রাজধানীর সঙ্গে বন্দরনগরীর যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে বর্তমান মহাসড়কের পাশাপাশি আরও একটি চারলেনের এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের পরিকল্পনা করছে সরকার, যেটা করা গেলে সড়কপথে মাত্র আড়াই ঘণ্টার মধ্যে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম পৌঁছানো যাবে। তবে প্রস্তাবিত রেল লাইনে দ্রুতগতিতে যাতায়াত সম্ভব হলে তা মাত্র দেড় ঘণ্টায় দাঁড়াবে।
একইসঙ্গে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে এক্সপ্রেস রেলওয়ে নির্মাণেরও পরিকল্পনা করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে বর্তমান রেললাইনের পাশাপাশি পথ সংক্ষেপ করে নতুন রুট করতে হবে। আর তা করা গেলে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে যাওয়া যাবে দেড় ঘণ্টায়, যেখানে বর্তমানে সর্বনিম্ন ছয় ঘণ্টা লাগে।
বৃহস্পতিবার গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে এক বৈঠকে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ এবং রেলপথ বিভাগের দুই সচিব এসব পরিকল্পনার দলিল পাওয়ার পয়েন্টে উপস্থাপন করেন। এ সময় ২০ বছর পরে কী অবস্থা হবে তা মাথায় রেখে পরিকল্পনা করার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, “পাই পাই করে হিসাব করার কোনো দরকার নেই। মানুষের জন্য কোনটা ভালো হয় সেটা মাথায় রাখতে হবে। যে কোনো কাজ করতে গেলে আমাদের চিন্তা করতে হবে আগামী ২০/২৫ বছর পরে আমরা কোথায় যাব।”
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক সচিব এমএএন সিদ্দিক তার উপস্থাপনায় বলেন, সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে (পিপিপি) ঢাকা-চট্টগ্রাম এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের জন্য তারা প্রাথমিক সম্ভাব্যতা যাচাই করেছেন।
“কাঁচপুর থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত এক্সপ্রেসওয়ে হতে পারে তিনটি রুট দিয়ে। প্রথমটি বর্তমান মহাসড়কের পাশ দিয়ে। দ্বিতীয় ও তৃতীয়টি দাউদকান্দি পর্যন্ত বর্তমান মহাসড়কের পাশ দিয়ে গিয়ে পরে রুট পরিবর্তন করবে। তবে বর্তমান মহাসড়কের পাশ দিয়ে গেলে সবচেয়ে ভালো হবে।”
তিনি বলেন, এক্সপ্রেসওয়ের দুই পাশ আটকানো থাকবে, যাতে নির্দিষ্ট স্থান ছাড়া সড়কে গাড়ি ঢুকতে ও বেরোতে পারবে না। এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করে দুই ঘণ্টায় ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম পৌঁছে যাওয়া যাবে।
পুরোপুরি এলিভেটেড করলে এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে ব্যয় হবে ৮ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার। আর অ্যাট-গ্রেড (যেখানে দরকার উড়াল সেতু, যেখানে দরকার মাটিতে) এলিভেটেড করলে ব্যয় হবে ৩ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার।
সচিব জানান, চীনের কয়েকটি কোম্পানি এরইমধ্যে যোগাযোগ করেছে। তারা এই এক্সপ্রেসওয়ে করতে চাচ্ছে।
“পিপিপিতে করলে এক টাকাও আমাদের খরচ হবে না।”
এদিকে দায়িত্বপ্রাপ্ত রেল সচিব ফিরোজ সালাহ উদ্দিন তার উপস্থাপনায় বলেন, বর্তমানে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে রেল যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া হয়ে। তাই নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার মধ্য দিয়ে কুমিল্লার ময়নামতি হয়ে চট্টগ্রাম পর্যন্ত নতুন রেল লাইন করলে পথ কমবে প্রায় ১০০ কিলোমিটার।
সচিব জানান, স্টান্ডার্ড গেজের এ রেল সেবা যদি ডিজেল ইলেকট্রিক ট্রাকশনে হয় তাহলে ঘণ্টায় গতি হবে ১৬০ কিলোমিটার। আর পুরোপুরি বৈদ্যুতিক হলে গতি হবে ঘণ্টায় ২০০ কিলোমিটার। ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ হলে ১০টি ট্রেন চলাচল করতে পারবে।
অ্যাট-গ্রেড লাইন স্থাপন করতে হলে ৪ বিলিয়ন ডলার ব্যয় হবে বলে উপস্থাপনায় বলা হয়।
ফিরোজ সালাহ উদ্দিন বলেন, “চায়না এ কাজ করতে আগ্রহ দেখাচ্ছে। টাকার জোগাড় হয়ে যাবে। ২৬ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ আছে।”
সংবাদ শিরোনাম
প্রস্তাবিত এক্সপ্রেসওয়ে ও রেলওয়ে : দেড় ঘণ্টায় যাওয়া যাবে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম
- Reporter Name
- আপডেট টাইম : ১২:১২:২৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৯ অক্টোবর ২০১৫
- ৩২৫ বার
Tag :
জনপ্রিয় সংবাদ