ছাত্রদল নিয়ে বিএনপি বিপাকে

হাওর বার্তা ডেস্কঃ নেতা হওয়ার বয়স বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলনে থাকা ছাত্রদলে অশান্তি চলছেই। কয়েক দফা মারামারি এবং ১২ জনকে বহিষ্কার করায় ক্ষোভ আরো বেড়েছে। শর্তসাপেক্ষে তারা আন্দোলন স্থগিত করলেও যেকোনো সময় নামতে পারেন রাস্তায়। বিএনপি নেতাদের কথাও তারা রাখছেন না। এমনকি কমিটি ভেঙ্গে দেয়ার এখতিয়ার নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তারা। সব মিলিয়ে ভ্যানগার্ড নামে খ্যাত ছাত্রদল নিয়ে মহাবেকাদায় আছে বিএনপি।

বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছেন দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা। আন্দোলনের মুখে প্রার্থীদের জন্য মনোনয়ন বিতরণও বন্ধ রেখেছে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি। গতকাল শনিবার বিকালে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকেও ছাত্রদল ইস্যু হয় প্রধান এজেন্ডা। নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী বলেছেন, স্থায়ী কমিটির পরামর্শে আমরা মনোনয়নপত্র বিতরণ বন্ধ রেখেছি। হয়তো সময় বাড়াব। তিনি বলেন, কোনো ধরনের সংঘর্ষ যাতে না হয় তা কৌশলে এড়িয়ে চলছি। তবে দলের বৃহত্তর স্বার্থে হাইকমান্ডের সিদ্ধান্তের প্রতি সম্মান দেখিয়ে যারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত তারা বিবেচনা করবেন বলে প্রত্যাশা করছি।

ছাত্রদলের সাবেক নেতারা জানান, দলের দুর্দিনে চেইন অব কমান্ড ঠিক রাখতে চাই। নেতৃত্বকে কলুষিত করার কোনো পদক্ষেপ নিতে চাইছি না। তবে দলকে সঠিক পথে নিয়ে আসার জন্য সিন্ডিকেট আর দালাল প্রথা ভাঙাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য। তা না হলে দলের রাজনীতি থাকবে না। ফলে ছাত্রদলের কমিটি গঠনে সৃষ্ট জটিলতা নিরসনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। এজন্যই দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির নেতাদেরকে সঙ্গে নিয়ে তারেক রহমানের সঙ্গে কথা বলা দরকার। এর মাধ্যমে আন্দোলনরত ছাত্রনেতারা তাদের সমস্যা আর ক্ষোভের কারণ ও সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে নিজেদের অভিযোগ জানাতে চাইছেন।

টানা ১৭ দিন ধরে আন্দোলন করে আসছে ছাত্রদলের বিলুপ্ত কমিটির নেতারা। বিভিন্ন সময়ে দলের সিনিয়র নেতাদের কাছে নিজেদের দাবিও উপস্থাপন করেছেন। সূত্র জানায়, এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে পক্ষে-বিপক্ষে বিএনপিতে দুটি গ্রুপ সক্রিয় থাকায় এখনো কোনো সমাধানে পৌঁছানো যায়নি। বৃহস্পতিবারও লাঠিসোটাসহ বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী নিয়ে ক্ষুব্ধ নেতারা নয়াপল্টনে অবস্থান নেয়।

পরিস্থিতি নাগালের বাইরে যেতে পারে-এমন আশঙ্কায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে বিক্ষুব্ধ ছাত্রদল নেতাদের শান্ত করার দায়িত্ব দেন তারেক রহমান। দু’নেতার হস্তক্ষেপে শান্ত হন তারা। পরে সাবেক নেতাদের নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দায়িত্বপ্রাপ্তরা গুলশান কার্যালয়ে দীর্ঘ বৈঠক করেন।

বৈঠকের পর গতকাল শনিবার পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত এবং কাউন্সিলের কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়। অন্যদিকে আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ছাত্রদলের সাবেক নেতাদের মধ্যে দুই ধরনের বক্তব্য পাওয়া গেছে। কোনো কোনো নেতা বলছেন, আমরা আন্দোলন দীর্ঘস্থায়ী করতে চাই না। দলের হাইকমান্ড এখন যে সিদ্ধান্ত দেবে আমরা তা মেনে নেব।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর