হাওর বার্তা ডেস্কঃ কলা গাছ আমাদের গ্রাম অঞ্চলে প্রচুর দেখা যায়। শহরেও কিছু কিছু জায়গাতে কলা গাছ দেখা যায়। কিন্তু কলা গাছের বিভিন্ন অংশ আমরা খুব সহজেই পাই। যেমন: কলাপাতা, কলা এবং থোড়। থোড় আমাদের শরীরের জন্য কতটা উপকারি সে সম্পর্কে জেনে নিন-
থোড় নানা রকমভাবে রান্না করা যায়। যারা নিরামিষ খেয়ে থাকেন তাদের কাছে থোড় খুবই প্রিয় একটি খাবার। থোড়ে প্রচুর পরিমাণে আয়রন রয়েছে তা আমরা সকলেই জানি। এছাড়াও কলা গাছের থোড়ের প্রচুর উপকার রয়েছে যেগুলো অনেকেরই অজানা।
থোড় হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। আমাদের যদি কোনো রকম হজম শক্তির সমস্যা হয় তবে থোড় খেলে সে সমস্যার সমাধান হবে। শুধু তাই নয়, শরীর থেকে বিষাক্ত উপাদানও দূর করতে পারে থোড়। শরীর ভেতর থেকে পরিষ্কার করে ও পেট পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। নিয়মিত অন্ত্র থেকে মল অপসারণ সহজ করতে ও অন্ত্রের বর্জ্য আঁশ সরবরাহের মাধ্যমে হজমে সাহায্য করে থোড়। এ ক্ষেত্রে থোড় সরবত করেও খেতেও পারেন। সেটা শরীরের জন্য আরো বেশি উপকারি।
ওজন কমাতে সাহায্য করে থোড়: থোড়ে রয়েছে রয়েছে আঁশ অর্থাৎ ফাইবার। যেটা শরীরের কোষের জমে থাকা শর্করা ও চর্বি নিঃশ্বরন প্রক্রিয়াকে মন্থর করে থাকে। এটা বিপাক ক্রিয়াকে উন্নত করে এবং এতে ক্যালরির পরিমাণও বেশ কম থাকে। যে কারণে ওজন বৃদ্ধির সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যায়।
কোলেস্ট্ররল ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে থোড়। থোড়ে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি৬। এছাড়াও রয়েছে পটাশিয়াম, লৌহ এবং রক্তে হিমোগ্লোবিন বাড়ানোর উপাদান। তাই কোলেস্ট্ররল ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে এটি বেশ উপকারি ভূমিকা পালন করে থাকে।
এছাড়াও যারা অ্যানিমিয়া রোগী রয়েছে তাদের থোড় খাওয়া খুবই প্রয়োজন। কারণ থোড়ে প্রচুর পরিমাণে আয়রন রয়েছে যা আপনার রক্তের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করবে। তাই অ্যানিমিয়ার হাত থেকে বাঁচার জন্য অবশ্যই থোড় খেতে হবে। শুধু তাই নয়, এসিডিটি ও গ্যাসের সমস্যাও দূর করতে পারে থোড়। নিয়মিত এসিডিটির সমস্যায় ভুগলে কলার থোড়ের সরবত খেতে পারেন।
এটা শরীরের এসিডের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং ভারসম্য বজায় রাখে। শুধু তাই নয়, বুক জ্বালা পোড়া, অস্বস্থি, পেট জ্বালা পোড়া, এ ধরণের নানা রকম সমস্যা দূর করতে পারে থোড়। এছাড়াও গলব্লাডারকে পরিষ্কার রাখে ও কিডনিতে স্টোন জমতে দেয় না কলা গাছের থোড়।
নিয়মিত থোড়ের রসে এলাচ গুঁড়ো মিশিয়ে খেতে পারলে গলব্লাডার পরিষ্কার থাকে। শুধু তাই নয়, আপনার শিশুর ইউরিনের কোনো সমস্যা থাকলে থোড়ের রসে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে খাওয়াতে পারলে ইউরিন পরিষ্কার হবে। সেই সঙ্গে কিডনিতে স্টোন জমার কোনো আসঙ্কা থাকবে না।
থোড়ে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকার কারণে ফ্যাট ও সুগার দুটোকেই নিয়ন্ত্রণে রাখে। এমনকি থোড়ে ফাইবার থাকার কারণে মেটাবলিজমেও সাহায্য করে থাকে। থোড় আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারি। তাই থোড় খাওয়া খুবই প্রয়োজন। অনেকেই থোড় পছন্দ করেন না। কিন্তু থোড় ভাজা বা থোড় সর্ষে দিয়ে রান্না করে খেতে সত্যিই ভালো লাগে।