গাজীপুরে এখন আলোচিত ১ নাম শামসুন্নাহার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ জনসচেতনতা ও সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলায় গাজীপুরে এখন আলোচিত এক নাম শামসুন্নাহার। তার পরিচয় তিনি গাজীপুরের পুলিশ সুপার। ২০তম বিসিএসের এই পুলিশ কর্মকর্তা গত বছর ২৬ জুলাই চাঁদপুর থেকে গাজীপুরে যোগদানের পরই বদলে যাচ্ছে গোটা গাজীপুর। কাজের স্বীকৃতি সরুপ সাধারণ মানুষের মন জয়ের পাশাপাশি কীর্তিমান এই পুলিশ কর্মকর্তা অনন্যা সাহিত্য পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন চলতি বছর।

জেলায় দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই পুলিশ প্রশাসনের ভাবমূর্তি রক্ষার মাধ্যমে আইনের সদ্ব্যবহারে তিনি গুরুত্ব দিয়েছেন সবচেয়ে বেশি। আর গাজীপুরে আলোচনায় উঠে আসার পেছনে রয়েছে তার সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা। কাজের মধ্যে ডুবে থাকা এই নারী কর্মকর্তা দিন-রাত সমান করে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিতে জেলা জুড়ে চষে বেড়াচ্ছেন। নিজের দাপ্তরিক কাজের ফাঁকে সময় বের করে তিনি কখনও ছুটছেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আবার কখনও অসহায়দের সহায়তার কাজে। ইতিমধ্যেই তিনি জেলার প্রায় শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই সচেতনতার কাজ করেছেন। তার এই ছুটে চলার উদ্দেশ্যই হচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাল্য বিবাহ, যৌন হয়রানী, মাদক, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সচেতন করা। সবার আগে তিনি বিশেষ জোড় দিয়েছেন শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেশপ্রেম তৈরী করা, শুদ্ধ স্বরে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার ওপর। বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাকে কাছে পেয়ে হয়ে উঠছেন উচ্ছসিত।

বরমী বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী নাজমা সুলতানা বলেন, পুলিশ নিয়ে আমাদের মধ্যে একটা ভীতি ছড়িয়ে ছিল। সম্প্রতি পুলিশ সুপার আমাদের বিদ্যালয়ে হাজির হয়ে আমাদের নানা ধরনের দিক নির্দেশনা দিয়ে যান। এখন আমরা আপাকে দেখে প্রতিজ্ঞা করেছি আমরাও শামসুন্নাহার আপার মত জীবন গড়ে তুলব।

বরমী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শামসুল হক বাদল সরকার বলেন, একজন পুলিশ সুপারের সারাদিনই নানা ধরনের দাপ্তরিক কাজের মধ্যে ডুবে থাকতে হয়। কিন্তু আমরা দেখেছি একজন নারী হয়েও আমাদের সম্মানিত পুলিশ সুপার দাপ্তরিক কাজের পাশাপাশি জেলা জুড়েই সামাজিক আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। গাজীপুরবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিতে তিনি কখনও দিনে আবার কখনও বা রাতে ক্লান্তিহীনভাবে ছুটে চলছেন। এমন একজন পুলিশ সুপার পাওয়া সত্যিই ভাগ্যের বিষয়।

শ্রীপুর পৌর শহরের বাসিন্দা বিশ্বজিত সরকার বলেন, স্ত্রীর সঙ্গে তার বনিবনা হচ্ছিল না তাই স্ত্রী গত মাসে পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ করেছিলেন। পরে আচমকা এক দুপুরে পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার হাজির হন আমাদের বাড়িতে। সেখানে সবাইকে ডেকে পারিবারিক সমস্যার সমাধান করে দেন। এখন আমরা সুখেই আছি।

সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার বিষয়ে পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার বলেন, প্রত্যেকটা মানুষের সামাজিক দায়বদ্ধতা রয়েছে। তাই সবাইকে নিজেদের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন করতেই তিনি এ ধরনের উদ্যোগ নিয়েছেন। বিশেষ করে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা, যারা মানুষ হিসেবে গড়ে উঠে দেশ গড়তে আত্মনিয়োগ করবে তাদের মধ্যে দেশপ্রেম সৃষ্টি, জঙ্গিবাদ, মাদক, বাল্যবিবাহ ও যৌন হয়রানির কুফল সম্পর্কে সচেতন করা হচ্ছে। এছাড়াও সচেতনতার মাধ্যমে পারিবারিক সম্প্রতি রক্ষার লক্ষ্যে কাজ করছেন তিনি।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর