাঝিতে হতে পারে। এমন একটি প্রস্তাব নিয়ে আলাপ আলোচনা শুরু হয়েছে। কিন্তু সেটি এখনও চূড়ান্ত নয়। তাছাড়া আগামী সেপ্টেম্বরের সমাপনী দশকে প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোদ দিতে নিউইয়র্ক যাচ্ছেন। ওই সম্মেলনে ভারতের বিভিন্ন পর্যায়ের প্রতিনিধি অংশ নিবেন। সেখানেও বাংলাদেশের সরকার প্রধানের দিল্লি সফর নিয়ে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ অন্যাদের সঙ্গে বৈঠক হতে পারে।
দিল্লি সম্মেলনে যা হবে: এদিকে ভারতের আবিস্কার, দক্ষিণ এশিয়াকে শক্তিশালীকরণ এবং দুনিয়াতে এর প্রভাব বিষয়ে দিল্লি সম্মেলনে আলোচনা হবে। সেখানে এ অঞ্চলের সরকারি-বেসরকারি শীর্ষ নেতারা যেমন থাকবেন, তেমনি শিল্পোদ্যোক্তরা স্কলার, সিভিল সোসাইটির প্রতিনিধিও অংশ নিচ্ছেন। তারা চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রযুক্তির সঙ্গে খাপখাইয়ে নেয়ার প্রস্তুতির ওপর ফোকাস করবেন, যাতে গতিশীল এবং সম্ভাবনাময় সাউথ এশিয়াকে আরও এগিয়ে নেয়া যায়। ওই সম্মেলনে কো চেয়ার হিসাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়াও থাকছেন- অদ্বিতীয়া বিরলা গ্রুপের চেয়ারম্যান কুমার এম বিরলা, সিঙ্গাপুরের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী হ্যাং সু কিয়েত, স্পোর্টস পার্সন এবং দক্ষিণ এশিয়া জাতিসংঘের নারী বিষয়ক গ্লোবাল এম্বাসেডর সানিয়া মির্জা প্রমুখ।