ঢাকা ১০:০৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আগামী নির্বাচনে সমর্থনে বিএনপির চেয়ে আওয়ামী লীগকে এগিয়ে রেখেছে ভারত

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:১২:৫৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ জুলাই ২০১৮
  • ৪৮৮ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বাংলাদেশের নির্বাচনে ভারতের প্রভাব খাটানোর অভিযোগ দীর্ঘদিনের। তবে এই প্রভাব খাটানো বা নাক গলানোর বিষয়টি বরাবরেই অস্বীকার করে এসেছে ভারত। এবারের নির্বাচনে নয়াদিল্লি অবশ্যই চাইবে বাংলাদেশে এমন একটা সরকার আসুক যার সময় বন্ধুত্ব বাড়বে। আর সেই বিচারে দেখতে গেলে এখন পর্যন্ত হিসেবের খাতায় খালেদা জিয়ার বিএনপির চেয়ে এগিয়ে শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ।

বাংলাদেশের নির্বাচন এবং সম্প্রতি বিএনপি ও আওয়ামী লীগ নেতাদের ঘনঘন দিল্লি সফর নিয়ে পর্যালোচনায় এ বিষয়টি উঠে এসেছে ভারতের প্রভাবশালী বাংলা দৈনিক যুগশঙ্খের এক সম্পাদকীয়তে। শনিবার প্রকাশিত সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনেই। আর তাকে ঘিরেই এখন উৎসুক উপমহাদেশের রাজনীতি। এই নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি অংশ নেবে কি না, আবার কি আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসছে, নাকি তৃতীয় শক্তির কোনও উত্থান ঘটবে, এসব প্রশ্ন কূটনৈতিক মহলের আলোচনায় রয়েছে।

নির্বাচনের তারিখ এখনও ঘোষণা না হলেও ওপারের মন্ত্রী, নীতিনির্ধারক ও প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের নেতাদের হঠাৎ করেই ঘনঘন দিল্লি যাতায়াতে বিভিন্ন মহলে জল্পনার সৃষ্টি হয়েছে। ঢাকার রাজনীতিতে বরাবর একটা ধারণা আছে বাংলাদেশের নির্বাচনে সবসময় নয়াদিল্লি প্রভাব খাটানোর চেস্টা করে। এবং এই ইস্যু বাংলাদেশের নিয়ে রাজনৈতিক আবহাওয়া গরম করার প্রচেষ্টাও দেখা গিয়েছে বারবার। যদিও প্রতিবারই নয়াদিল্লি বিষয়টি অস্বীকার করেছে।

অবশ্য, সম্প্রতি বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রবীশকুমার আরও একবার বিষয়টি নাকচ করে দিয়ে জানিয়েছেন, বিশ্বের যে কোনও দেশের নির্বাচন হোক না কেন, সেটা সম্পূর্ণ তাদের নিজস্ব ব্যাপার। সেই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নাক গলানোর কথা ভারত কখনও স্বপ্নেও ভাবে না। ঘরের পাশে বাংলাদেশের জন্যও একই কথা খাটে।

তবে এই প্রভাব খাটানো বা নাক গলানোর বিষয়টি এভাবে না দেখাই ভালো। কারণ, নয়াদিল্লি অবশ্যই চাইবে বাংলাদেশে এমন একটা সরকার আসুক যার সময় বন্ধুত্ব বাড়বে। দেশটির রাজনীতি স্থিতিশীল থাকবে। অবশ্যই ভারতে সীমান্ত-সংক্রান্ত নিরাপত্তা সুদৃঢ় থাকবে। আর সেই বিচারে দেখতে গেলে এখন পর্যন্ত হিসেবের খাতায় এগিয়ে কিন্তু শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ। তার শাসনকালে আমাদের সঙ্গে বন্ধুত্বই শুধু বাড়েনি, সীমান্তীয় নিরাপত্তা অনেকটাই সুদৃঢ় হয়েছে। দুদেশের মধ্যে তিস্তা চুক্তি ছাড়া ছিটমহল,সমুদ্রসীমা-সহ একাধিক অমীমাংসীত বিষয়ে সুস্পষ্ট সমাধানের দিকে এগানো গিয়েছে।

অন্যদিকে খালেদা জিয়া ও তারেক জিয়ার বিএনপি নামক দলটির ভারত প্রশ্নে অবস্থান কিন্তু বারবার প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। বিএনপির একটা ভারতবিরোধী দৃষ্টিকোণ এখনও আছে, আর পাকিস্থানপন্থী শক্তি জামায়াতের সঙ্গে তাদের আঁতাঁত প্রকাশ্যে রয়েছে যা নয়াদিল্লির সবচেয়ে বড় মাথাব্যথার কারণ। এটা নিযে বারবার দলটিকে সতর্ক করা হলেও তারা কিন্তু এখনও জামায়াতের সংশ্রব ত্যাগ করতে পারেনি।

দেশের কূটনৈতিক মহল যুযুধান আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাদের বারংবার ভারত সফর নিয়ে মনে করছে, এবার হয়তো বাংলাদেশের রাজনীতিতে ভারত বিরোধীতার যুগ শেষ হতে চলেছে। জনগন যে বিষয়টি ভালো ভাবে নিচ্ছেন না তা হয়তো উপলব্ধি করতে পেরেছেন ওপারের রাজনৈতিক নেতৃত্ব। ভারত বিরোধী নয়, বরং সুসম্পর্কই এখন বাংলাদেশের দলগুলোকে নির্বাচনী ফায়দা দেবে এই ধারণা থেকেই নয়াদিল্লির সঙ্গে সম্পর্ক নতুন করে ঝালিয়ে নেওয়ার চেষ্টা লক্ষ করা যাচ্ছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

আগামী নির্বাচনে সমর্থনে বিএনপির চেয়ে আওয়ামী লীগকে এগিয়ে রেখেছে ভারত

আপডেট টাইম : ১১:১২:৫৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ জুলাই ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বাংলাদেশের নির্বাচনে ভারতের প্রভাব খাটানোর অভিযোগ দীর্ঘদিনের। তবে এই প্রভাব খাটানো বা নাক গলানোর বিষয়টি বরাবরেই অস্বীকার করে এসেছে ভারত। এবারের নির্বাচনে নয়াদিল্লি অবশ্যই চাইবে বাংলাদেশে এমন একটা সরকার আসুক যার সময় বন্ধুত্ব বাড়বে। আর সেই বিচারে দেখতে গেলে এখন পর্যন্ত হিসেবের খাতায় খালেদা জিয়ার বিএনপির চেয়ে এগিয়ে শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ।

বাংলাদেশের নির্বাচন এবং সম্প্রতি বিএনপি ও আওয়ামী লীগ নেতাদের ঘনঘন দিল্লি সফর নিয়ে পর্যালোচনায় এ বিষয়টি উঠে এসেছে ভারতের প্রভাবশালী বাংলা দৈনিক যুগশঙ্খের এক সম্পাদকীয়তে। শনিবার প্রকাশিত সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনেই। আর তাকে ঘিরেই এখন উৎসুক উপমহাদেশের রাজনীতি। এই নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি অংশ নেবে কি না, আবার কি আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসছে, নাকি তৃতীয় শক্তির কোনও উত্থান ঘটবে, এসব প্রশ্ন কূটনৈতিক মহলের আলোচনায় রয়েছে।

নির্বাচনের তারিখ এখনও ঘোষণা না হলেও ওপারের মন্ত্রী, নীতিনির্ধারক ও প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের নেতাদের হঠাৎ করেই ঘনঘন দিল্লি যাতায়াতে বিভিন্ন মহলে জল্পনার সৃষ্টি হয়েছে। ঢাকার রাজনীতিতে বরাবর একটা ধারণা আছে বাংলাদেশের নির্বাচনে সবসময় নয়াদিল্লি প্রভাব খাটানোর চেস্টা করে। এবং এই ইস্যু বাংলাদেশের নিয়ে রাজনৈতিক আবহাওয়া গরম করার প্রচেষ্টাও দেখা গিয়েছে বারবার। যদিও প্রতিবারই নয়াদিল্লি বিষয়টি অস্বীকার করেছে।

অবশ্য, সম্প্রতি বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রবীশকুমার আরও একবার বিষয়টি নাকচ করে দিয়ে জানিয়েছেন, বিশ্বের যে কোনও দেশের নির্বাচন হোক না কেন, সেটা সম্পূর্ণ তাদের নিজস্ব ব্যাপার। সেই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নাক গলানোর কথা ভারত কখনও স্বপ্নেও ভাবে না। ঘরের পাশে বাংলাদেশের জন্যও একই কথা খাটে।

তবে এই প্রভাব খাটানো বা নাক গলানোর বিষয়টি এভাবে না দেখাই ভালো। কারণ, নয়াদিল্লি অবশ্যই চাইবে বাংলাদেশে এমন একটা সরকার আসুক যার সময় বন্ধুত্ব বাড়বে। দেশটির রাজনীতি স্থিতিশীল থাকবে। অবশ্যই ভারতে সীমান্ত-সংক্রান্ত নিরাপত্তা সুদৃঢ় থাকবে। আর সেই বিচারে দেখতে গেলে এখন পর্যন্ত হিসেবের খাতায় এগিয়ে কিন্তু শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ। তার শাসনকালে আমাদের সঙ্গে বন্ধুত্বই শুধু বাড়েনি, সীমান্তীয় নিরাপত্তা অনেকটাই সুদৃঢ় হয়েছে। দুদেশের মধ্যে তিস্তা চুক্তি ছাড়া ছিটমহল,সমুদ্রসীমা-সহ একাধিক অমীমাংসীত বিষয়ে সুস্পষ্ট সমাধানের দিকে এগানো গিয়েছে।

অন্যদিকে খালেদা জিয়া ও তারেক জিয়ার বিএনপি নামক দলটির ভারত প্রশ্নে অবস্থান কিন্তু বারবার প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। বিএনপির একটা ভারতবিরোধী দৃষ্টিকোণ এখনও আছে, আর পাকিস্থানপন্থী শক্তি জামায়াতের সঙ্গে তাদের আঁতাঁত প্রকাশ্যে রয়েছে যা নয়াদিল্লির সবচেয়ে বড় মাথাব্যথার কারণ। এটা নিযে বারবার দলটিকে সতর্ক করা হলেও তারা কিন্তু এখনও জামায়াতের সংশ্রব ত্যাগ করতে পারেনি।

দেশের কূটনৈতিক মহল যুযুধান আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাদের বারংবার ভারত সফর নিয়ে মনে করছে, এবার হয়তো বাংলাদেশের রাজনীতিতে ভারত বিরোধীতার যুগ শেষ হতে চলেছে। জনগন যে বিষয়টি ভালো ভাবে নিচ্ছেন না তা হয়তো উপলব্ধি করতে পেরেছেন ওপারের রাজনৈতিক নেতৃত্ব। ভারত বিরোধী নয়, বরং সুসম্পর্কই এখন বাংলাদেশের দলগুলোকে নির্বাচনী ফায়দা দেবে এই ধারণা থেকেই নয়াদিল্লির সঙ্গে সম্পর্ক নতুন করে ঝালিয়ে নেওয়ার চেষ্টা লক্ষ করা যাচ্ছে।