হাওর বার্তা ডেস্কঃ রাজধানির উত্তরায় অবস্থিত, কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতালে পাচ্ছেন মাত্র ১০ টাকায় উন্নত মানের চিকিৎসা। “কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতাল, যেখানে মাত্র ১০ টাকায় সকল বিশেষজ্ঞ চিকিৎসা দেওয়া হয় এবং সকল প্রকার ওষুধ বিনামুল্যে প্রদান করা হয়।
লাখ লাখ টাকা খরচ করে বিদেশে গিয়ে যে চিকিৎসা নিতে হতো তা এখন দেশেই মাত্র ১০ টাকায় মিলছে। রাজধানির উত্তরা আজমপুর রাজউক স্কুল এন্ড কলেজের পিছনে অবস্থিত “কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারী হাসপাতাল” উন্নত দেশের ন্যায় অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি সজ্জিত ও অবকাঠামোগত ভাবে গড়ে ওঠা কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারী হাসপাতাল অপারেশন থিয়েটার, পরীক্ষা-নিরীক্ষা বিভাগ, আইসিইউ, ওয়ার্ড, কেবিন, বহির্বিভাগ ও জরুরি বিভাগসহ অন্তত ২২টির মতো বিভাগ রয়েছে বিশাল এ হাসপাতালে। অত্যাধুনিক এই হাসপাতালটি উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতাল।
এ হাসপাতালে মাত্র ১০ টাকায় দেশের প্রথম সারির বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের চিকিৎসা পাচ্ছেন রোগীরা। নামিদামি প্রাইভেট চেম্বারে গিয়ে তিন থেকে পাঁচ মাস অপেক্ষা করেও যাদের সিরিয়াল পাওয়া যায় না সেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরাই ওই হাসপাতালে মাত্র ১০ টাকার টিকিটে রোগী দেখছেন। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত নিরীহ-দরিদ্র রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন প্রতিদিন। সেখানকার চিকিৎসকরা জানান, এখন আর চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওযার কোনো প্রয়োজন নেই। এই কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারী হাসপাতালে অপারেশন ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার যন্ত্রপাতি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ উন্নত দেশ থেকে ক্রয় করা হয়। যা এদেশে তৃতীয় কোনো সেবা প্রতিষ্ঠানে নেই।
কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারী হাসপাতালের সহকারী পরিচালক সাংবাদিককে বলেন, প্রতিদিন বহির্বিভাগে শত শত রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন। জরুরি বিভাগ ২৪ ঘণ্টা চালু করা হয়েছে। এছাড়াও জরুরি বিভাগে ডিউটি ডাক্তারের পাশপাশি একজন করে সহযোগী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দায়িত্ব পালন করছেন। যাতে করে সংকটাপন্ন রোগীর বিষয়ে তাৎক্ষণিক চিকিৎসাসেবার প্রস্তুতি নিতে পারেন। তিনি বলেন, এছাড়া সকাল ৭টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত বহির্বিভাগে রোগী দেখা হচ্ছে। সেখানেও সহযোগী বিশেষজ্ঞ দ্বারা চিকিৎসাপত্র দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া ডাক্তার, নার্স দিয়ে আগত রোগীদের সুচিকিৎসায় এখানকার চিকিৎসকরা নিষ্ঠার সঙ্গে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
তিনি বলেন, এই কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারী হাসপাতালে বড়দের পাশাপশি শিশু বিষয়ক চিকিৎসা ও অপারেশনের পূর্ণাঙ্গ ব্যবস্থা রয়েছে। জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সহযোগী সাংবাদিককে বলেন, জরুরি বিভাগে দৈনিক এক থেকে দেড়শ রোগী আসেন। যাদের মধ্যে অধিকাংশ সংকটাপন্ন থাকেন। তিনি বলেন, এখানে বিনামূল্যে অনেক জটিল অপারেশন করে রোগীরা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছেন। আর ছোটখাটো অপারেশন প্রতিদিনই হচ্ছে। এছাড়া এখানে যে ধরনের অপারেশন করা হয় তা বিদেশে করতে কমপক্ষে ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা ব্যয় হতো। কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারী হাসপাতাল হওয়ায় তা থেকে সবাই রেহাই পেয়েছেন।
চিকিৎসকরা সাংবাদিককে জানান, প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে শুধুমাত্র জরুরি বিভাগে এক থেকে দেড়শ রোগী আসেন ভর্তি হওয়ার জন্য। একটি আসন খালি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শত শত রোগী হুমড়ি খেয়ে পড়েন। এছাড়াও বহির্বিভাগে দৈনিক সাত থেকে আটশ রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
সেখান থেকেও দৈনিক দশ থেকে পনেরজন রোগীর ভর্তি প্রয়োজন হয়ে থাকে। ফলে তাদেরকেও ফিরে যেতে হচ্ছে। তবে উন্নতমানের প্রযুক্তি আর মাত্র ১০ টাকায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসা পেয়ে খুশি রোগীরা। রোগীর স্বজনার জানান, বিদেশে লাখ লাখ টাকা খরচ করে চিকিৎসা করতে হয়। আর এখানে মাত্র ১০ টাকায় ভর্তি হয়েই বিদেশের চিকিৎসা পাওয়া যাচ্ছে। আধুনিক প্রযুক্তি আর হাতের কাছে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সেবা পেতে প্রতিদিন রাজধানীর বাইরের রোগীরা বেশি ভিড় জমাচ্ছেন।