ঢাকা ০৭:০৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পুলিশের ধাওয়া, আ’লীগ নেতার লাশ মিলল নদীতে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:২৯:০৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৭ অগাস্ট ২০১৯
  • ২২১ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ পুলিশের ধাওয়া খেয়ে মাগুরার শ্রীপুর উপজেলায় নদীতে লাফিয়ে নিখোঁজের একদিন পর আওয়ামী লীগ নেতা আমিরুল ইসলামের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

এর আগে মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে পুলিশের ধাওয়া খেয়ে কুমার নদীতে লাফিয়ে পড়ে নিখোঁজ হন আমিরুল।

শ্রীপুর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার অধির কুমার বিশ্বাস বলেন, রাতে এলাকাবাসীর সহায়তায় নদীতে জাল টানা হলেও কোনো লাশ পাওয়া যায়নি। পরে বুধবার সকাল ১০টার দিকে কুমার নদী থেকে তার ভাসমান মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

এদিকে এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী পুলিশের ওপর হামলা চালিয়েছে। তবে পুলিশ ওই আওয়ামী লীগ নেতাকে ধাওয়া করার বিষয়টি অস্বীকার করেছে।

এলাকাবাসী জানান, মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে মাগুরা ডিবি ইন্সপেক্টর নাসিরের নেতৃত্বে একদল পুলিশ শ্রীপুর উপজেলার হাট শ্রীকোল বাজারে যায়। এ সময় আওয়ামী লীগ নেতা আমিরুল ইসলাম ওই বাজারের মদনের চায়ের দোকানে বসেছিলেন।

কিন্তু বাজারে হঠাৎ পুলিশের উপস্থিতি দেখে সে দৌঁড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় পুলিশ ধাওয়া করলে আমিরুল বাজারের পাশে কুমার নদীতে লাফিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু নদীতে নামার পর তাকে দেখতে না পেয়ে এলাকাবাসী উপস্থিত পুলিশের ওপর হামলা চালায়।

শ্রীকোল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মুতাসিম বিল্লাহ সংগ্রাম জানান, শ্রীকোল গ্রামে হাফিজার মাস্টার এবং বাহারুল মেম্বরের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারের ঘটনা নিয়ে গত ১০ জুন তারিখে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

ওইদিন পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে ২১৮ জনকে আসামি করে শ্রীপুর থানায় পুলিশ বাদী একটি মামলা দায়ের হয়। হাফিজার মাস্টার গ্রুপের সদস্য আমিরুল ওই মামলার একজন আসামি।

শ্রীকোল গ্রামের বিবাদমান গ্রুপের নেতা হাফিজার মাস্টার বলেন, পুলিশ কেবল ধাওয়া করেছে তাই নয়। নদীর ঘাট থেকে প্রদীপ মাঝির নৌকা নিয়ে আমিরুলকে ধাওয়া করে এবং পুলিশের নির্যাতনেই তার মৃত্যু হয়েছে বলে সবাই জানে।

এদিকে বিষয়টি নিয়ে অভিযানে অংশ নেয়া মাগুরা ডিবির ওসি নাসির উদ্দিন জানান, ফারুক এবং সোহেল নামে চিহ্নিত দুই মাদক ব্যবসায়ী বাজারে অবস্থান করছে এমন খবর পেয়ে সেখানে যায়। কিন্তু আমাদের দেখে কেউ দৌঁড়ে পানিতে লাফিয়ে পড়েছে কিনা সে বিষয়ে আমাদের কিছু জানা নেই।

তিনি বলেন, ওই বাজারে থাকা অবস্থায় স্থানীয় লোকজন হঠাৎ করেই আমাদের ওপর হামলা চালায়। এতে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম বলেন, আমরা এলাকাবাসীর কাছ থেকে প্রকৃত খবর জানার চেষ্টা করছি। তবে আমিরুলকে আটকের জন্য ডিবি পুলিশ সেখানে যায়নি। তাকে আটক করতে হলে থানা পুলিশ যাবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

পুলিশের ধাওয়া, আ’লীগ নেতার লাশ মিলল নদীতে

আপডেট টাইম : ১১:২৯:০৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৭ অগাস্ট ২০১৯

হাওর বার্তা ডেস্কঃ পুলিশের ধাওয়া খেয়ে মাগুরার শ্রীপুর উপজেলায় নদীতে লাফিয়ে নিখোঁজের একদিন পর আওয়ামী লীগ নেতা আমিরুল ইসলামের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

এর আগে মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে পুলিশের ধাওয়া খেয়ে কুমার নদীতে লাফিয়ে পড়ে নিখোঁজ হন আমিরুল।

শ্রীপুর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার অধির কুমার বিশ্বাস বলেন, রাতে এলাকাবাসীর সহায়তায় নদীতে জাল টানা হলেও কোনো লাশ পাওয়া যায়নি। পরে বুধবার সকাল ১০টার দিকে কুমার নদী থেকে তার ভাসমান মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

এদিকে এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী পুলিশের ওপর হামলা চালিয়েছে। তবে পুলিশ ওই আওয়ামী লীগ নেতাকে ধাওয়া করার বিষয়টি অস্বীকার করেছে।

এলাকাবাসী জানান, মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে মাগুরা ডিবি ইন্সপেক্টর নাসিরের নেতৃত্বে একদল পুলিশ শ্রীপুর উপজেলার হাট শ্রীকোল বাজারে যায়। এ সময় আওয়ামী লীগ নেতা আমিরুল ইসলাম ওই বাজারের মদনের চায়ের দোকানে বসেছিলেন।

কিন্তু বাজারে হঠাৎ পুলিশের উপস্থিতি দেখে সে দৌঁড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় পুলিশ ধাওয়া করলে আমিরুল বাজারের পাশে কুমার নদীতে লাফিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু নদীতে নামার পর তাকে দেখতে না পেয়ে এলাকাবাসী উপস্থিত পুলিশের ওপর হামলা চালায়।

শ্রীকোল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মুতাসিম বিল্লাহ সংগ্রাম জানান, শ্রীকোল গ্রামে হাফিজার মাস্টার এবং বাহারুল মেম্বরের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারের ঘটনা নিয়ে গত ১০ জুন তারিখে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

ওইদিন পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে ২১৮ জনকে আসামি করে শ্রীপুর থানায় পুলিশ বাদী একটি মামলা দায়ের হয়। হাফিজার মাস্টার গ্রুপের সদস্য আমিরুল ওই মামলার একজন আসামি।

শ্রীকোল গ্রামের বিবাদমান গ্রুপের নেতা হাফিজার মাস্টার বলেন, পুলিশ কেবল ধাওয়া করেছে তাই নয়। নদীর ঘাট থেকে প্রদীপ মাঝির নৌকা নিয়ে আমিরুলকে ধাওয়া করে এবং পুলিশের নির্যাতনেই তার মৃত্যু হয়েছে বলে সবাই জানে।

এদিকে বিষয়টি নিয়ে অভিযানে অংশ নেয়া মাগুরা ডিবির ওসি নাসির উদ্দিন জানান, ফারুক এবং সোহেল নামে চিহ্নিত দুই মাদক ব্যবসায়ী বাজারে অবস্থান করছে এমন খবর পেয়ে সেখানে যায়। কিন্তু আমাদের দেখে কেউ দৌঁড়ে পানিতে লাফিয়ে পড়েছে কিনা সে বিষয়ে আমাদের কিছু জানা নেই।

তিনি বলেন, ওই বাজারে থাকা অবস্থায় স্থানীয় লোকজন হঠাৎ করেই আমাদের ওপর হামলা চালায়। এতে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম বলেন, আমরা এলাকাবাসীর কাছ থেকে প্রকৃত খবর জানার চেষ্টা করছি। তবে আমিরুলকে আটকের জন্য ডিবি পুলিশ সেখানে যায়নি। তাকে আটক করতে হলে থানা পুলিশ যাবে।