ঢাকা ১০:১৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম

বায়তুল মোকাররমের পিলার গায়েব

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৫:৪৮:৪৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ মে ২০১৯
  • ২৬২ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ মুসল্লি ধারণক্ষমতার দিক থেকে বিশ্বের দশম বৃহত্তম মসজিদ বায়তুল মোকাররম। অভিযোগ উঠেছে, ঐতিহাসিক এ স্থাপনাটির ভার বহনকারী মূল দুটি পিলারের একটি এবং এর সঙ্গে যুক্ত ১৫ ফুট দেয়াল রাতের আঁধারে ভেঙে স্ত্রীর মালিকানাধীন দোকান বড় করেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের এক নেতা। এ নিয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়; গঠন করা হয় একাধিক তদন্ত কমিটি।

এ দিকে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের তদন্তে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর গত ২০ মার্চ ধর্ম মন্ত্রণালয়ে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনও পাঠানো হয়। কিন্তু এ পর্যন্ত অভিযোগের বিপরীতে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এ দিকে মসজিদের ভার বহনকারী পিলার ও দেয়াল ভেঙে ফেলায় যে কোনো সময় মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। অভিযুক্ত ওই নেতার নাম মো. সোহরাব হোসেন গাজী। তিনি আওয়ামী লীগের বায়তুল মোকাররম ইউনিট সভাপতি। দোকানটির মালিকানা তার স্ত্রী শায়লা আক্তারের নামে। গতকাল বুধবারও দোকানটি চালু দেখা গেছে।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক শামীম মোহাম্মদ আফজাল স্বাক্ষরিত যে প্রতিবেদনটি ধর্ম মন্ত্রণালয়ে দাখিল করা হয়েছে, তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, গত বছরের ১৬ অক্টোবর মধ্যরাতে বায়তুল মোকাররম মসজিদ-মার্কেট কমপ্লেক্সে দায়িত্ব পালনকালে নৈশপ্রহরীরা ইলেকট্রনিক্স মার্কেটে বিকট শব্দ পেয়ে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করে। কিন্তু সব গেট ভেতর থেকে তালাবদ্ধ অবস্থায় দেখতে পান তারা। অনেক অনুরোধ করলেও ব্যবসায়ীদের নিয়োগ করা গার্ডরা ভেতর থেকে তালা খোলেননি।

সকালে খোঁজ নিয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষ জানতে পারে, বায়তুল মোকাররমের অভ্যন্তরে অবস্থিত মসজিদ ভবনের মূল লোড বহনকারী একটি পিলার অপসারণ করে নিউ সুপার মার্কেটের এইচ-৬ নম্বর দোকানের আয়তন বড় করা হয়েছে। রাতের আঁধারেই নিয়ম বহির্ভূতভাবে দোকানটির ছাদে প্লাস্টার ও চুনকাম করা হয়েছে; ফ্লোরে বসানো হয়েছে টাইলস। এ বিষয়ে গত ২৪ অক্টোবর পল্টন থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন বায়তুল মোকাররম মসজিদ ও মার্কেটের সিকিউরিটি সুপারভাইজার মো. নুরুল হক।

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, উপরোল্লিখিত দোকানটির ভেতরে ২৪.৭৭ বর্গফুট ব্যাসের একটি লোড বিয়ারিং পিলার ছিল। সম্পূর্ণ অবৈধভাবে পিলারটি অপসারণ করা হয়। এ পিলারের সঙ্গে সংযুক্ত ১৫ ফুট লোড বিয়ারিং দেয়ালটিও ভেঙে ফেলা হয়েছে। যে পিলারটি ভেঙে ফেলা হয়েছে এটির সমান্তরালে উত্তর পাশে আরেকটি পিলার রয়েছে। মূলত এ দুটি পিলারের উপরই মসজিদ ভবনটির লোড পড়েছে। পিলার ও দেয়াল অপসারণের ফলে মূল মসজিদ ভবনের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। যে কোনো সময় ঘটতে পারে বড় কোনো দুর্ঘটনা।

অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে আওয়ামী লীগ নেতা সোহরাব হোসেন সাংবাদিককে বলেন, বায়তুল মোকাররম মসজিদের যে পিলার ভেঙে গায়েব করার কথা বলছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন; প্রকৃত পক্ষে আমার দোকানে এমন কোনো পিলারের অস্তিত্বই নেই; ছিলও না। একটি মহল আমার সুনাম ক্ষুণ করতে এমন অপপ্রচার চালাচ্ছে।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক (মসজিদ ও মার্কেট বিভাগ) মুহাম্মদ মহীউদ্দিন মজুমদার সাংবাদিককে বলেন, পিলার ভেঙে অপসারণের বিষয়ে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্তে প্রমাণ মিলেছে সুপার মার্কেট নিউ’র দোকান নম্বর এইচ-৬ এর অভ্যন্তরে যে লোড বিয়ারিং পিলার ছিল, সেটি রাতের বেলা অবৈধভাবে অপসারণ করেছেন দোকান সংশ্লিষ্টরা। এতে যে কোনো সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে পরবর্তী সিদ্ধান্ত এলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

ক্যাটরিনার হাতে ২০ বার থাপ্পড় খেয়েছিলেন ইমরান খান

বায়তুল মোকাররমের পিলার গায়েব

আপডেট টাইম : ০৫:৪৮:৪৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ মে ২০১৯

হাওর বার্তা ডেস্কঃ মুসল্লি ধারণক্ষমতার দিক থেকে বিশ্বের দশম বৃহত্তম মসজিদ বায়তুল মোকাররম। অভিযোগ উঠেছে, ঐতিহাসিক এ স্থাপনাটির ভার বহনকারী মূল দুটি পিলারের একটি এবং এর সঙ্গে যুক্ত ১৫ ফুট দেয়াল রাতের আঁধারে ভেঙে স্ত্রীর মালিকানাধীন দোকান বড় করেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের এক নেতা। এ নিয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়; গঠন করা হয় একাধিক তদন্ত কমিটি।

এ দিকে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের তদন্তে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর গত ২০ মার্চ ধর্ম মন্ত্রণালয়ে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনও পাঠানো হয়। কিন্তু এ পর্যন্ত অভিযোগের বিপরীতে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এ দিকে মসজিদের ভার বহনকারী পিলার ও দেয়াল ভেঙে ফেলায় যে কোনো সময় মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। অভিযুক্ত ওই নেতার নাম মো. সোহরাব হোসেন গাজী। তিনি আওয়ামী লীগের বায়তুল মোকাররম ইউনিট সভাপতি। দোকানটির মালিকানা তার স্ত্রী শায়লা আক্তারের নামে। গতকাল বুধবারও দোকানটি চালু দেখা গেছে।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক শামীম মোহাম্মদ আফজাল স্বাক্ষরিত যে প্রতিবেদনটি ধর্ম মন্ত্রণালয়ে দাখিল করা হয়েছে, তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, গত বছরের ১৬ অক্টোবর মধ্যরাতে বায়তুল মোকাররম মসজিদ-মার্কেট কমপ্লেক্সে দায়িত্ব পালনকালে নৈশপ্রহরীরা ইলেকট্রনিক্স মার্কেটে বিকট শব্দ পেয়ে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করে। কিন্তু সব গেট ভেতর থেকে তালাবদ্ধ অবস্থায় দেখতে পান তারা। অনেক অনুরোধ করলেও ব্যবসায়ীদের নিয়োগ করা গার্ডরা ভেতর থেকে তালা খোলেননি।

সকালে খোঁজ নিয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষ জানতে পারে, বায়তুল মোকাররমের অভ্যন্তরে অবস্থিত মসজিদ ভবনের মূল লোড বহনকারী একটি পিলার অপসারণ করে নিউ সুপার মার্কেটের এইচ-৬ নম্বর দোকানের আয়তন বড় করা হয়েছে। রাতের আঁধারেই নিয়ম বহির্ভূতভাবে দোকানটির ছাদে প্লাস্টার ও চুনকাম করা হয়েছে; ফ্লোরে বসানো হয়েছে টাইলস। এ বিষয়ে গত ২৪ অক্টোবর পল্টন থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন বায়তুল মোকাররম মসজিদ ও মার্কেটের সিকিউরিটি সুপারভাইজার মো. নুরুল হক।

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, উপরোল্লিখিত দোকানটির ভেতরে ২৪.৭৭ বর্গফুট ব্যাসের একটি লোড বিয়ারিং পিলার ছিল। সম্পূর্ণ অবৈধভাবে পিলারটি অপসারণ করা হয়। এ পিলারের সঙ্গে সংযুক্ত ১৫ ফুট লোড বিয়ারিং দেয়ালটিও ভেঙে ফেলা হয়েছে। যে পিলারটি ভেঙে ফেলা হয়েছে এটির সমান্তরালে উত্তর পাশে আরেকটি পিলার রয়েছে। মূলত এ দুটি পিলারের উপরই মসজিদ ভবনটির লোড পড়েছে। পিলার ও দেয়াল অপসারণের ফলে মূল মসজিদ ভবনের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। যে কোনো সময় ঘটতে পারে বড় কোনো দুর্ঘটনা।

অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে আওয়ামী লীগ নেতা সোহরাব হোসেন সাংবাদিককে বলেন, বায়তুল মোকাররম মসজিদের যে পিলার ভেঙে গায়েব করার কথা বলছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন; প্রকৃত পক্ষে আমার দোকানে এমন কোনো পিলারের অস্তিত্বই নেই; ছিলও না। একটি মহল আমার সুনাম ক্ষুণ করতে এমন অপপ্রচার চালাচ্ছে।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক (মসজিদ ও মার্কেট বিভাগ) মুহাম্মদ মহীউদ্দিন মজুমদার সাংবাদিককে বলেন, পিলার ভেঙে অপসারণের বিষয়ে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্তে প্রমাণ মিলেছে সুপার মার্কেট নিউ’র দোকান নম্বর এইচ-৬ এর অভ্যন্তরে যে লোড বিয়ারিং পিলার ছিল, সেটি রাতের বেলা অবৈধভাবে অপসারণ করেছেন দোকান সংশ্লিষ্টরা। এতে যে কোনো সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে পরবর্তী সিদ্ধান্ত এলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।