অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি- একটি জাতীয় পরিচয়পত্রেই আট হাজারের বেশি সিম বিক্রির ঘটনা ঘটেছে বাংলাদেশে।
মোবাইল নম্বর যাচাই-বাছাই করতে গিয়ে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সিম নিবন্ধনে এমন আরও অনেক জালিয়াতির ঘটনায় স্তম্ভিত প্রশাসন। সিম বিক্রিতে রীতিমতো অরাজক পরিস্থিতির সৃস্টি হয়েছে।
গত এক সপ্তাহে ৫৭ লাখ মোবাইল নম্বর যাচাই-বাছাই করে দেখা গেছে ৭০ শতাংশ গ্রাহকের তথ্যই ভুয়া। মোবাইল গ্রাহকরা এনআইডি (জাতীয় পরিচয়পত্র) জমা দিয়ে যে সিম ব্যবহার করছেন, তা যাচাই-বাছাই করে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে ইসির জাতীয় পরিচয়পত্র প্রকল্প।
জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশন সচিব সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘সিম নিবন্ধনে ভয়াবহ জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে। এটা রীতিমত অরাজক পরিস্থিতি। আমাদের কাছে মোবাইল গ্রাহকরা যে তথ্য দিয়েছে তা যাচাই-বাছাইয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য বের হচ্ছে।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তবে আমাদের কাজ শুধু যাচাই করা। দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে সরকার।’
সম্প্রতি মোবাইলে হুমকি ধমকি এবং মন্ত্রী, এমপি, সচিবদের সিম নম্বরের ক্লোনিং ঘটনার পর সব সিম পুনঃনিবন্ধনের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
এনআইডি দিয়ে কেনা সিমের তথ্য যাচাই বাছাই চলছে এখন। সব মোবাইল অপারেটদের কাছ থেকে এনআইডির মাধ্যমে ইস্যুকরা সিমের কাগজপত্র পরীক্ষার জন্য পাঠাচ্ছে জাতীয় পরিচয়পত্র প্রকল্পে।
দেখা গেছে গত সাত দিনে ছয় অপারেটরের ৫৭ লাখ গ্রাহকের সিমের তথ্য যাচাই করা হয়েছে। এর ৭০ শতাংশেই গ্রাহকের তথ্য ভুয়া বা ঠিক নয়।
গত বৃহস্পতিবার বা ১৭ সেম্টেম্বর পর্যন্ত অপারেটররা ২৭ লাখের বেশি সিমের তথ্য পাঠিয়েছে এনআইডি প্রকল্পে। যার মধ্যে গ্রামীণ পাঠিয়েছিল দুই লাখ ৭৫ হাজার। বাংলা লিংক আড়াই লাখ। রবি এক লাখ ১১ হাজার।
অন্যদিকে দেশের অন্যতম ছোট অপারেটর টেলিটক পাঠিয়েছিল ১৫ লাখ ৬০ হাজারের সিমের তথ্য। এরমধ্যে এই একটি এনআইডি নম্বর দিয়ে ছয় অপারেটরের আট হাজার সিম ইস্যু করা হয়েছে।
আরও ৫০টি ভুয়া এনআইডি নম্বর দিয়ে ব্যবহার হচ্ছে কম পক্ষে এক লাখ সিম। সরকারি কর্মকর্তারা জানান, ৫০০ এনআইডি নম্বর দিয়ে অগনিত সিম ইস্যু করা হয়েছে। এমন কি মহিলার নামের এনআইডি দিয়ে সিম বিক্রি হয়েছে পুরুষের নামে।