ঢাকা ০৭:০৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অনিয়ম নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খোলার কারণে বদলী হলেন বিপ্লব কুমার সরকার

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০২:০১:৪৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ জুন ২০১৯
  • ২৮১ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ‘এই গরীব দেশে আমার মতো লক্ষ লক্ষ বিপ্লব সরকার রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় আমাকে উচ্চশিক্ষার সুযোগ দিয়েছে। সরকার আমাকে গাড়ি, ড্রাইভার, বডিগার্ড দিয়েছে। আমার মতো সামান্য বিপ্লব সরকারের পেছনে এ রাষ্ট্রের অনেক ইনভেস্টমেন্ট। এই রাষ্ট্রের সেবায় আমার তো সবটুকুই দেওয়া উচিত’। এই উক্তিটি যার, তিনি একজন পুলিশ কর্মকর্তা। হ্যা, তিনি পুলিশ কর্মকর্তা। শত অভিযোগে পর্যুদস্ত পুলিশ বিভাগে তিনি ব্যতিক্রম একজন। কর্মক্ষেত্রের সীমাবদ্ধতাকে পাশ কাটিয়ে তিনি হয়ে উঠেছিলেন সার্বজনীন। হয়ে উঠেছিলেন নিরাপত্তা ও ন্যায় বিচারের প্রতীক।

হ্যাঁ, ২১তম বিসিএস (পুলিশ) ব্যাচের মেধাবী পুলিশ কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার সরকারের কথা বলছি। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মাসিক অপরাধ পর্যালাচনা সভায় রেকর্ড ২৩ বার শ্রেষ্ঠ ডিসি নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, গনভবন, মহান জাতীয় সংসদ ভবনসহ আরো অনেক গুরুত্বপূর্ন ও স্পর্শকাতর স্হাপনা যে তেজগাঁও বিভাগে, সেই বিভাগের তেজগাঁও, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল, মোহাম্মদপুর, আদাবর, শেরেবাংলা নগর ও হাতিরঝিল থানা এলাকায় বসবাসকারী লক্ষ লক্ষ মানুষকে নিরাপত্তার চাদরে আবদ্ধ করে রেখেছেন যিনি, তার নাম বিপ্লব কুমার সরকার। শুধু কি তেজগাঁও বিভাগের ০৬ টি থানার অধিবাসীরাই সেবা পেয়েছেন তার কাছে? কে সেবা পায় নি তাঁর কাছে?

তার অফিসিয়াল ০১৭১৩৩৭৩১৭৫ মোবাইল নম্বরে ফোন করে শত শত নির্যাতিত, নিপীড়িত, অসহায় মানুষ পেয়েছে ন্যায় বিচার। যে কোন অভিযোগ তার কানে পৌছামাত্রই সংশ্লিষ্ট ওসি/এসি/ এডিসিকে নির্দেশ দিয়েছেন সমাধান না হওয়া পর্যন্ত এলাকায় ফেরা নিষেধ। তেজগাঁও বিভাগের অফিসিয়াল DC Tejgaon – DMP ফেসবুক পেজের মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাসকারী বাংলাদেশীদের/ তাদের পরিবারের সমস্যা সমাধান করেছেন তিনি। একটা ফোন কল বা মেসেজেই। ন্যায় বিচারের প্রশ্নে কর্মস্থলের সীমাবদ্ধতাকে বৃদ্ধাংগুলি দেখিয়ে দিনের পর দিন অসহায়, নিপীড়িত ও নির্যাতিত মানুষকে তাদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করেছেন এই নির্লোভ মানুষটি। মাদক ব্যবসায়ী, চাঁদাবাজ ও সর্বপ্রকার ক্রিমিনালদের জন্য তিনি হয়ে উঠেছিলেন মূর্তিমান আতংক।

শুধুই কি মাদক ব্যবসায়ী, চাঁদাবাজ বা ক্রিমিনালদের জন্য যমদূত ছিলেন তিনি? তার অধীনস্ত পুলিশকেও বিন্দুমাত্র ছাড় দেন নি তিনি। যখনই শুনেছেন পুলিশ কতৃক জনহয়রানির খবর, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিয়েছেন।মামলাও হয়েছে পুলিশের বিরুদ্ধে। বিপ্লব কুমার সরকার বাংলাদেশ পুলিশের সেই অমিত সাহসী কর্মকর্তা, যিনি ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে অনুষ্ঠিত ত্রৈমাসিক অপরাধ সভায় আইজিপি মহোদয়ের উপস্থিতিতে দীপ্ত কণ্ঠে ঘোষনা করেছিলেন,’ রেঞ্জ ডিআইজিরা ওসি পদায়নে ২০ থেকে ৫০ লাখ টাকা করে ঘুষ নেন। আবার পুলিশ সুপাররা এসআই, এএসআই ও কনস্টেবল পদায়নে ঘুষ নেন। ফলে এ ঘুষের টাকা উঠাতে গিয়ে ওসি থেকে শুরু করে নিচের পদের সদস্যরা মাদক বাণিজ্যসহ নানা অবৈধ কর্মকান্ডে যুক্ত হন।

ফলে মাদকবাণিজ্য বন্ধ করা যায় না। মাদক বাণিজ্য বন্ধ করতে হলে ওসি থেকে নিম্নপদে কর্মরতদের পদায়নে ঘুষ লেনদেন বন্ধ করতে হবে’। একজন সরকারী কর্মকর্তা কতোটুকু সৎ ও আত্মবিশ্বাসী হলে এমন কথা বলতে পারেন! তাও পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে সব ঊর্দ্ধতন পুলিশ কর্মকর্তাদের সামনে! এমনই পুলিশ কর্মকর্তা ছিলেন তিনি। ‘ছিলেন’ বলছি এই কারণে যে, দেশ ও জনগনের সেবায় নিবেদিতপ্রাণ একজন পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে যে আত্নতৃপ্তি ছিল তার, সেটা কি এখনো আছে? নাকি মরে গেছে? স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের একটি পোস্টিং অর্ডার দেখে অনেকের মতো আমিও ব্যথিত হয়েছি। যে অর্ডারে তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার বিপিএম (বার), পিপিএমকে রংপুর জেলার পুলিশ সুপার হিসেবে বদলী করা হয়েছে। তার আকর্ষনীয় ব্যক্তিত্ব, সততা, পরোপকারিতা, জনসাধারণের অভিযোগ অনুযোগে পজিটিভ কুইক রেসপন্স ও আত্মনিবেদনের কারনে তার জনপ্রিয়তা তুংগসপর্শী।

বিশেষ করে তরুন সমাজে তিনি একজন রোল মডেল। জংগীবাদ দমনে সবচেয়ে গুরত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করেছে যে ভাড়াটিয়া তথ্য ফর্ম সংগ্রহ কর্মসূচী, এই ভাড়াটিয়া তথ্য ফরম সংগ্রহ পদ্ধতি প্রথম চালু করেছেন বিপ্লব কুমার সরকার। তেজগাঁও বিভাগের মোহাম্মদপুর থানায় ২০১৪ সালের শেষের দিকে। যা পরে পর্যায়ক্রমে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সব থানার পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন জেলা ও মেট্রোপলিটনেও চালু হয়েছে। পুলিশিংয়ে নতুন ধারার প্রবর্তক এই কর্মকর্তার ঈর্ষনীয় সাফল্য ও তুংগস্পর্শী জনপ্রিয়তায় অনেকেই ঈর্ষাকাতর হয়ে পড়েছিল। যাদের রোষানলে পুড়ে তাকে হয়তো চলে যেতে হবে পুলিশের মেইন স্ট্রীম থেকে দূরে।

রংপুর জেলায়। ‘আমরা চাই না একটি শিশু রাস্তায় বেড়ে উঠুক’–এই মনোবাসনা হৃদয়ে ধারন করে সুবিধা বনচিত, অনাথ ও পথশিশুদের সুশিক্ষা, আবাসন ও উন্নত জীবন নিশ্চিতকরনের লক্ষ্যে ঢাকা ও ঢাকার পার্শ্ববর্তী এলাকায় অবস্থিত চারটি স্কুলের সাথে তিনি জড়িত বলে জানতে পারলাম। তার তততবাবধানে একদল স্বেচ্ছাসেবী বিভিন্ন কমিউনিটি সেন্টারের উচ্ছিষ্ট খাবার সংগ্রহ করে এসব শিশুদের খাওয়ানোর ব্যবস্থা করে। প্রত্যেক মাসে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প করে প্রত্যেক শিশু ও তার পরিবারকে চিকিৎসা সেবা প্রদানের পাশাপাশি সুশিক্ষা নিশ্চিতকরনে শিশুদেরকে বিনামূল্যে শিক্ষা উপকরণ এবং উৎসবে পোশাক বিতরনও করা হয়।

এলাকার আইন শৃংখলা পরিস্থিতি তদারকি ও এলাকার অধিবাসীদের সেবায় সকাল ০৯.৩০ ঘটিকা থেকে রাত ১২.৩০ ঘটিকা পর্যন্ত তিনি অফিস ও অধিক্ষেত্রাধীন এলাকায় থাকেন বলে এলাকার লোকজনের কাছে জানতে পারলাম। অত্যধিক পরিশ্রমের কারনে তিনি অসুস্থও থাকেন প্রায়ই। যে কারনে নিয়মিত চিকিৎসকের শরনাপন্ন হতে হয় তাকে। তাকে এই মূহূর্তে ঢাকার বাইরে পাঠানো কি খুব জরুরী? অথচ তাকে রংপুরে না পাঠিয়ে ঢাকায় আরো দায়িতবপূর্ন কাজে লাগানো যেতো। ঢাকার চেয়ে রংপুর যদি পুলিশের জন্য বেশী গুরুত্বপূর্ণ হয়, তাহলে তো কিছু বলার নেই। পুলিশের বদলী বানিজ্যসহ নানা অনিয়ম নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খোলার কারনে বলি হতে হলো তাকে। বিপ্লব কুমার সরকার।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

অনিয়ম নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খোলার কারণে বদলী হলেন বিপ্লব কুমার সরকার

আপডেট টাইম : ০২:০১:৪৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ জুন ২০১৯

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ‘এই গরীব দেশে আমার মতো লক্ষ লক্ষ বিপ্লব সরকার রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় আমাকে উচ্চশিক্ষার সুযোগ দিয়েছে। সরকার আমাকে গাড়ি, ড্রাইভার, বডিগার্ড দিয়েছে। আমার মতো সামান্য বিপ্লব সরকারের পেছনে এ রাষ্ট্রের অনেক ইনভেস্টমেন্ট। এই রাষ্ট্রের সেবায় আমার তো সবটুকুই দেওয়া উচিত’। এই উক্তিটি যার, তিনি একজন পুলিশ কর্মকর্তা। হ্যা, তিনি পুলিশ কর্মকর্তা। শত অভিযোগে পর্যুদস্ত পুলিশ বিভাগে তিনি ব্যতিক্রম একজন। কর্মক্ষেত্রের সীমাবদ্ধতাকে পাশ কাটিয়ে তিনি হয়ে উঠেছিলেন সার্বজনীন। হয়ে উঠেছিলেন নিরাপত্তা ও ন্যায় বিচারের প্রতীক।

হ্যাঁ, ২১তম বিসিএস (পুলিশ) ব্যাচের মেধাবী পুলিশ কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার সরকারের কথা বলছি। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মাসিক অপরাধ পর্যালাচনা সভায় রেকর্ড ২৩ বার শ্রেষ্ঠ ডিসি নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, গনভবন, মহান জাতীয় সংসদ ভবনসহ আরো অনেক গুরুত্বপূর্ন ও স্পর্শকাতর স্হাপনা যে তেজগাঁও বিভাগে, সেই বিভাগের তেজগাঁও, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল, মোহাম্মদপুর, আদাবর, শেরেবাংলা নগর ও হাতিরঝিল থানা এলাকায় বসবাসকারী লক্ষ লক্ষ মানুষকে নিরাপত্তার চাদরে আবদ্ধ করে রেখেছেন যিনি, তার নাম বিপ্লব কুমার সরকার। শুধু কি তেজগাঁও বিভাগের ০৬ টি থানার অধিবাসীরাই সেবা পেয়েছেন তার কাছে? কে সেবা পায় নি তাঁর কাছে?

তার অফিসিয়াল ০১৭১৩৩৭৩১৭৫ মোবাইল নম্বরে ফোন করে শত শত নির্যাতিত, নিপীড়িত, অসহায় মানুষ পেয়েছে ন্যায় বিচার। যে কোন অভিযোগ তার কানে পৌছামাত্রই সংশ্লিষ্ট ওসি/এসি/ এডিসিকে নির্দেশ দিয়েছেন সমাধান না হওয়া পর্যন্ত এলাকায় ফেরা নিষেধ। তেজগাঁও বিভাগের অফিসিয়াল DC Tejgaon – DMP ফেসবুক পেজের মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাসকারী বাংলাদেশীদের/ তাদের পরিবারের সমস্যা সমাধান করেছেন তিনি। একটা ফোন কল বা মেসেজেই। ন্যায় বিচারের প্রশ্নে কর্মস্থলের সীমাবদ্ধতাকে বৃদ্ধাংগুলি দেখিয়ে দিনের পর দিন অসহায়, নিপীড়িত ও নির্যাতিত মানুষকে তাদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করেছেন এই নির্লোভ মানুষটি। মাদক ব্যবসায়ী, চাঁদাবাজ ও সর্বপ্রকার ক্রিমিনালদের জন্য তিনি হয়ে উঠেছিলেন মূর্তিমান আতংক।

শুধুই কি মাদক ব্যবসায়ী, চাঁদাবাজ বা ক্রিমিনালদের জন্য যমদূত ছিলেন তিনি? তার অধীনস্ত পুলিশকেও বিন্দুমাত্র ছাড় দেন নি তিনি। যখনই শুনেছেন পুলিশ কতৃক জনহয়রানির খবর, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিয়েছেন।মামলাও হয়েছে পুলিশের বিরুদ্ধে। বিপ্লব কুমার সরকার বাংলাদেশ পুলিশের সেই অমিত সাহসী কর্মকর্তা, যিনি ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে অনুষ্ঠিত ত্রৈমাসিক অপরাধ সভায় আইজিপি মহোদয়ের উপস্থিতিতে দীপ্ত কণ্ঠে ঘোষনা করেছিলেন,’ রেঞ্জ ডিআইজিরা ওসি পদায়নে ২০ থেকে ৫০ লাখ টাকা করে ঘুষ নেন। আবার পুলিশ সুপাররা এসআই, এএসআই ও কনস্টেবল পদায়নে ঘুষ নেন। ফলে এ ঘুষের টাকা উঠাতে গিয়ে ওসি থেকে শুরু করে নিচের পদের সদস্যরা মাদক বাণিজ্যসহ নানা অবৈধ কর্মকান্ডে যুক্ত হন।

ফলে মাদকবাণিজ্য বন্ধ করা যায় না। মাদক বাণিজ্য বন্ধ করতে হলে ওসি থেকে নিম্নপদে কর্মরতদের পদায়নে ঘুষ লেনদেন বন্ধ করতে হবে’। একজন সরকারী কর্মকর্তা কতোটুকু সৎ ও আত্মবিশ্বাসী হলে এমন কথা বলতে পারেন! তাও পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে সব ঊর্দ্ধতন পুলিশ কর্মকর্তাদের সামনে! এমনই পুলিশ কর্মকর্তা ছিলেন তিনি। ‘ছিলেন’ বলছি এই কারণে যে, দেশ ও জনগনের সেবায় নিবেদিতপ্রাণ একজন পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে যে আত্নতৃপ্তি ছিল তার, সেটা কি এখনো আছে? নাকি মরে গেছে? স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের একটি পোস্টিং অর্ডার দেখে অনেকের মতো আমিও ব্যথিত হয়েছি। যে অর্ডারে তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার বিপিএম (বার), পিপিএমকে রংপুর জেলার পুলিশ সুপার হিসেবে বদলী করা হয়েছে। তার আকর্ষনীয় ব্যক্তিত্ব, সততা, পরোপকারিতা, জনসাধারণের অভিযোগ অনুযোগে পজিটিভ কুইক রেসপন্স ও আত্মনিবেদনের কারনে তার জনপ্রিয়তা তুংগসপর্শী।

বিশেষ করে তরুন সমাজে তিনি একজন রোল মডেল। জংগীবাদ দমনে সবচেয়ে গুরত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করেছে যে ভাড়াটিয়া তথ্য ফর্ম সংগ্রহ কর্মসূচী, এই ভাড়াটিয়া তথ্য ফরম সংগ্রহ পদ্ধতি প্রথম চালু করেছেন বিপ্লব কুমার সরকার। তেজগাঁও বিভাগের মোহাম্মদপুর থানায় ২০১৪ সালের শেষের দিকে। যা পরে পর্যায়ক্রমে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সব থানার পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন জেলা ও মেট্রোপলিটনেও চালু হয়েছে। পুলিশিংয়ে নতুন ধারার প্রবর্তক এই কর্মকর্তার ঈর্ষনীয় সাফল্য ও তুংগস্পর্শী জনপ্রিয়তায় অনেকেই ঈর্ষাকাতর হয়ে পড়েছিল। যাদের রোষানলে পুড়ে তাকে হয়তো চলে যেতে হবে পুলিশের মেইন স্ট্রীম থেকে দূরে।

রংপুর জেলায়। ‘আমরা চাই না একটি শিশু রাস্তায় বেড়ে উঠুক’–এই মনোবাসনা হৃদয়ে ধারন করে সুবিধা বনচিত, অনাথ ও পথশিশুদের সুশিক্ষা, আবাসন ও উন্নত জীবন নিশ্চিতকরনের লক্ষ্যে ঢাকা ও ঢাকার পার্শ্ববর্তী এলাকায় অবস্থিত চারটি স্কুলের সাথে তিনি জড়িত বলে জানতে পারলাম। তার তততবাবধানে একদল স্বেচ্ছাসেবী বিভিন্ন কমিউনিটি সেন্টারের উচ্ছিষ্ট খাবার সংগ্রহ করে এসব শিশুদের খাওয়ানোর ব্যবস্থা করে। প্রত্যেক মাসে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প করে প্রত্যেক শিশু ও তার পরিবারকে চিকিৎসা সেবা প্রদানের পাশাপাশি সুশিক্ষা নিশ্চিতকরনে শিশুদেরকে বিনামূল্যে শিক্ষা উপকরণ এবং উৎসবে পোশাক বিতরনও করা হয়।

এলাকার আইন শৃংখলা পরিস্থিতি তদারকি ও এলাকার অধিবাসীদের সেবায় সকাল ০৯.৩০ ঘটিকা থেকে রাত ১২.৩০ ঘটিকা পর্যন্ত তিনি অফিস ও অধিক্ষেত্রাধীন এলাকায় থাকেন বলে এলাকার লোকজনের কাছে জানতে পারলাম। অত্যধিক পরিশ্রমের কারনে তিনি অসুস্থও থাকেন প্রায়ই। যে কারনে নিয়মিত চিকিৎসকের শরনাপন্ন হতে হয় তাকে। তাকে এই মূহূর্তে ঢাকার বাইরে পাঠানো কি খুব জরুরী? অথচ তাকে রংপুরে না পাঠিয়ে ঢাকায় আরো দায়িতবপূর্ন কাজে লাগানো যেতো। ঢাকার চেয়ে রংপুর যদি পুলিশের জন্য বেশী গুরুত্বপূর্ণ হয়, তাহলে তো কিছু বলার নেই। পুলিশের বদলী বানিজ্যসহ নানা অনিয়ম নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খোলার কারনে বলি হতে হলো তাকে। বিপ্লব কুমার সরকার।