হাওর বার্তা ডেস্কঃ এখন বৈশাখ মাস। সারাদেশে চলছে তীব্র দাবদাহ। প্রচণ্ড গরমে প্রয়োজন ছাড়া হবিগঞ্জ শহরের মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। আবার ঘরের ভেতরে থেকেও ভ্যাপসা গরমে হাসপাস করছেন সবাই। কিন্তু শহরের অবস্থা এমন হলেও গ্রামের দৃশ্য একদম উল্টো। প্রচণ্ড গরমেও গ্রামের মানুষ ঘরে থাকছেন না। শিশু-কিশোর, বৃদ্ধ-বৃদ্ধাসহ নারী-পুরুষ সবাই প্রচণ্ড গরমকে উপেক্ষা করে বোরো ধান ঘরে তুলতে মাঠে কাজ করছেন।
দিন কিংবা রাত তাদের কাছে যেন কোনো পার্থক্য নেই। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জেলায় বোরো ধানের আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল এক লাখ ১৫ হাজার ১১৫ হেক্টর জমিতে। কিন্তু লক্ষ্যমাত্র ছড়িয়ে জেলায় আবাদ হয়েছে এক লাখ ২১ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে। এছাড়া বোরো ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করা হয়েছিল প্রতি হেক্টর জমিতে ৩.৯৫ টন। যা অতিক্রম করে উৎপাদন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ৪.০৫ টন।
সরজমিন হবিগঞ্জের বিভিন্ন হাওর ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি হাওরেই ধান কাটতে শুরু করেছেন কৃষক-কৃষাণী। বৈশাখের প্রথম সময় থেকে শুরু করে জ্যৈষ্ঠ মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত কৃষকরা নতুন ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করবেন।
প্রচ-দাপদাহ উপেক্ষা করে পুরুষ ও যুবকরা হাওরে ধান কাটছেন। আর নারীরা খলায় (ধান শুকানোর মাঠ) বিভিন্ন কাজ করছে। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত চলছে ধান তোলার ব্যস্ততা। কেউ কেউ ধান শুকাচ্ছেন, কেউ মাড়াই করছেন আবার কেউ খড় শুকাতে রোদে দিচ্ছেন।
বানিয়াচং উপজেলার কৃষক রাজেন্দ্র দাস বলেন, ‘বৈশাখে কাজের শেষ নেই। সারা বছর যে কাজ করি তাও বৈশাখের সমান হবে না। কারণ এ মাসটি আমাদের সারা বছরের হাসি-কান্নার মাস। সারা বছর ভালো থাকার জন্য এ মাসে রোদ উপেক্ষা করে কাজ করতে হয়।’
লাখাই উপজেলার কৃষক আব্দুল আওয়াল বলেন, ‘এ বছর ধানের ভালো ফলন হয়েছে। তাই আমরা অনেক খুশি। তীব্র গরমে ধান কাটতে কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু তাও গায়ে লাগছে না।’