হাওর বার্তা ডেস্কঃ পদ্মাসেতুর জন্য মাথা কেটে নেওয়ার গুজব ছড়ানোর অভিযোগে এক যুবককে আটক করেছে ভোলা পুলিশ। দেশজুড়ে বিষয়টি নিয়ে তুমুল আলোচনার মধ্যে প্রথমবারের মতো কাউকে পুলিশ নিজের হেফাজতে নিল। আটক আবদুল শহীদ হাওলাদার ভোলার চরফ্যাশন উপজেলায় চরমাদ্রাজ ইউনিয়নের মোহাম্মদপুর গ্রামের বাসিন্দা। জেলার পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার বৃহস্পতির সংবাদ সম্মেলন করে তার বিষয়ে বিস্তারিত জানান।
সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে একটি গুজব ছড়ানো হচ্ছে যে, পদ্মাসেতুর জন্য এক লাখ মানুষের মাথার প্রয়োজন। এ জন্য ৫২টি দল দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ হত্যা করে মাথা সংগ্রহ করছে। ইউটিউবে বানোয়াট ভিডিও পর্যন্ত ছড়ানো হচ্ছে এই গুজবের। পরিস্থিতি এই পর্যায়ে গেছে যে, সরকারকে রীতিমতো বিবৃতি দিয়ে বলতে হয়েছে, এটা মিথ্যা।
এরই মধ্যে পুলিশ বিষয়টি নিয়ে তৎপর হয়েছে। যারা এই গুজব ছড়াচ্ছে, তাদের শনাক্ত করতে কাজ করছে একাধিক দল। এর মধ্যে প্রথমবারের মতো কেউ আটক হলো ভোলায়।
পুলিশ জানান, বিভিন্ন এলাকার মানুষকে ফোন করে ও ফেইসবুকের মাধ্যমে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে শহীদকে আটক করা হয়। তিনি বলেন, ‘শহীদ দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন এলাকার মানুষকে ফোন করে এবং ফেসবুকে পোস্ট ও মেসেঞ্জারের মাধ্যমে শিশুদের মাথা কেটে নেওয়া হচ্ছে, ছেলেধরারা শিশুদের ধরে নিয়ে যাচ্ছে, এমন গুজব ছড়িয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করছিলেন।’
‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার চরফ্যাশন উপজেলার চরমাদ্রাজ থেকে তাকে গুজব ছড়ানোর কাজে ব্যবহৃত স্মার্টফোনসহ আটক করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শহীদ দোষ স্বীকার করেছেন। এ কাজে তার সঙ্গে আরও দুজন রয়েছে বলেও শহীদ জানিয়েছেন। আপাতত তাদের নাম প্রকাশে করা যাবে না।’
শহীদ এবং তার দুই সহযোগী কী উদ্দেশ্যে এই গুজব ছড়াচ্ছেন, তার পাশাপাশি তাদের সঙ্গে আর কাদের সম্পৃক্ততা রয়েছে, সেটাও খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে বলেও জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।
পুলিশ সুপার বলেন, ‘গুজব ছড়ানোর কাজে শহীদ গ্রাফিক ডিজাইনের মাধ্যমে মাথাকাটা ছবি ও ভীতিকর লেখা ফেইসবুকে পোস্ট করার পাশাপাশি মেসেঞ্জারেও পাঠিয়েছেন। মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করার জন্য এটা করা হয়েছে।’
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মীর মো. শাফিন আহমেদ, রাসেলুর রহমান, চরফ্যাশন সার্কেলের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার সাব্বির হোসেন, চরফ্যাশন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সামসুল আরেফিনও সাংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।