সিঁড়ি ব্যবহারে ক্যান্সারের আশঙ্কা কমবে

হাওর বার্তা ডেস্কঃ প্রতিদিন কোনো না কোনো কাজে সিঁড়ি সবাইকে সিড়ি ভাঙতে হয়! কারণ শহরের বিভিন্ন বাড়ি থেকে শুরু করে অফিস সব জায়গাতেই সিঁড়ি রয়েছে। তবে সিঁড়ি দিয়ে ওঠা-মানা করা কষ্ট তাই আমরা সিঁড়িকে এড়িয়ে চলতে পছন্দ করি। সিঁড়ির বদলে লিফট ব্যবহার করতে চাই। কিন্তু সিঁড়ি ব্যবহারে যে উপকার রয়েছে তা জানলে আপনি অবশ্যই লিফট বাদ দিয়ে সিঁড়ি ব্যবহার করতে চাইবেন।

সিঁড়ি দিয়ে ওঠা নামা করার সময় সারা শরীরে রক্তের প্রবাহ এতটা বেড়ে যায় যে রক্তচাপ স্বাভাবিক মাত্রায় নেমে আসতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের মতো মরণ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও কমে। এখানেই শেষ নয়, সিঁড়ির সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতালে মেলে আরও অনেক শারীরিক উপকার। কত দ্রুত আপনি সিঁড়ি দিয়ে ওঠা নামা করতে পারছেন তার উপর নির্ভর করে আপনি কত ফিট। প্রতিদিন অন্তত দু’বার যদি সিঁড়ি দিয়ে ওঠা নামা করতে পারেন তাহলে আপনার ক্যান্সারের সম্ভাবনা কমবে। এছাড়াও ফুসফুসের কর্মক্ষমতা বাড়বে।

মনকে চাঙ্গা করে তোলে
কথাটা শোনার পর নিশ্চয় অবাক হচ্ছেন, মন খারাপের প্রকোপ কমিয়ে মুডকে চাঙ্গা করে তুলতে সিঁড়ির ব্যবহার বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আসলে সিঁড়ি দিয়ে ওঠা বা নামার সময় আমাদের মস্তিষ্কের অন্দরে এন্ডোরফিন নামক ‘ফিল গুড’ হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই মন চাঙ্গা হয়ে উঠতে সময় লাগেনা।

একসঙ্গে দুটো সিঁড়ি ভাঙলে মিলবে বেশি উপকার
একাধিক স্টাডিতে দেখা গেছে একটা সিঁড়ি দিয়ে ওঠার সময় একটা একটা করে সিঁড়ি ভাঙার পরিবর্তে যদি একসঙ্গে দুটি করে সিঁড়ি টপকে টপকে ওঠা যায়, তাহলে আরো বেশি উপকার মেলে। কারণ এমনটা করলে শরীরের অন্দরে উপকারি হরমোনের ক্ষরণ যেমন বেড়ে যায়, তেমনি শরীরের প্রতিটি পেশীর কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্তের সরবরাহ বেড়ে যায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই প্রতিটি অঙ্গের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

জয়েন্টের কর্মক্ষমতা বাড়ে
বয়সের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের শরীর যেমন বুড়ো হতে থাকে, তেমনি জয়েন্টের সচলতাও কমতে শুরু করে। ফলে ব্যথা-যন্ত্রণায় জীবন জর্জরিত হয়ে ওঠে। আপনি যদি না চান আপনার সঙ্গেও এমনটা হোক, তাহলে ভুলেও লিফট ব্যবহার করবেননা। পরিবর্তে সিঁড়ির সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতাতে হবে। কারণ খেয়াল করে দেখবেন সিঁড়ি ব্যবহার করলে জয়েন্টের কর্মক্ষমতা বেড়ে যায়। ফলে শরীরের বয়স বাড়লেও তার প্রভাব জয়েন্টের উপর পরতে পারেনা।

পায়ের পেশীর সচলতা বৃদ্ধি পায়
সিঁড়ি দিয়ে ওঠা-নামার সময় আমরা গ্র্যাভিটির বিপরীতমুখী হই। তাই এই সময় নিজের ওজনকে সামলে একের পর এক ধাপ নিয়ে উপরে ওঠার সময় পায়ের পেশীর উপর চাপ পরতে থাকে। এমনটা দিনের পর দিন হতে থাকলে একদিকে যেমন পায়ের নিচের অংশের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। তেমনি পেটের পেশীর সচলতাও বাড়তে থাকে। ফলে বেলি ফ্যাট কমার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়।

জিমের সমান উপকার মেলে
জিমে গিয়ে ৩০ মিনিট ঘাম ঝরালে যতটা উপকার পাওয়া যায়, ততটা না হলেও কিছু কম উপকার পাওয়া যায়না সিঁড়ি ব্যবহার করলে। একাধিক কেস স্টাডিতে দেখা গেছে, সিঁড়ি দিয়ে দ্রুত ওঠা-নামা করলে যে পরিমাণ ক্যালরি বার্ন হয়, তা অন্য কোনো এক্সারসাইজ করলে হয়না। তাই শারীরিকভাবে চাঙ্গা থাকতে এবং ওজনকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সিঁড়ির সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে ভুলবেননা যেন!

ওজন কমতে থাকে
অতিরিক্ত ওজনের কারণে কি চিন্তায় রয়েছেন? তাহলে ভুলেও লিফটের দিকে পা বাড়াবেননা। কারণ একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত সিঁড়ি ভাঙার অভ্যাস করলে শারীরিক সচলতা বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে শরীরে জমতে থাকা অতিরিক্ত ক্যালরি ঝরতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ওজন কমার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়, যা লিফট ব্যবহার করলে কখনই সম্ভব হতোনা।

হার্টের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়
যেমনটা আগেও আলোচনা করা হয়েছে যে সিঁড়ি দিয়ে ওঠা-নামা করার সময় সারা শরীরে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্তের সরবরাহ বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে হার্টের কর্মক্ষমতাও বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়। যাদের পরিবারে হার্টের রোগের ইতিহাস রয়েছে, তাদের তো এই কারণেই বেশি করে সিঁড়ি ব্যবহারের প্রয়োজন রয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর