হাওর বার্তা ডেস্কঃ বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে দেশের তিন বিভাগে মহাসমাবেশ কর্মসূচি সফল করতে দলের ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব এ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। গতকাল মঙ্গলবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, সরকারের চরম অমানবিকতা, নির্দয়-নিষ্ঠুরতার কোপানলে পড়ে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এখন কারাগারে, তিনি গুরুতর অসুস্থ। তার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে আগামীকাল (১৮ জুলাই) বরিশাল, ২০ জুলাই চট্টগ্রাম ও ২৫ জুলাই খুলনায় মহাসমাবেশ কর্মসূচি সফল করতে আমাদের ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে।
জেলা-উপজেলায় প্রস্তুতি সভা হচ্ছে। এই শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশগুলোতে যোগ দিতে মানুষের আগ্রহের কোনো কমতি নেই। মহাসমাবেশ ঘিরে সাধারণ জনগণের অভাবনীয় সাড়া দেখে সরকারের চিত্তচাঞ্চল্য বৃদ্ধি পেয়েছে।
তিনি বলেন, মিডনাইট সরকারের মিডনাইট তথ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ গতকাল বলেছেন, ‘বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশের নামে অতীতের মতো কোনো বিশৃঙ্খলা বা ভাঙচুর সহ্য করা হবে না। জনগণ ও রাষ্ট্রের যে কোনো ক্ষতিসাধনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
আমি তার (ড. হাছান) উদ্দেশ্যে বলতে চাই-আপনি যে বিশৃঙ্খলার কথা বলছেন, সেটিই তো উস্কানিমূলক, একটা অশুভ উদ্দেশ্য নিয়েই এ ধরনের বক্তব্য রাখছেন।
তথ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করে বিএনপির এই মুখপাত্র আরও বলেন, শান্তিপূর্ণ পরিবেশ না থাকলে তো কোনো সমাবেশই হবে না, নিজেদের আয়োজনে নিজেরাই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবো এই কথা কি কেউ বিশ্বাস করবে? এসব কথা বলে পরিবেশ তিক্ত করছেন তথ্যমন্ত্রী নিজেই। পুলিশি ও মাস্তানদের তাণ্ডবের মাধ্যমে বিরোধী দলের সভা পণ্ড করার ইতিহাস ঐতিহ্য আপনাদেরই। বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেন আপনারা।
আমাদের সব কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ ছিল, আছে এবং থাকবে। কোনো উস্কানিমূলক কথা বলে আমাদের নিবৃত্ত করতে পারবেন না। দম বন্ধ করা বাকশালী শাসনের বহমান অন্ধকার সময়ের অবসান ঘটিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা জনগণকে সাথে নিয়ে শান্তিপূর্ণ ও নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে তাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবেই ইনশাআল্লাহ।
রিজভী বলেন, দেশে আইনশৃঙ্খলার কি ভয়াবহ অবনতি হয়েছে। গতকাল কুমিল্লা আদালতে বিচারকের খাস কামরায় কি ভয়াবহ নজিরবিহীন নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।
আদালতের বিচারক, কর্মকর্তা, পুলিশ, আইনজীবী ও বিচার প্রার্থীদের সামনে একজন আসামি আরেকজন আসামিকে কুপিয়ে হত্যা করেছে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ তৃতীয় আদালতের বিচারক বেগম ফাতেমা ফেরদৌস সাংবাদিকদের বলেছেন, এই হত্যার শিকার আমিও হতাম কিংবা এটির শিকার আমার কোনো সহযোগী বা কোনো আইনজীবীও হতে পারতেন।
আমাদের নিরাপত্তা কোথায়? আমাদের আসলে কোনো নিরাপত্তাই নেই। সংবাদ সম্মেলনে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সুকোমল বড়ূয়া, কবির মুরাদ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।