হাওর বার্তা ডেস্কঃ ঈদুল ফিতরের ছুটিতে সারাদেশের বিনোদন ও পর্যটনকেন্দ্র মানুষের আনাগোনায় মুখর হয়ে উঠেছে। এখন এসব কেন্দ্রে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। পরিবার-পরিজন, বন্ধু-বান্ধব নিয়ে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে আকর্ষণীয় পর্যটন অঞ্চল কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে জড়ো হয়েছেন লাখো মানুষ। ঈদের ছুটিতে লাখো পর্যটকের পদচারণায় সরগরম হয়ে উঠেছে বিশ্বের দীর্ঘ এই সমুদ্রবন্দরে। সকালে সৈকতে গোসল, বিকালে বালুচরে দাঁড়িয়ে অস্তগামী রাঙা সূর্য অবলোকন, পাহাড়ি ঝরনা, মেরিনড্রাইভ সড়ক পরিদর্শন করে সময় পার করছেন তারা।
ভ্রমণপিপাসু অনেক পর্যটক সমুদ্র সৈকতের পাশাপাশি সমুদ্র ভ্রমণ, প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন, মেরিন ড্রাইভ সড়ক, দরিয়ানগর পর্যটন স্পট, হিমছড়ি, ইনানী, মহেশখালী, সোনাদিয়াসহ বিভিন্ন স্পটে মনের আনন্দে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। সৈকতের বেলাভূমির পাশাপাশি প্রাকৃতিক আপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করে অভিভূত তারা।
হোটেল মালিকরা জানিয়েছেন, এবারের ঈদে লক্ষাধিক পর্যটক কক্সবাজারে এসেছেন। তাদের সামাল দিতে ট্যুরিস্ট পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
গতকাল শুক্রবার বিকালে সৈকতের লাবণী পয়েন্টে দেখা গেছে হাজার হাজার পর্যটক লো জেডস্কি ও স্পিডবোটে চড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন সাগরের ঢেউয়ে ঢেউয়ে। সাগরের মোহনীয় রূপ দেখে প্রাণ জুড়াচ্ছেন তারা। আবার অনেকে পানিতে গা ভাসিয়ে আনন্দ উল্লাস করছেন।
সৈকতে গিয়ে দেখা গেছে, প্রচুর পর্যটক ঢেউয়ের তালে তালে সাগরে গোসল করছেন। বালুরচরে খেলা করছে ছোট্টমনিরা। দেশি পর্যটকদের পাশাপাশি অনেক বিদেশি পর্যটকও ছিল চোখে পড়ার মতো। স্বজনদের সঙ্গে নিয়ে ভাগাভাগি করছেন ঈদ আনন্দ।
ঢাকার বারিধারা থেকে আসা পর্যটক শামছুর রহমান জানান, কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত দেখে তার খুব ভাল লাগছে। সারা বছর এ আনন্দ বুকে নিয়ে থাকতে চান তিনি।
স্বামীর সঙ্গে কক্সবাজার বেড়াতে এসেছেন রংপুরের বেগম রোকেয়া কলেজের শিক্ষার্থী শারমিন সুলতানা। তিনি বলেন, সমুদ্রের জলরাশির কাছে পৃথিবীর সব সুন্দর যেন ম্লান। সমুদ্রের যে মোহনীয় আবেদন, তা প্রকৃতিপ্রেমী সব মানুষকে কাছে টানবে বলে আমি মনে করি। তাই সুযোগ পেলেই সমুদ্রের কাছে ছুটে আসার চেষ্টা করব।
ঢাকা থেকে বন্ধুদের সঙ্গে কক্সবাজার বেড়াতে এসেছেন বেসরকারি একটি ব্যাংকের কর্মকর্তা আলফাজ হোসেন। সৈকতের লাবনী পয়েন্টে অনেকটা মুগ্ধতার আবেশে তিনি বলেন, কক্সবাজার আমার কাছে অসাধারণ একটি জায়গা। এখানে না আসলে সমুদ্রের কী মোহনীয়তা তা কেই বুঝতে পারবে না। সবার কাছে আমি আহ্বান জানাবো অন্তত একবার হলেও কক্সবাজার থেকে ঘুরে যান।
দিনাজপুর থেকে আসা শফিকুর রহমান নামে এক পর্যটক জানান, ঈদে ছেলেমেয়েদের স্কুল বন্ধ। তাই পরিবারের সবাইকে নিয়ে কক্সবাজার দেখতে এসেছেন তিনি। বিশাল সাগরের গর্জন শুনে তিনি অভিভূত।
এদিকে পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশ। সমুদ্র সৈকতসহ আশপাশের পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে নিরাপত্তা দিতে বাড়তি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের পুলিশ সুপার মো. জিল্লুর রহমান বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তায় সৈকত এলাকায় পোশাকধারী পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। পর্যটকদের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশের বিশেষ রেসকিউ টিম, ইভটিজিং কন্ট্রোল টিম, ড্রিংকিং জোন, দ্রুত চিকিৎসাসহ নানা পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। সৈকতে বিচ বাইক নিয়ে টহল অব্যাহত রেখেছে ট্যুরিস্ট পুলিশ।