ঢাকা ০৩:৪৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হবিগঞ্জের ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে মহাদুর্ভোগ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৩:৫৯:১৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১০ জুন ২০১৮
  • ৩১৮ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ হবিগঞ্জের চারটি উপজেলায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সীমানা রয়েছে ৮৫ কিলোমিটার। তন্মধ্যে ৫০ কিলোমিটার সড়কের অবস্থা খুবই নাজুক।

ঢাকা থেকে সিলেট অভিমুখে এ মহাসড়ক দিয়ে যাতায়াতের সময় দুর্ভোগ পোহাতে হয় যাত্রীদের। এ দুর্ভোগ শুরু হয় মাধবপুর থেকে। ২০০৩ইং সালে মহাসড়কটি নির্মাণ করা হয়। গত ৭-৮ বছর সড়কটি ভালো থাকলেও এখন যাত্রীদের কাছে মহাদুর্ভোগে পরিণত হয়েছে মহাসড়কটি। মহাসড়কে অসংখ্য খানাখন্দ তো আছেই, এছাড়াও রয়েছে অসহনীয় যানজট। অহরহ অঘটন ঘটছে এই মহাসড়কে। একের পর এক প্রাণ যাচ্ছে। সড়কটিতে দুর্ঘটনা এখন প্রতিদিনের সঙ্গী। এ দুর্ঘটনায় কেউ হয়ে যাচ্ছেন পুরো জীবনের জন্য পঙ্গু।

ঢাকা-সিলেট মহাসড়কটি এখন যেন গর্তের মহাসড়ক। ছোট-বড় গর্তের কারণে মহাসড়কটি গ্রাম্য সড়কে পরিণত হয়েছে। হবিগঞ্জ থেকে ঢাকা যাত্রা করলে তিন থেকে সোয়া তিন ঘন্টা লাগত। আর এখন সময় লাগে সাড়ে ৪ থেকে সাড়ে ৫ ঘন্টা। কখনো কখনো আরো বেশি। ভাঙ্গা সড়কটিতে এখন যানজট নিত্যসঙ্গী। ভাঙ্গাচুরার কারণে সড়কে দুর্ভোগের ব্যাপার যখনই আলোচনায় আসে, তখনই লোক-দেখানো কাজ করা হয়। কিন্তু এসব কাজেরও কোনো স্থায়িত্ব থাকে না। কিছু দিন পর ফের দেখা দেয় ভাঙ্গন। বিভিন্ন সূত্র জানায়, গত কয়েক মাসে ভাঙ্গা এ সড়কে অর্ধশতাধিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক আগে মরণ ফাঁদ বলে পরিচিত ছিল। এখন মৃত্যুকূপ ও দুর্ভোগের মহাসড়ক বলে পরিচিতি পেয়েছে।

মাধবপুর থেকে নবীগঞ্জ উপজেলার সীমানা শেরপুর পর্যন্ত মহাসড়কের স্থানে স্থানে ছোট-বড় গর্ত সৃষ্টি হওয়ায় যানবাহন চলছে ঝুঁকি নিয়ে। এসব গর্ত জোড়াতালি দিয়ে মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করা হয়।

সরজমিন ঘুরে দেখা যায়, নবীগঞ্জ উপজেলার শেরপুর সীমান্ত থেকে শুরু করে বাহুবল পর্যন্ত মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে কার্পেটিং উঠে বড় বড় গর্ত হয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশ ব্রীজের প্রবেশমুখে বড় বড় ভাঙ্গন ধরেছে। অল্প বৃষ্টিতেই এসব গর্তে পানি জমাট হয়ে ভরে উঠছে। এতে কোনো কোনো স্থানে হচ্ছে জলাবদ্ধতা। ফলে সড়ক চেনা মুশকিল হয়ে পড়ে চালকদের।

যাত্রীদের অভিযোগ–শায়েস্তাগঞ্জ নতুন ব্রীজ পয়েন্ট, লস্করপুর রেলক্রসিং, অলিপুর রেলক্রসিং এলাকার অবস্থা আরো ভয়াবহ। খানাখন্দ আর যত্রতত্র গর্তে পুরো রাস্তা যেন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের আরও বিড়ম্বনা শুরু হয় বিশ্বরোড পার হওয়ার পর। বিজয়নগর, মাধবপুর, শায়েস্তাগঞ্জ, বাহুবল, নবীগঞ্জ, মৌলভীবাজারের শেরপুর পেরিয়ে সিলেট পর্যন্ত সড়কের এমন বেহাল অবস্থা দীর্ঘ দিনের। মহাসড়কটি দীর্ঘদিন সংস্কার হয়নি। মহাসড়কের এমন করুণ অবস্থার মধ্য দিয়েই যাত্রী ও পণ্যবাহী যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে প্রতিদিন।

অপরদিকে, নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের সঈদপুর বাজার, দেবপাড়া ইউনিয়নের সদরঘাট নতুন বাজার থেকে শুরু করে পানিউমদা বাজার পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার সড়কের বিভিন্ন স্থানে অনেক বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে টানা বৃষ্টির পানি জমে গর্তগুলো ভরে উঠে। এ কারণেও মারাত্মক দুর্ঘটনাও ঘটে।

হবিগঞ্জ সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, ইতোমধ্যে মহাসড়কের ভাঙ্গা স্থানগুলোতে সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে। আশা করি ঈদের আগেই কাজ শেষ হবে। ঈদ যাত্রায় যাত্রীরা নিরাপদে যাতায়াত করতে পারবেন। তবে বৃষ্টির কারনে কাজে কিছুটা ব্যাঘাত হচ্ছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

হবিগঞ্জের ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে মহাদুর্ভোগ

আপডেট টাইম : ০৩:৫৯:১৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১০ জুন ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ হবিগঞ্জের চারটি উপজেলায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সীমানা রয়েছে ৮৫ কিলোমিটার। তন্মধ্যে ৫০ কিলোমিটার সড়কের অবস্থা খুবই নাজুক।

ঢাকা থেকে সিলেট অভিমুখে এ মহাসড়ক দিয়ে যাতায়াতের সময় দুর্ভোগ পোহাতে হয় যাত্রীদের। এ দুর্ভোগ শুরু হয় মাধবপুর থেকে। ২০০৩ইং সালে মহাসড়কটি নির্মাণ করা হয়। গত ৭-৮ বছর সড়কটি ভালো থাকলেও এখন যাত্রীদের কাছে মহাদুর্ভোগে পরিণত হয়েছে মহাসড়কটি। মহাসড়কে অসংখ্য খানাখন্দ তো আছেই, এছাড়াও রয়েছে অসহনীয় যানজট। অহরহ অঘটন ঘটছে এই মহাসড়কে। একের পর এক প্রাণ যাচ্ছে। সড়কটিতে দুর্ঘটনা এখন প্রতিদিনের সঙ্গী। এ দুর্ঘটনায় কেউ হয়ে যাচ্ছেন পুরো জীবনের জন্য পঙ্গু।

ঢাকা-সিলেট মহাসড়কটি এখন যেন গর্তের মহাসড়ক। ছোট-বড় গর্তের কারণে মহাসড়কটি গ্রাম্য সড়কে পরিণত হয়েছে। হবিগঞ্জ থেকে ঢাকা যাত্রা করলে তিন থেকে সোয়া তিন ঘন্টা লাগত। আর এখন সময় লাগে সাড়ে ৪ থেকে সাড়ে ৫ ঘন্টা। কখনো কখনো আরো বেশি। ভাঙ্গা সড়কটিতে এখন যানজট নিত্যসঙ্গী। ভাঙ্গাচুরার কারণে সড়কে দুর্ভোগের ব্যাপার যখনই আলোচনায় আসে, তখনই লোক-দেখানো কাজ করা হয়। কিন্তু এসব কাজেরও কোনো স্থায়িত্ব থাকে না। কিছু দিন পর ফের দেখা দেয় ভাঙ্গন। বিভিন্ন সূত্র জানায়, গত কয়েক মাসে ভাঙ্গা এ সড়কে অর্ধশতাধিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক আগে মরণ ফাঁদ বলে পরিচিত ছিল। এখন মৃত্যুকূপ ও দুর্ভোগের মহাসড়ক বলে পরিচিতি পেয়েছে।

মাধবপুর থেকে নবীগঞ্জ উপজেলার সীমানা শেরপুর পর্যন্ত মহাসড়কের স্থানে স্থানে ছোট-বড় গর্ত সৃষ্টি হওয়ায় যানবাহন চলছে ঝুঁকি নিয়ে। এসব গর্ত জোড়াতালি দিয়ে মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করা হয়।

সরজমিন ঘুরে দেখা যায়, নবীগঞ্জ উপজেলার শেরপুর সীমান্ত থেকে শুরু করে বাহুবল পর্যন্ত মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে কার্পেটিং উঠে বড় বড় গর্ত হয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশ ব্রীজের প্রবেশমুখে বড় বড় ভাঙ্গন ধরেছে। অল্প বৃষ্টিতেই এসব গর্তে পানি জমাট হয়ে ভরে উঠছে। এতে কোনো কোনো স্থানে হচ্ছে জলাবদ্ধতা। ফলে সড়ক চেনা মুশকিল হয়ে পড়ে চালকদের।

যাত্রীদের অভিযোগ–শায়েস্তাগঞ্জ নতুন ব্রীজ পয়েন্ট, লস্করপুর রেলক্রসিং, অলিপুর রেলক্রসিং এলাকার অবস্থা আরো ভয়াবহ। খানাখন্দ আর যত্রতত্র গর্তে পুরো রাস্তা যেন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের আরও বিড়ম্বনা শুরু হয় বিশ্বরোড পার হওয়ার পর। বিজয়নগর, মাধবপুর, শায়েস্তাগঞ্জ, বাহুবল, নবীগঞ্জ, মৌলভীবাজারের শেরপুর পেরিয়ে সিলেট পর্যন্ত সড়কের এমন বেহাল অবস্থা দীর্ঘ দিনের। মহাসড়কটি দীর্ঘদিন সংস্কার হয়নি। মহাসড়কের এমন করুণ অবস্থার মধ্য দিয়েই যাত্রী ও পণ্যবাহী যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে প্রতিদিন।

অপরদিকে, নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের সঈদপুর বাজার, দেবপাড়া ইউনিয়নের সদরঘাট নতুন বাজার থেকে শুরু করে পানিউমদা বাজার পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার সড়কের বিভিন্ন স্থানে অনেক বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে টানা বৃষ্টির পানি জমে গর্তগুলো ভরে উঠে। এ কারণেও মারাত্মক দুর্ঘটনাও ঘটে।

হবিগঞ্জ সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, ইতোমধ্যে মহাসড়কের ভাঙ্গা স্থানগুলোতে সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে। আশা করি ঈদের আগেই কাজ শেষ হবে। ঈদ যাত্রায় যাত্রীরা নিরাপদে যাতায়াত করতে পারবেন। তবে বৃষ্টির কারনে কাজে কিছুটা ব্যাঘাত হচ্ছে।