ঢাকা ১২:৩৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চকলেট কারখানায় নকল তৈরি হতো গ্যাসট্রিকের ওষুধ ‘সেকনো ২০’

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:৫৮:৫৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২২ এপ্রিল ২০১৯
  • ২৯০ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ যশোরের নওয়াপাড়ায় একটি নকল ওষুধ কারখানা সনাক্ত করেছে র‌্যাব। ‘লাইফকেয়ার নিউট্রাসিউটিক্যাল’ নামের ওই অবৈধ কারাখানায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ ‘সেকনো ২০’ (গ্যাসট্রিক আলসার প্রতিরোধক) নামের নকল ওষুধ উদ্ধার করা হয়েছে। জব্দ করা হয়েছে বিপুল পরিমাণ ওষুধ তৈরির কাঁচামাল, কাগজপত্র ও দুটি আধুনিক মেশিনসহ বিভিন্ন মালামাল। আটক করা হয়েছে আল-আমিন নামের একজন ভ্যানচালককে। তবে কারখানার মালিক আতাউর রহমান প্রিন্স পলাতক রয়েছেন।

শুক্রবার ভোরে র‌্যাব এ অভিযান শুরু করে। বিকেল পর্যন্ত মালামাল জব্দসহ মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছিল। দুপুরের পর অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করে র‌্যাব। অভিযানে আটক হয়েছে ভ্যানচালক একই গ্রামের মৃত ইয়াছিন মোল্যার ছেলে আল-আমিনকে (২৭)। যশোরের অভয়নগর উপজেলা পরিষদ ও আকিজ জুট মিলের মাঝামাঝি গুয়াখোলা গ্রামে খানজাহান আলী সড়কের ৪৬৪নং বাড়িতে লাইফকেয়ার নিউট্রাসিউটিক্যাল্স (ফুড অ্যান্ড ফিড ডিভিশন) নামে নকল ওষুধ তৈরির এ প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলা হয়।

র‌্যাব-৬ এর কোম্পানি কমান্ডার এএসপি মো. সুরাত আলী সাংবাদিকদের জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তারা জানতে পারেন গুয়াখোলা গ্রামে লাইফকেয়ার নিউট্রাসিউটিক্যাল্স (ফুড অ্যান্ড ফিড ডিভিশন) নামের একটি নকল ওষুধ তৈরির কারখানা রয়েছে। খবর পেয়ে এ কারখানায় অভিযান চালানো হয়। এসময় মালিকপক্ষের কাউকে পাওয়া যায়নি। পাওয়া যায়নি কারখানায় ওষুধ তৈরির কোনো বৈধ কাগজপত্র। একটি মোটরচালিত ভ্যানে করে প্যাকেটজাত ‘সেকনো-২০’ নামের ওষুধ নেয়ার সময় ভ্যানচালক আল-আমিনকে আটক করা হয়। পরে দুইতলা ভবনের নিচ তলায় প্রায় সাড়ে ৫শ পিস ‘সেকনো-২০’ নামের প্যাকেটকৃত ওষুধ, বিপুল পরিমাণ ওষুধ তৈরির কাঁচামাল, প্যাকেটিং করার জন্য দুইটি আধুনিক মেশিন, ১০টি সাদা কাপড়ের পোষাকসহ কাগজপত্র ও বিভিন্ন মালামালের সন্ধান পাওয়া যায়। যা পরবর্তীতে জব্দ করা হয়। জব্দকৃত মালামালের আনুমানিক মূল্য কয়েক কোটি টাকা হতে পারে।

র‌্যাব কর্মকর্তা জানিয়েছেন, প্রতিষ্ঠানসহ মালিকের বিরুদ্ধে পৃথক মামলা দায়ের করা হবে। তদন্তের স্বার্থে প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িতদের নাম প্রকাশ করতে রাজি হননি তিনি। আটক ভ্যানচালক আল-আমিন জানান, আতাউর রহমান প্রিন্স নামের একজন তাকে দুই কার্টন ওষুধ নওয়াপাড়া বাজারে একটি কুরিয়ার সার্ভিস অফিসে দিয়ে আসতে বলে চলে যায়। এর বেশি কিছু সে জানে না। পরে র‌্যাব তাকে আটক করে।

লাইফকেয়ার নিউট্রাসিউটিক্যাল কারখানার আশপাশের বাড়ি মালিকরা জানায়, বাড়ির মালিক ইঞ্জিয়ার শওকত হোসেন ঢাকায় চাকরি করেন। চকলেট তৈরির কারখানা হিসেবে বাড়িটি এলাকায় পরিচিত। যে কারণে তারা ওই বাড়ির দিকে খেয়াল রাখতেন না। তাছাড়া কারখানার মূল গেট সব সময় বন্ধ থাকতো। প্রতিদিন সকাল ৮টায় ১০/১৫ জন মহিলা ভেতরে প্রবেশ করতো এবং রাত ৮টায় বেরিয়ে যেত। আবাসিক এলাকায় নকল ওষুধ তৈরির ব্যাপার জানতে পেরে তারা হতবাক হয়ে যান।

এ ব্যাপারে লাইফকেয়ার নিউট্রাসিউটিক্যালের সাইনবোর্ডে ঢাকা অফিসের ০১৭১৫-১৫৬১১৮ নম্বর ও স্থানীয় প্রতিনিধি আতাউর রহমান প্রিন্সের ০১৭১২-০২৭৫৩৭ নম্বরে বার বার ফোন দেয়া হলেও বন্ধ পাওয়া গেছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

চকলেট কারখানায় নকল তৈরি হতো গ্যাসট্রিকের ওষুধ ‘সেকনো ২০’

আপডেট টাইম : ১০:৫৮:৫৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২২ এপ্রিল ২০১৯

হাওর বার্তা ডেস্কঃ যশোরের নওয়াপাড়ায় একটি নকল ওষুধ কারখানা সনাক্ত করেছে র‌্যাব। ‘লাইফকেয়ার নিউট্রাসিউটিক্যাল’ নামের ওই অবৈধ কারাখানায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ ‘সেকনো ২০’ (গ্যাসট্রিক আলসার প্রতিরোধক) নামের নকল ওষুধ উদ্ধার করা হয়েছে। জব্দ করা হয়েছে বিপুল পরিমাণ ওষুধ তৈরির কাঁচামাল, কাগজপত্র ও দুটি আধুনিক মেশিনসহ বিভিন্ন মালামাল। আটক করা হয়েছে আল-আমিন নামের একজন ভ্যানচালককে। তবে কারখানার মালিক আতাউর রহমান প্রিন্স পলাতক রয়েছেন।

শুক্রবার ভোরে র‌্যাব এ অভিযান শুরু করে। বিকেল পর্যন্ত মালামাল জব্দসহ মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছিল। দুপুরের পর অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করে র‌্যাব। অভিযানে আটক হয়েছে ভ্যানচালক একই গ্রামের মৃত ইয়াছিন মোল্যার ছেলে আল-আমিনকে (২৭)। যশোরের অভয়নগর উপজেলা পরিষদ ও আকিজ জুট মিলের মাঝামাঝি গুয়াখোলা গ্রামে খানজাহান আলী সড়কের ৪৬৪নং বাড়িতে লাইফকেয়ার নিউট্রাসিউটিক্যাল্স (ফুড অ্যান্ড ফিড ডিভিশন) নামে নকল ওষুধ তৈরির এ প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলা হয়।

র‌্যাব-৬ এর কোম্পানি কমান্ডার এএসপি মো. সুরাত আলী সাংবাদিকদের জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তারা জানতে পারেন গুয়াখোলা গ্রামে লাইফকেয়ার নিউট্রাসিউটিক্যাল্স (ফুড অ্যান্ড ফিড ডিভিশন) নামের একটি নকল ওষুধ তৈরির কারখানা রয়েছে। খবর পেয়ে এ কারখানায় অভিযান চালানো হয়। এসময় মালিকপক্ষের কাউকে পাওয়া যায়নি। পাওয়া যায়নি কারখানায় ওষুধ তৈরির কোনো বৈধ কাগজপত্র। একটি মোটরচালিত ভ্যানে করে প্যাকেটজাত ‘সেকনো-২০’ নামের ওষুধ নেয়ার সময় ভ্যানচালক আল-আমিনকে আটক করা হয়। পরে দুইতলা ভবনের নিচ তলায় প্রায় সাড়ে ৫শ পিস ‘সেকনো-২০’ নামের প্যাকেটকৃত ওষুধ, বিপুল পরিমাণ ওষুধ তৈরির কাঁচামাল, প্যাকেটিং করার জন্য দুইটি আধুনিক মেশিন, ১০টি সাদা কাপড়ের পোষাকসহ কাগজপত্র ও বিভিন্ন মালামালের সন্ধান পাওয়া যায়। যা পরবর্তীতে জব্দ করা হয়। জব্দকৃত মালামালের আনুমানিক মূল্য কয়েক কোটি টাকা হতে পারে।

র‌্যাব কর্মকর্তা জানিয়েছেন, প্রতিষ্ঠানসহ মালিকের বিরুদ্ধে পৃথক মামলা দায়ের করা হবে। তদন্তের স্বার্থে প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িতদের নাম প্রকাশ করতে রাজি হননি তিনি। আটক ভ্যানচালক আল-আমিন জানান, আতাউর রহমান প্রিন্স নামের একজন তাকে দুই কার্টন ওষুধ নওয়াপাড়া বাজারে একটি কুরিয়ার সার্ভিস অফিসে দিয়ে আসতে বলে চলে যায়। এর বেশি কিছু সে জানে না। পরে র‌্যাব তাকে আটক করে।

লাইফকেয়ার নিউট্রাসিউটিক্যাল কারখানার আশপাশের বাড়ি মালিকরা জানায়, বাড়ির মালিক ইঞ্জিয়ার শওকত হোসেন ঢাকায় চাকরি করেন। চকলেট তৈরির কারখানা হিসেবে বাড়িটি এলাকায় পরিচিত। যে কারণে তারা ওই বাড়ির দিকে খেয়াল রাখতেন না। তাছাড়া কারখানার মূল গেট সব সময় বন্ধ থাকতো। প্রতিদিন সকাল ৮টায় ১০/১৫ জন মহিলা ভেতরে প্রবেশ করতো এবং রাত ৮টায় বেরিয়ে যেত। আবাসিক এলাকায় নকল ওষুধ তৈরির ব্যাপার জানতে পেরে তারা হতবাক হয়ে যান।

এ ব্যাপারে লাইফকেয়ার নিউট্রাসিউটিক্যালের সাইনবোর্ডে ঢাকা অফিসের ০১৭১৫-১৫৬১১৮ নম্বর ও স্থানীয় প্রতিনিধি আতাউর রহমান প্রিন্সের ০১৭১২-০২৭৫৩৭ নম্বরে বার বার ফোন দেয়া হলেও বন্ধ পাওয়া গেছে।