ঢাকা ০৭:৩৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কিডনিতে পাথর হওয়ার লক্ষণ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৫:২৮:৫১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ মে ২০১৯
  • ৩২৬ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কিডনিতে পাথর বর্তমানে পরিচিত রোগগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম। শরীরের ভেতর জমে থাকা বর্জ্য পদার্থগুলো পরিশোধিত হয় এই কিডনির মাধ্যমেই। কিডনিতে পাথর হওয়ার তেমন কোনো কারণ জানা যায় না। তবে কিছু কারণ ধারণা করেন চিকিৎসকরা।

যেমন, দৈনিক অল্প পানি পান করা, খাবারে অধিক লবণ খাওয়া, কম ফলফলাদি ও শাকসবজি খাওয়া, বেশি রেড মিট খাওয়া ইত্যাদি। তবে অযথা বিচলিত হওয়ার প্রয়োজন নেই। এসব লক্ষণ মানেই যে আপনার কিডনিতে পাথর হয়েছে, তা নাও হতে পারে। কিন্তু এসব উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন এবং পরীক্ষা করে নিশ্চিত হয়ে নিন আসলেই কিডনিতে পাথরের জন্য এমন হচ্ছে কি না। নাকি অন্য কোনো সমস্যা রয়েছে।

লক্ষণ

কিডনিতে পাথর হলে অনেক ক্ষেত্রেই কোনো উপসর্গ নাও দেখা দিতে পারে। তবে

১। মাঝে মাঝে প্রস্রাবের সঙ্গে ছোট ছোট পাথর যাওয়া।

২। হঠাৎ তলপেটে, নিচের পেটের দুই পাশে বা কোমরে তীব্র ব্যথা।

৩। রক্তবর্ণের লাল প্রস্রাব, ব্যথা, জ্বালাপোড়া থাকতে পারে।

৪। ব্যথার সঙ্গে বমি বমি ভাব বা বমিও হতে পারে।

৪। ঘোলাটে এবং দুর্গন্ধযুক্ত প্রস্রাব হতে পারে।

৫। ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া বা অল্প একটু হয়েই আর না হওয়া।

৬। কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসা।

তবে আকস্মিকভাবে পেট বা পিঠে ব্যথা অনুভব করা কিংবা প্রস্রাবের সময় ব্যথা অনুভব করা মানেই কিডনিতে পাথরের লক্ষণ নয়। তবে এসব ক্ষেত্রে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। কারণ এটি হতে পারে অন্য কোনো রোগের লক্ষণও। এসব উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন এবং পরীক্ষা করে নিশ্চিত হয়ে নিন।

হতে হবে সচেতন

১। দৈনিক অন্তত ৮-১০ গ্লাস বিশুদ্ধ পানি পান করলে শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ পরিমাণে প্রস্রাবের সঙ্গে বের হয়ে যায় এবং কিডনির পাথরের ঝুঁকি এবং জটিলতা কমিয়ে আনে।

২। আমিষজাতীয় খাদ্যের পরিমাণ পরিমিত রাখুন।

৩। কখনোই প্রস্রাব আটকে রাখবেন না।

৪। ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবার খাওয়া যাবে কিন্তু প্রয়োজন ছাড়া ক্যালসিয়াম ওষুধ ও ভিটামিন ডিযুক্ত ওষুধ না খাওয়াই ভালো।

৫। ইউরিন ইনফেকশন দেখা দিলে এর ঠিকমতো চিকিৎসা করান।

৬। দুধ ও দুধের তৈরি খাবার পুষ্টিকর হলেও সেসব, তবে পরিমিত পরিমাণে খাবেন, অতিরিক্ত নয়।

৭। ক্যাফেইন এবং সোডা এড়িয়ে চলুন। অতিরিক্ত কফি পানে কিডনির অবস্থা আরও খারাপ হবে।

কিডনিতে পাথর হলেই অপারেশন করতে হয় এমন ধারণা ঠিক নয়। চিকিৎসা নির্ভর করে পাথরের অবস্থান, আকার, ধরন, কিডনির কার্যকারিতা এবং প্রস্রাবের পথে প্রতিবন্ধকতার ওপর। পাথর যদি একের অধিক হয়ে থাকে এবং তা কিডনির গভীরে থাকে বা কিডনিতে কোনো ধরনের চাপ সৃষ্টি না করে, সেসব ক্ষেত্রে কী ধরনের চিকিৎসা রোগীর জন্য উপকারী হবে তা বিশেষজ্ঞ ডাক্তারই বলবেন।

সময় থাকতে সচেতন থাকুন, নিজেকে সুস্থ রাখুন।

ডা. আবেদা কুদসী নওশী

এমবিবিঅএস (রাবি), সি-কার্ড (ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন)

মেডিকেল অফিসার (কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতাল)

প্রভাষক (ট্রমা সেন্টার মেডিকেল ইনস্টিটিউট)।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

কিডনিতে পাথর হওয়ার লক্ষণ

আপডেট টাইম : ০৫:২৮:৫১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ মে ২০১৯

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কিডনিতে পাথর বর্তমানে পরিচিত রোগগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম। শরীরের ভেতর জমে থাকা বর্জ্য পদার্থগুলো পরিশোধিত হয় এই কিডনির মাধ্যমেই। কিডনিতে পাথর হওয়ার তেমন কোনো কারণ জানা যায় না। তবে কিছু কারণ ধারণা করেন চিকিৎসকরা।

যেমন, দৈনিক অল্প পানি পান করা, খাবারে অধিক লবণ খাওয়া, কম ফলফলাদি ও শাকসবজি খাওয়া, বেশি রেড মিট খাওয়া ইত্যাদি। তবে অযথা বিচলিত হওয়ার প্রয়োজন নেই। এসব লক্ষণ মানেই যে আপনার কিডনিতে পাথর হয়েছে, তা নাও হতে পারে। কিন্তু এসব উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন এবং পরীক্ষা করে নিশ্চিত হয়ে নিন আসলেই কিডনিতে পাথরের জন্য এমন হচ্ছে কি না। নাকি অন্য কোনো সমস্যা রয়েছে।

লক্ষণ

কিডনিতে পাথর হলে অনেক ক্ষেত্রেই কোনো উপসর্গ নাও দেখা দিতে পারে। তবে

১। মাঝে মাঝে প্রস্রাবের সঙ্গে ছোট ছোট পাথর যাওয়া।

২। হঠাৎ তলপেটে, নিচের পেটের দুই পাশে বা কোমরে তীব্র ব্যথা।

৩। রক্তবর্ণের লাল প্রস্রাব, ব্যথা, জ্বালাপোড়া থাকতে পারে।

৪। ব্যথার সঙ্গে বমি বমি ভাব বা বমিও হতে পারে।

৪। ঘোলাটে এবং দুর্গন্ধযুক্ত প্রস্রাব হতে পারে।

৫। ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া বা অল্প একটু হয়েই আর না হওয়া।

৬। কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসা।

তবে আকস্মিকভাবে পেট বা পিঠে ব্যথা অনুভব করা কিংবা প্রস্রাবের সময় ব্যথা অনুভব করা মানেই কিডনিতে পাথরের লক্ষণ নয়। তবে এসব ক্ষেত্রে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। কারণ এটি হতে পারে অন্য কোনো রোগের লক্ষণও। এসব উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন এবং পরীক্ষা করে নিশ্চিত হয়ে নিন।

হতে হবে সচেতন

১। দৈনিক অন্তত ৮-১০ গ্লাস বিশুদ্ধ পানি পান করলে শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ পরিমাণে প্রস্রাবের সঙ্গে বের হয়ে যায় এবং কিডনির পাথরের ঝুঁকি এবং জটিলতা কমিয়ে আনে।

২। আমিষজাতীয় খাদ্যের পরিমাণ পরিমিত রাখুন।

৩। কখনোই প্রস্রাব আটকে রাখবেন না।

৪। ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবার খাওয়া যাবে কিন্তু প্রয়োজন ছাড়া ক্যালসিয়াম ওষুধ ও ভিটামিন ডিযুক্ত ওষুধ না খাওয়াই ভালো।

৫। ইউরিন ইনফেকশন দেখা দিলে এর ঠিকমতো চিকিৎসা করান।

৬। দুধ ও দুধের তৈরি খাবার পুষ্টিকর হলেও সেসব, তবে পরিমিত পরিমাণে খাবেন, অতিরিক্ত নয়।

৭। ক্যাফেইন এবং সোডা এড়িয়ে চলুন। অতিরিক্ত কফি পানে কিডনির অবস্থা আরও খারাপ হবে।

কিডনিতে পাথর হলেই অপারেশন করতে হয় এমন ধারণা ঠিক নয়। চিকিৎসা নির্ভর করে পাথরের অবস্থান, আকার, ধরন, কিডনির কার্যকারিতা এবং প্রস্রাবের পথে প্রতিবন্ধকতার ওপর। পাথর যদি একের অধিক হয়ে থাকে এবং তা কিডনির গভীরে থাকে বা কিডনিতে কোনো ধরনের চাপ সৃষ্টি না করে, সেসব ক্ষেত্রে কী ধরনের চিকিৎসা রোগীর জন্য উপকারী হবে তা বিশেষজ্ঞ ডাক্তারই বলবেন।

সময় থাকতে সচেতন থাকুন, নিজেকে সুস্থ রাখুন।

ডা. আবেদা কুদসী নওশী

এমবিবিঅএস (রাবি), সি-কার্ড (ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন)

মেডিকেল অফিসার (কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতাল)

প্রভাষক (ট্রমা সেন্টার মেডিকেল ইনস্টিটিউট)।